ডকুমেন্ট পড়ুন: দুআ-মুনাজাত : কখন ও কিভাবে ▐ নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লামের নামায আদায়ের পদ্ধতি ▐ কুরআনের আলোকে যাকাতের বিধান ▐ গুরুত্বপূর্ণ দোআ সমূহ ▐ কবরের আযাব ▐ আল কুরআনের আলোকে আল্লাহর পথে দানের গুরুত্ব ▐ ঈমান সুদৃঢ় রাখার কিছু উপায় ▐ আল্লাহর হক ▐ জান্নাতে প্রবেশের কিছু উপায়▐ নামাযে প্রচলিত ভুল-ত্রুটি ▐ আমাদের দেশে প্রচলিত কয়েকটি বড় ধরনের বিদ'আত ▐ পুন্যের অসংখ্য পথ ▐ কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত ▐ যদি সবকিছু পূর্ব নির্ধারিত হয়ে থাকে তাহলে সেগুলো সম্পাদনের জন্যে মানুষকে জবাবদিহি করতে হবে কেন ? ▐ তাওবার ফজিলত ▐ মা-বাবার মৃত্যুর পর তাদের জন্য করণীয় আমলসূমহ ▐ অন্তর বিধ্বংসী বিষয়সমূহ : অহংকার ▐ কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে তাওবা ও পাপ মোচনকারী কিছু আমল ▐ দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শনের ব্যাপারে ইসলামের বিধান ▐ একশটি কবীরা গুনাহ ▐ ফতোওয়া যাকাত: যাকাত বিষয়ক অতি গুরুত্বপূর্ণ ৩৭টি প্রশ্নোত্তর ▐ মৃত-ব্যক্তির জন্য করণীয় কাজের মাসনূন পদ্ধতি ▐ দান-ছদকার ফযীলত ▐ ইসলামে নারীর যৌন অধিকার ▐ আমরা যেভাবে আল্লাহ্‌র নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করব ▐ কুরআন ও সুন্নাহ্‌র আলোকে জান্নাত ও জাহান্নাম ▐ সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ: গুরুত্ব ও তাৎপর্য ▐ প্রশ্নোত্তরে সহজ তাওহীদ শিক্ষা ▐ বিয়ের প্রস্তাব : করণীয় ও বর্জনীয় ▐ কোরআন-হাদীসের আলোকে শাফাআত ▐ মিউজিক কি হারাম ? ▐ যে সকল কারণে একজন মুসলমান ইসলামচ্যুত হয়ে যায় তথা কাফির হয়ে যায় ▐ বিপদে ধৈর্যধারণ : দশটি উপদেশ ▐ পবিত্রতা সম্পর্কে অতি গুরুত্বপূর্ণ ৬২টি প্রশ্নোত্তর ▐ দো‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কতিপয় দো‘আর নমুনা ▐ যে সব ভুল-ভ্রান্তির কারণে দু'আ কবুল হয়না ▐ কল্যাণকর কাজে উদ্বুদ্ধকারী কতিপয় হাদীস ▐ বাংলাদেশে প্রচলিত শির্ক বিদ‘আত ও কুসংস্কার পর্যালোচনা ▐ তাহাজ্জুদ নামায পড়ার ফযীলত ▐ ইসলামে খাবার গ্রহণের আদব ▐





Peace TV Bangla Live

বুধবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১২

Search Result (Sura 56-144)

<<Go To Previous Page           Go To First Page>>



Chapter 56 (Sura 56)
1; যখন কিয়ামতের ঘটনা ঘটবে,
2; যার বাস্তবতায় কোন সংশয় নেই।
3; এটা নীচু করে দেবে, সমুন্নত করে দেবে।
4; যখন প্রবলভাবে প্রকম্পিত হবে পৃথিবী।
5; এবং পর্বতমালা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে।
6; অতঃপর তা হয়ে যাবে উৎক্ষিপ্ত ধূলিকণা।
7; এবং তোমরা তিনভাবে বিভক্ত হয়ে পড়বে।
8; যারা ডান দিকে, কত ভাগ্যবান তারা।
9; এবং যারা বামদিকে, কত হতভাগা তারা।
10; অগ্রবর্তীগণ তো অগ্রবর্তীই।
11; তারাই নৈকট্যশীল,
12; অবদানের উদ্যানসমূহে,
13; তারা একদল পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে।
14; এবং অল্পসংখ্যক পরবর্তীদের মধ্যে থেকে।
15; স্বর্ণ খচিত সিংহাসন।
16; তারা তাতে হেলান দিয়ে বসবে পরস্পর মুখোমুখি হয়ে।
17; তাদের কাছে ঘোরাফেরা করবে চির কিশোরেরা।
18; পানপাত্র কুঁজা ও খাঁটি সূরাপূর্ণ পেয়ালা হাতে নিয়ে,
19; যা পান করলে তাদের শিরঃপীড়া হবে না এবং বিকারগ্রস্ত ও হবে না।
20; আর তাদের পছন্দমত ফল-মুল নিয়ে,
21; এবং রুচিমত পাখীর মাংস নিয়ে।
22; তথায় থাকবে আনতনয়না হুরগণ,
23; আবরণে রক্ষিত মোতির ন্যায়,
24; তারা যা কিছু করত, তার পুরস্কারস্বরূপ।
25; তারা তথায় অবান্তর ও কোন খারাপ কথা শুনবে না।
26; কিন্তু শুনবে সালাম আর সালাম।
27; যারা ডান দিকে থাকবে, তারা কত ভাগ্যবান।
28; তারা থাকবে কাঁটাবিহীন বদরিকা বৃক্ষে।
29; এবং কাঁদি কাঁদি কলায়,
30; এবং দীর্ঘ ছায়ায়।
31; এবং প্রবাহিত পানিতে,
32; ও প্রচুর ফল-মূলে,
33; যা শেষ হবার নয় এবং নিষিদ্ধ ও নয়,
34; আর থাকবে সমুন্নত শয্যায়।
35; আমি জান্নাতী রমণীগণকে বিশেষরূপে সৃষ্টি করেছি।
36; অতঃপর তাদেরকে করেছি চিরকুমারী।
37; কামিনী, সমবয়স্কা।
38; ডান দিকের লোকদের জন্যে।
39; তাদের একদল হবে পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে।
40; এবং একদল পরবর্তীদের মধ্য থেকে।
41; বামপার্শ্বস্থ লোক, কত না হতভাগা তারা।
42; তারা থাকবে প্রখর বাষ্পে এবং উত্তপ্ত পানিতে,
43; এবং ধুম্রকুঞ্জের ছায়ায়।
44; যা শীতল নয় এবং আরামদায়কও নয়।
45; তারা ইতিপূর্বে স্বাচ্ছন্দ্যশীল ছিল।
46; তারা সদাসর্বদা ঘোরতর পাপকর্মে ডুবে থাকত।
47; তারা বলতঃ আমরা যখন মরে অস্থি ও মৃত্তিকায় পরিণত হয়ে যাব, তখনও কি পুনরুত্থিত হব?
48; এবং আমাদের পূর্বপুরুষগণও!
49; বলুনঃ পূর্ববর্তী ও পরবর্তীগণ,
50; সবাই একত্রিত হবে এক নির্দিষ্ট দিনের নির্দিষ্ট সময়ে।
51; অতঃপর হে পথভ্রষ্ট, মিথ্যারোপকারীগণ।
52; তোমরা অবশ্যই ভক্ষণ করবে যাক্কুম বৃক্ষ থেকে,
53; অতঃপর তা দ্বারা উদর পূর্ণ করবে,
54; অতঃপর তার উপর পান করবে উত্তপ্ত পানি।
55; পান করবে পিপাসিত উটের ন্যায়।
56; কেয়ামতের দিন এটাই হবে তাদের আপ্যায়ন।
57; আমি সৃষ্টি করেছি তোমাদেরকে। অতঃপর কেন তোমরা তা সত্য বলে বিশ্বাস কর না।
58; তোমরা কি ভেবে দেখেছ, তোমাদের বীর্যপাত সম্পর্কে।
59; তোমরা তাকে সৃষ্টি কর, না আমি সৃষ্টি করি?
60; আমি তোমাদের মৃত্যুকাল নির্ধারিত করেছি এবং আমি অক্ষম নই।
61; এ ব্যাপারে যে, তোমাদের পরিবর্তে তোমাদের মত লোককে নিয়ে আসি এবং তোমাদেরকে এমন করে দেই, যা তোমরা জান না।
62; তোমরা অবগত হয়েছ প্রথম সৃষ্টি সম্পর্কে, তবে তোমরা অনুধাবন কর না কেন?
63; তোমরা যে বীজ বপন কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি?
64; তোমরা তাকে উৎপন্ন কর, না আমি উৎপন্নকারী ?
65; আমি ইচ্ছা করলে তাকে খড়কুটা করে দিতে পারি, অতঃপর হয়ে যাবে তোমরা বিস্ময়াবিষ্ট।
66; বলবেঃ আমরা তো &#2443ণের চাপে পড়ে গেলাম;
67; বরং আমরা হূত সর্বস্ব হয়ে পড়লাম।
68; তোমরা যে পানি পান কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি?
69; তোমরা তা মেঘ থেকে নামিয়ে আন, না আমি বর্ষন করি?
70; আমি ইচ্ছা করলে তাকে লোনা করে দিতে পারি, অতঃপর তোমরা কেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর না?
71; তোমরা যে অগ্নি প্রজ্জ্বলিত কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি?
72; তোমরা কি এর বৃক্ষ সৃষ্টি করেছ, না আমি সৃষ্টি করেছি ?
73; আমি সেই বৃক্ষকে করেছি স্মরণিকা এবং মরুবাসীদের জন্য সামগ্রী।
74; অতএব, আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামে পবিত্রতা ঘোষণা করুন।
75; অতএব, আমি তারকারাজির অস্তাচলের শপথ করছি,
76; নিশ্চয় এটা এক মহা শপথ-যদি তোমরা জানতে।
77; নিশ্চয় এটা সম্মানিত কোরআন,
78; যা আছে এক গোপন কিতাবে,
79; যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে স্পর্শ করবে না।
80; এটা বিশ্ব-পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ।
81; তবুও কি তোমরা এই বাণীর প্রতি শৈথিল্য পদর্শন করবে?
82; এবং একে মিথ্যা বলাকেই তোমরা তোমাদের ভূমিকায় পরিণত করবে?
83; অতঃপর যখন কারও প্রাণ কন্ঠাগত হয়।
84; এবং তোমরা তাকিয়ে থাক,
85; তখন আমি তোমাদের অপেক্ষা তার অধিক নিকটে থাকি; কিন্তু তোমরা দেখ না।
86; যদি তোমাদের হিসাব-কিতাব না হওয়াই ঠিক হয়,
87; তবে তোমরা এই আত্মাকে ফিরাও না কেন, যদি তোমরা সত্যবাদী হও ?
88; যদি সে নৈকট্যশীলদের একজন হয়;
89; তবে তার জন্যে আছে সুখ, উত্তম রিযিক এবং নেয়ামতে ভরা উদ্যান।
90; আর যদি সে ডান পার্শ্বস্থদের একজন হয়,
91; তবে তাকে বলা হবেঃ তোমার জন্যে ডানপার্শ্বসস্থদের পক্ষ থেকে সালাম।
92; আর যদি সে পথভ্রষ্ট মিথ্যারোপকারীদের একজন হয়,
93; তবে তার আপ্যায়ন হবে উত্তপ্ত পানি দ্বারা।
94; এবং সে নিক্ষিপ্ত হবে অগ্নিতে।
95; এটা ধ্রুব সত্য।
96; অতএব, আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামে পবিত্রতা ঘোষণা করুন।

Chapter 57 (Sura 57)
1; নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবাই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি শক্তিধর; প্রজ্ঞাময়।
2; নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব তাঁরই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান। তিনি সবকিছু করতে সক্ষম।
3; তিনিই প্রথম, তিনিই সর্বশেষ, তিনিই প্রকাশমান ও অপ্রকাশমান এবং তিনি সব বিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত।
4; তিনি নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল সৃষ্টি করেছেন ছয়দিনে, অতঃপর আরশের উপর সমাসীন হয়েছেন। তিনি জানেন যা ভূমিতে প্রবেশ করে ও যা ভূমি থেকে নির্গত হয় এবং যা আকাশ থেকে বর্ষিত হয় ও যা আকাশে উত্থিত হয়। তিনি তোমাদের সাথে আছেন তোমরা যেখানেই থাক। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন।
5; নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব তাঁরই। সবকিছু তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করবে।
6; তিনি রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন এবং দিবসকে প্রবিষ্ট করেন রাত্রিতে। তিনি অন্তরের বিষয়াদি সম্পর্কেও সম্যক জ্ঞাত।
7; তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর এবং তিনি তোমাদেরকে যার উত্তরাধিকারী করেছেন, তা থেকে ব্যয় কর। অতএব, তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও ব্যয় করে, তাদের জন্যে রয়েছে মহাপুরস্কার।
8; তোমাদের কি হল যে, তোমরা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করছ না, অথচ রসূল তোমাদেরকে তোমাদের পালনকর্তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করার দাওয়াত দিচ্ছেন? আল্লাহ তো পূর্বেই তোমাদের অঙ্গীকার নিয়েছেন-যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।
9; তিনিই তাঁর দাসের প্রতি প্রকাশ্য আয়াত অবতীর্ণ করেন, যাতে তোমাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোকে আনয়ন করেন। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি করুণাময়, পরম দয়ালু।
10; তোমাদেরকে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে কিসে বাধা দেয়, যখন আল্লাহই নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের উত্তরাধিকারী? তোমাদের মধ্যে যে মক্কা বিজয়ের পূর্বে ব্যয় করেছে ও জেহাদ করেছে, সে সমান নয়। এরূপ লোকদের মর্যদা বড় তাদের অপেক্ষা, যার পরে ব্যয় করেছে ও জেহাদ করেছে। তবে আল্লাহ উভয়কে কল্যাণের ওয়াদা দিয়েছেন। তোমরা যা কর, আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত।
11; কে সেই ব্যক্তি, যে আল্লাহকে উত্তম ধার দিবে, এরপর তিনি তার জন্যে তা বহুগুণে বৃদ্ধি করবেন এবং তার জন্যে রয়েছে সম্মানিত পুরস্কার।
12; যেদিন আপনি দেখবেন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীদেরকে, তাদের সম্মুখ ভাগে ও ডানপার্শ্বে তাদের জ্যোতি ছুটোছুটি করবে বলা হবেঃ আজ তোমাদের জন্যে সুসংবাদ জান্নাতের, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত, তাতে তারা চিরকাল থাকবে। এটাই মহাসাফল্য।
13; যেদিন কপট বিশ্বাসী পুরুষ ও কপট বিশ্বাসিনী নারীরা মুমিনদেরকে বলবেঃ তোমরা আমাদের জন্যে অপেক্ষা কর, আমরাও কিছু আলো নিব তোমাদের জ্যোতি থেকে। বলা হবেঃ তোমরা পিছনে ফিরে যাও ও আলোর খোঁজ কর। অতঃপর উভয় দলের মাঝখানে খাড়া করা হবে একটি প্রাচীর, যার একটি দরজা হবে। তার অভ্যন্তরে থাকবে রহমত এবং বাইরে থাকবে আযাব।
14; তারা মুমিনদেরকে ডেকে বলবেঃ আমরা কি তোমাদের সাথে ছিলাম না? তারা বলবেঃ হঁ্যা কিন্তু তোমরা নিজেরাই নিজেদেরকে বিপদগ্রস্ত করেছ। প্রতীক্ষা করেছ, সন্দেহ পোষণ করেছ এবং অলীক আশার পেছনে বিভ্রান্ত হয়েছ, অবশেষে আল্লাহর আদেশ পৌঁছেছে। এই সবই তোমাদেরকে আল্লাহ সম্পর্কে প্রতারিত করেছে।
15; অতএব, আজ তোমাদের কাছ থেকে কোন মুক্তিপন গ্রহণ করা হবে না। এবং কাফেরদের কাছ থেকেও নয়। তোমাদের সবার আবাস্থল জাহান্নাম। সেটাই তোমাদের সঙ্গী। কতই না নিকৃষ্ট এই প্রত্যাবর্তন স্থল।
16; যারা মুমিন, তাদের জন্যে কি আল্লাহর স্মরণে এবং যে সত্য অবর্তীর্ণ হয়েছে, তার কারণে হৃদয় বিগলিত হওয়ার সময় আসেনি? তারা তাদের মত যেন না হয়, যাদেরকে পূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছিল। তাদের উপর সুদীর্ঘকাল অতিক্রান্ত হয়েছে, অতঃপর তাদের অন্তঃকরণ কঠিন হয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশই পাপাচারী।
17; তোমরা জেনে রাখ, আল্লাহই ভূ-ভাগকে তার মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবিত করেন। আমি পরিস্কারভাবে তোমাদের জন্যে আয়াতগুলো ব্যক্ত করেছি, যাতে তোমরা বোঝ।
18; নিশ্চয় দানশীল ব্যক্তি ও দানশীলা নারী, যারা আল্লাহকে উত্তমরূপে ধার দেয়, তাদেরকে দেয়া হবে বহুগুণ এবং তাদের জন্যে রয়েছে সম্মানজনক পুরস্কার।
19; আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে তারাই তাদের পালনকর্তার কাছে সিদ্দীক ও শহীদ বলে বিবেচিত। তাদের জন্যে রয়েছে পুরস্কার ও জ্যোতি এবং যারা কাফের ও আমার নিদর্শন অস্বীকারকারী তারাই জাহান্নামের অধিবাসী হবে।
20; তোমরা জেনে রাখ, পার্থিব জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, সাজ-সজ্জা, পারস্পরিক অহমিকা এবং ধন ও জনের প্রাচুর্য ব্যতীত আর কিছু নয়, যেমন এক বৃষ্টির অবস্থা, যার সবুজ ফসল কৃষকদেরকে চমৎকৃত করে, এরপর তা শুকিয়ে যায়, ফলে তুমি তাকে পীতবর্ণ দেখতে পাও, এরপর তা খড়কুটা হয়ে যায়। আর পরকালে আছে কঠিন শাস্তি এবং আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। পার্থিব জীবন প্রতারণার উপকরণ বৈ কিছু নয়।
21; তোমরা অগ্রে ধাবিত হও তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা ও সেই জান্নাতের দিকে, যা আকাশ ও পৃথিবীর মত প্রশস্ত। এটা প্রস্তুত করা হয়েছে আল্লাহ ও তাঁর রসূলগণের প্রতি বিশ্বাসস্থাপনকারীদের জন্যে। এটা আল্লাহর কৃপা, তিনি যাকে ইচ্ছা, এটা দান করেন। আল্লাহ মহান কৃপার অধিকারী।
22; পৃথিবীতে এবং ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর কোন বিপদ আসে না; কিন্তু তা জগত সৃষ্টির পূর্বেই কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। নিশ্চয় এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ।
23; এটা এজন্যে বলা হয়, যাতে তোমরা যা হারাও তজ্জন্যে দুঃখিত না হও এবং তিনি তোমাদেরকে যা দিয়েছেন, তজ্জন্যে উল্লসিত না হও। আল্লাহ কোন উদ্ধত অহংকারীকে পছন্দ করেন না,
24; যারা কৃপণতা করে এবং মানুষকে কৃপণতার প্রতি উৎসাহ দেয়, যে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তার জানা উচিত যে, আল্লাহ অভাবমুক্ত, প্রশংসিত।
25; আমি আমার রসূলগণকে সুস্পষ্ট নিদর্শনসহ প্রেরণ করেছি এবং তাঁদের সাথে অবতীর্ণ করেছি কিতাব ও ন্যায়নীতি, যাতে মানুষ ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি নাযিল করেছি লৌহ, যাতে আছে প্রচন্ড রণশক্তি এবং মানুষের বহুবিধ উপকার। এটা এজন্যে যে, আল্লাহ জেনে নিবেন কে না দেখে তাঁকে ও তাঁর রসূলগণকে সাহায্য করে। আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী।
26; আমি নূহ ও ইব্রাহীমকে রসূলরূপে প্রেরণ করেছি এবং তাদের বংশধরের মধ্যে নবুওয়ত ও কিতাব অব্যাহত রেখেছি। অতঃপর তাদের কতক সৎপথপ্রাপ্ত হয়েছে এবং অধিকাংশই হয়েছে পাপাচারী।
27; অতঃপর আমি তাদের পশ্চাতে প্রেরণ করেছি আমার রসূলগণকে এবং তাদের অনুগামী করেছি মরিয়ম তনয় ঈসাকে ও তাকে দিয়েছি ইঞ্জিল। আমি তার অনুসারীদের অন্তরে স্থাপন করেছি নম্রতা ও দয়া। আর বৈরাগ্য, সে তো তারা নিজেরাই উদ্ভাবন করেছে; আমি এটা তাদের উপর ফরজ করিনি; কিন্তু তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্যে এটা অবলম্বন করেছে। অতঃপর তারা যথাযথভাবে তা পালন করেনি। তাদের মধ্যে যারা বিশ্বাসী ছিল, আমি তাদেরকে তাদের প্রাপ্য পুরস্কার দিয়েছি। আর তাদের অধিকাংশই পাপাচারী।
28; মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। তিনি নিজে অনুগ্রহের দ্বিগুণ অংশ তোমাদেরকে দিবেন, তোমাদেরকে দিবেন জ্যোতি, যার সাহায্যে তোমরা চলবে এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়াময়।
29; যাতে কিতাবধারীরা জানে যে, আল্লাহর সামান্য অনুগ্রহের উপর ও তাদের কোন ক্ষমতা নেই, দয়া আল্লাহরই হাতে; তিনি যাকে ইচ্ছা, তা দান করেন। আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল।

Chapter 58 (Sura 58)
1; যে নারী তার স্বামীর বিষয়ে আপনার সাথে বাদানুবাদ করছে এবং অভিযোগ পেশ করছে আল্লাহর দরবারে, আল্লাহ তার কথা শুনেছেন। আল্লাহ আপনাদের উভয়ের কথাবার্তা শুনেন। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু শুনেন, সবকিছু দেখেন।
2; তোমাদের মধ্যে যারা তাদের স্ত্রীগণকে মাতা বলে ফেলে, তাদের স্ত্রীগণ তাদের মাতা নয়। তাদের মাতা কেবল তারাই, যারা তাদেরকে জন্মদান করেছে। তারা তো অসমীচীন ও ভিত্তিহীন কথাই বলে। নিশ্চয় আল্লাহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল।
3; যারা তাদের স্ত্রীগণকে মাতা বলে ফেলে, অতঃপর নিজেদের উক্তি প্রত্যাহার করে, তাদের কাফফারা এই একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একটি দাসকে মুক্তি দিবে। এটা তোমাদের জন্যে উপদেশ হবে। আল্লাহ খবর রাখেন তোমরা যা কর।
4; যার এ সামর্থ্য নেই, সে একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একাদিক্রমে দুই মাস রোযা রাখবে। যে এতেও অক্ষম হয় সে ষাট জন মিসকীনকে আহার করাবে। এটা এজন্যে, যাতে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত শাস্তি। আর কাফেরদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণা দায়ক আযাব।
5; যারা আল্লাহর তাঁর রসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা অপদস্থ হয়েছে, যেমন অপদস্থ হয়েছে তাদের পূর্ববর্তীরা। আমি সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ নাযিল করেছি। আর কাফেরদের জন্যে রয়েছে অপমানজনক শাস্তি।
6; সেদিন স্মরণীয়; যেদিন আল্লাহ তাদের সকলকে পুনরুত্থিত করবেন, অতঃপর তাদেরকে জানিয়ে দিবেন যা তারা করত। আল্লাহ তার হিসাব রেখেছেন, আর তারা তা ভুলে গেছে। আল্লাহর সামনে উপস্থিত আছে সব বস্তুই।
7; আপনি কি ভেবে দেখেননি যে, নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, আল্লাহ তা জানেন। তিন ব্যক্তির এমন কোন পরামর্শ হয় না যাতে তিনি চতুর্থ না থাকেন এবং পাঁচ জনেরও হয় না, যাতে তিনি ষষ্ঠ না থাকেন তারা এতদপেক্ষা কম হোক বা বেশী হোক তারা যেখানেই থাকুক না কেন তিনি তাদের সাথে আছেন, তারা যা করে, তিনি কেয়ামতের দিন তা তাদেরকে জানিয়ে দিবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।
8; আপনি কি ভেবে দেখেননি, যাদেরকে কানাঘুষা করতে নিষেধ করা হয়েছিল অতঃপর তারা নিষিদ্ধ কাজেরই পুনরাবৃত্তি করে এবং পাপাচার, সীমালংঘন এবং রসূলের অবাধ্যতার বিষয়েই কানাঘুষা করে। তারা যখন আপনার কাছে আসে, তখন আপনাকে এমন ভাষায় সালাম করে, যদ্দ্বারা আল্লাহ আপনাকে সালাম করেননি। তারা মনে মনে বলেঃ আমরা যা বলি, তজ্জন্যে আল্লাহ আমাদেরকে শাস্তি দেন না কেন? জাহান্নামই তাদের জন্যে যথেষ্ট। তারা তাতে প্রবেশ করবে। কতই না নিকৃষ্ট সেই জায়গা।
9; মুমিনগণ, তোমরা যখন কানাকানি কর, তখন পাপাচার, সীমালংঘন ও রসূলের অবাধ্যতার বিষয়ে কানাকানি করো না বরং অনুগ্রহ ও খোদাভীতির ব্যাপারে কানাকানি করো। আল্লাহকে ভয় কর, যাঁর কাছে তোমরা একত্রিত হবে।
10; এই কানাঘুষা তো শয়তানের কাজ; মুমিনদেরকে দুঃখ দেয়ার দেয়ার জন্যে। তবে আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত সে তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। মুমিনদের উচিত আল্লাহর উপর ভরসা করা।
11; মুমিনগণ, যখন তোমাদেরকে বলা হয়ঃ মজলিসে স্থান প্রশস্ত করে দাও, তখন তোমরা স্থান প্রশস্ত করে দিও। আল্লাহর জন্যে তোমাদের জন্য প্রশস্ত করে দিবেন। যখন বলা হয়ঃ উঠে যাও, তখন উঠে যেয়ো। তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার এবং যারা জ্ঞানপ্রাপ্ত, আল্লাহ তাদের মর্যাদা উচ্চ করে দিবেন। আল্লাহ খবর রাখেন যা কিছু তোমরা কর।
12; মুমিনগণ, তোমরা রসূলের কাছে কানকথা বলতে চাইলে তৎপূর্বে সদকা প্রদান করবে। এটা তোমাদের জন্যে শ্রেয়ঃ ও পবিত্র হওয়ার ভাল উপায়। যদি তাতে সক্ষম না হও, তবে আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
13; তোমরা কি কানকথা বলার পূর্বে সদকা প্রদান করতে ভীত হয়ে গেলে? অতঃপর তোমরা যখন সদকা দিতে পারলে না এবং আল্লাহ তোমাদেরকে মাফ করে দিলেন তখন তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত প্রদান কর এবং আল্লাহ ও রসূলের আনুগত্য কর। আল্লাহ খবর রাখেন তোমরা যা কর।
14; আপনি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করেননি, যারা আল্লাহর গযবে নিপতিত সম্প্রদায়ের সাথে বন্ধুত্ব করে? তারা মুসলমানদের দলভুক্ত নয় এবং তাদেরও দলভূক্ত নয়। তারা জেনেশুনে মিথ্যা বিষয়ে শপথ করে।
15; আল্লাহ তাদের জন্যে কঠোর শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন। নিশ্চয় তারা যা করে, খুবই মন্দ।
16; তারা তাদের শপথকে ঢাল করে রেখেছেন, অতঃপর তারা আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বাধা প্রদান করে। অতএব, তাদের জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি।
17; আল্লাহর কবল থেকে তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তাদেরকে মোটেই বাঁচাতে পারবেনা। তারাই জাহান্নামের অধিবাসী তথায় তারা চিরকাল থাকবে।
18; যেদিন আল্লাহ তাদের সকলকে পুনরুত্থিত করবেন। অতঃপর তারা আল্লাহর সামনে শপথ করবে, যেমন তোমাদের সামনে শপথ করে। তারা মনে করবে যে, তারা কিছু সৎপথে আছে। সাবধান, তারাই তো আসল মিথ্যাবাদী।
19; শয়তান তাদেরকে বশীভূত করে নিয়েছে, অতঃপর আল্লাহর স্মরণ ভূলিয়ে দিয়েছে। তারা শয়তানের দল। সাবধান, শয়তানের দলই ক্ষতিগ্রস্ত।
20; নিশ্চয় যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধাচারণ করে, তারাই লাঞ্ছিতদের দলভূক্ত।
21; আল্লাহ লিখে দিয়েছেনঃ আমি এবং আমার রসূলগণ অবশ্যই বিজয়ী হব। নিশ্চয় আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী।
22; যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, তাদেরকে আপনি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধাচরণকারীদের সাথে বন্ধুত্ব করতে দেখবেন না, যদিও তারা তাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা অথবা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী হয়। তাদের অন্তরে আল্লাহ ঈমান লিখে দিয়েছেন এবং তাদেরকে শক্তিশালী করেছেন তাঁর অদৃশ্য শক্তি দ্বারা। তিনি তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। তারা তথায় চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। তারাই আল্লাহর দল। জেনে রাখ, আল্লাহর দলই সফলকাম হবে।

Chapter 59 (Sura 59)
1; নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করে। তিনি পরাক্রমশালী মহাজ্ঞানী।
2; তিনিই কিতাবধারীদের মধ্যে যারা কাফের, তাদেরকে প্রথমবার একত্রিত করে তাদের বাড়ী-ঘর থেকে বহিস্কার করেছেন। তোমরা ধারণাও করতে পারনি যে, তারা বের হবে এবং তারা মনে করেছিল যে, তাদের দূর্গগুলো তাদেরকে আল্লাহর কবল থেকে রক্ষা করবে। অতঃপর আল্লাহর শাস্তি তাদের উপর এমনদিক থেকে আসল, যার কল্পনাও তারা করেনি। আল্লাহ তাদের অন্তরে ত্রাস সঞ্চার করে দিলেন। তারা তাদের বাড়ী-ঘর নিজেদের হাতে এবং মুসলমানদের হাতে ধ্বংস করছিল। অতএব, হে চক্ষুষ্মান ব্যক্তিগণ, তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর।
3; আল্লাহ যদি তাদের জন্যে নির্বাসন অবধারিত না করতেন, তবে তাদেরকে দুনিয়াতে শাস্তি দিতেন। আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে জাহান্নামের আযাব।
4; এটা এ কারণে যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধাচরণ করেছে। যে আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণ করে, তার জানা উচিত যে, আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।
5; তোমরা যে কিছু কিছু খর্জুর বৃক্ষ কেটে দিয়েছ এবং কতক না কেটে ছেড়ে দিয়েছ, তা তো আল্লাহরই আদেশ এবং যাতে তিনি অবাধ্যদেরকে লাঞ্ছিত করেন।
6; আল্লাহ বনু-বনুযায়রের কাছ থেকে তাঁর রসূলকে যে ধন-সম্পদ দিয়েছেন, তজ্জন্যে তোমরা ঘোড়ায় কিংবা উটে চড়ে যুদ্ধ করনি, কিন্তু আল্লাহ যার উপর ইচ্ছা, তাঁর রসূলগণকে প্রাধান্য দান করেন। আল্লাহ সবকিছুর উপর সর্বশক্তিমান।
7; আল্লাহ জনপদবাসীদের কাছ থেকে তাঁর রসূলকে যা দিয়েছেন, তা আল্লাহর, রসূলের, তাঁর আত্নীয়-স্বজনের, ইয়াতীমদের, অভাবগ্রস্তদের এবং মুসাফিরদের জন্যে, যাতে ধনৈশ্বর্য্য কেবল তোমাদের বিত্তশালীদের মধ্যেই পুঞ্জীভূত না হয়। রসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।
8; এই ধন-সম্পদ দেশত্যাগী নিঃস্বদের জন্যে, যারা আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টিলাভের অন্বেষণে এবং আল্লাহ তাঁর রসূলের সাহায্যার্থে নিজেদের বাস্তুভিটা ও ধন-সম্পদ থেকে বহিস্কৃত হয়েছে। তারাই সত্যবাদী।
9; যারা মুহাজিরদের আগমনের পূর্বে মদীনায় বসবাস করেছিল এবং বিশ্বাস স্থাপন করেছিল, তারা মুহাজিরদের ভালবাসে, মুহাজিরদেরকে যা দেয়া হয়েছে, তজ্জন্যে তারা অন্তরে ঈর্ষাপোষণ করে না এবং নিজেরা অভাবগ্রস্ত হলেও তাদেরকে অগ্রাধিকার দান করে। যারা মনের কার্পণ্য থেকে মুক্ত, তারাই সফলকাম।
10; আর এই সম্পদ তাদের জন্যে, যারা তাদের পরে আগমন করেছে। তারা বলেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদেরকে এবং ঈমানে আগ্রহী আমাদের ভ্রাতাগণকে ক্ষমা কর এবং ঈমানদারদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে কোন বিদ্বেষ রেখো না। হে আমাদের পালনকর্তা, আপনি দয়ালু, পরম করুণাময়।
11; আপনি কি মুনাফিকদেরকে দেখেন নি? তারা তাদের কিতাবধারী কাফের ভাইদেরকে বলেঃ তোমরা যদি বহিস্কৃত হও, তবে আমরা অবশ্যই তোমাদের সাথে দেশ থেকে বের হয়ে যাব এবং তোমাদের ব্যাপারে আমরা কখনও কারও কথা মানব না। আর যদি তোমরা আক্রান্ত হও, তবে আমরা অবশ্যই তোমাদেরকে সাহায্য করব। আল্লাহ তা’আলা সাক্ষ্য দেন যে, ওরা নিশ্চয়ই মিথ্যাবাদী।
12; যদি তারা বহিস্কৃত হয়, তবে মুনাফিকরা তাদের সাথে দেশত্যাগ করবে না আর যদি তারা আক্রান্ত হয়, তবে তারা তাদেরকে সাহায্য করবে না। যদি তাদেরকে সাহায্য করে, তবে অবশ্যই পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে পলায়ন করবে। এরপর কাফেররা কোন সাহায্য পাবে না।
13; নিশ্চয় তোমরা তাদের অন্তরে আল্লাহ তা’আলা অপেক্ষা অধিকতর ভয়াবহ। এটা এ কারণে যে, তারা এক নির্বোধ সম্প্রদায়।
14; তারা সংঘবদ্ধভাবেও তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারবে না। তারা যুদ্ধ করবে কেবল সুরক্ষিত জনপদে অথবা দুর্গ প্রাচীরের আড়াল থেকে। তাদের পারস্পরিক যুদ্ধই প্রচন্ড হয়ে থাকে। আপনি তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ মনে করবেন; কিন্তু তাদের অন্তর শতধাবিচ্ছিন্ন। এটা এ কারণে যে, তারা এক কান্ডজ্ঞানহীণ সম্প্রদায়।
15; তারা সেই লোকদের মত, যারা তাদের নিকট অতীতে নিজেদের কর্মের শাস্তিভোগ করেছে। তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
16; তারা শয়তানের মত, যে মানুষকে কাফের হতে বলে। অতঃপর যখন সে কাফের হয়, তখন শয়তান বলেঃ তোমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। আমি বিশ্বপালনকর্তা আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করি।
17; অতঃপর উভয়ের পরিণতি হবে এই যে, তারা জাহান্নামে যাবে এবং চিরকাল তথায় বসবাস করবে। এটাই জালেমদের শাস্তি।
18; মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহ তা’আলাকে ভয় কর। প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত, আগামী কালের জন্যে সে কি প্রেরণ করে, তা চিন্তা করা। আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করতে থাক। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা’আলা সে সম্পর্কে খবর রাখেন।
19; তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা আল্লাহ তা’আলাকে ভুলে গেছে। ফলে আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে আত্ন বিস্মৃত করে দিয়েছেন। তারাই অবাধ্য।
20; জাহান্নামের অধিবাসী এবং জান্নাতের অধিবাসী সমান হতে পারে না। যারা জান্নাতের অধিবাসী, তারাই সফলকাম।
21; যদি আমি এই কোরআন পাহাড়ের উপর অবতীর্ণ করতাম, তবে তুমি দেখতে যে, পাহাড় বিনীত হয়ে আল্লাহ তা’আলার ভয়ে বিদীর্ণ হয়ে গেছে। আমি এসব দৃষ্টান্ত মানুষের জন্যে বর্ণনা করি, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে।
22; তিনিই আল্লাহ তা’আলা, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই; তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যকে জানেন তিনি পরম দয়ালু, অসীম দাতা।
23; তিনিই আল্লাহ তিনি ব্যতিত কোন উপাস্য নেই। তিনিই একমাত্র মালিক, পবিত্র, শান্তি ও নিরাপত্তাদাতা, আশ্রয়দাতা, পরাক্রান্ত, প্রতাপান্বিত, মাহাত্নøশীল। তারা যাকে অংশীদার করে আল্লাহ তা’ আলা তা থেকে পবিত্র।
24; তিনিই আল্লাহ তা’আলা, স্রষ্টা, উদ্ভাবক, রূপদাতা, উত্তম নাম সমূহ তাঁরই। নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবই তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাময়।

Chapter 60 (Sura 60)
1; মুমিনগণ, তোমরা আমার ও তোমাদের শত্রুদেরকে বন্ধরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা তো তাদের প্রতি বন্ধুত্বের বার্তা পাঠাও, অথচ তারা যে সত্য তোমাদের কাছে আগমন করেছে, তা অস্বীকার করছে। তারা রসূলকে ও তোমাদেরকে বহিস্কার করে এই অপরাধে যে, তোমরা তোমাদের পালনকর্তার প্রতি বিশ্বাস রাখ। যদি তোমরা আমার সন্তুষ্টিলাভের জন্যে এবং আমার পথে জেহাদ করার জন্যে বের হয়ে থাক, তবে কেন তাদের প্রতি গোপনে বন্ধুত্বের পয়গাম প্রেরণ করছ? তোমরা যা গোপন কর এবং যা প্রকাশ কর, ত আমি খুব জানি। তোমাদের মধ্যে যে এটা করে, সে সরলপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়।
2; তোমাদেরকে করতলগত করতে পারলে তারা তোমাদের শত্রু হয়ে যাবে এবং মন্দ উদ্দেশ্যে তোমাদের প্রতি বাহু ও রসনা প্রসারিত করবে এবং চাইবে যে, কোনরূপে তোমরা ও কাফের হয়ে যাও।
3; তোমাদের স্বজন-পরিজন ও সন্তান-সন্ততি কিয়ামতের দিন কোন উপকারে আসবে না। তিনি তোমাদের মধ্যে ফয়সালা করবেন। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন।
4; তোমাদের জন্যে ইব্রাহীম ও তাঁর সঙ্গীগণের মধ্যে চমৎকার আদর্শ রয়েছে। তারা তাদের সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমাদের সাথে এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার এবাদত কর, তার সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদের মানি না। তোমরা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না করলে তোমাদের মধ্যে ও আমাদের মধ্যে চিরশত্রুতা থাকবে। কিন্তু ইব্রাহীমের উক্তি তাঁর পিতার উদ্দেশে এই আদর্শের ব্যতিক্রম। তিনি বলেছিলেনঃ আমি অবশ্যই তোমার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করব। তোমার উপকারের জন্যে আল্লাহর কাছে আমার আর কিছু করার নেই। হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা তোমারই উপর ভরসা করেছি, তোমারই দিকে মুখ করেছি এবং তোমারই নিকট আমাদের প্রত্যাবর্তন।
5; হে আমাদের পালনকর্তা! তুমি আমাদেরকে কাফেরদের জন্য পরীক্ষার পাত্র করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের ক্ষমা কর। নিশ্চয় তুমি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
6; তোমরা যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা কর, তোমাদের জন্য তাদের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে। আর যে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তার জানা উচিত যে, আল্লাহ বেপরওয়া, প্রশংসার মালিক।
7; যারা তোমাদের শত্রু আল্লাহ তাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে সম্ভবতঃ বন্ধুত্ব সৃষ্টি করে দেবেন। আল্লাহ সবই করতে পারেন এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়।
8; ধর্মের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেনি এবং তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেনি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ইনসাফ করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফকারীদেরকে ভালবাসেন।
9; আল্লাহ কেবল তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন, যারা ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেছে এবং বহিস্কারকার্যে সহায়তা করেছে। যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে তারাই জালেম।
10; মুমিনগণ, যখন তোমাদের কাছে ঈমানদার নারীরা হিজরত করে আগমন করে, তখন তাদেরকে পরীক্ষা কর। আল্লাহ তাদের ঈমান সম্পর্কে সম্যক অবগত আছেন। যদি তোমরা জান যে, তারা ঈমানদার, তবে আর তাদেরকে কাফেরদের কাছে ফেরত পাঠিও না। এরা কাফেরদের জন্যে হালাল নয় এবং কাফেররা এদের জন্যে হালাল নয়। কাফেররা যা ব্যয় করেছে, তা তাদের দিয়ে দাও। তোমরা, এই নারীদেরকে প্রাপ্য মোহরানা দিয়ে বিবাহ করলে তোমাদের অপরাধ হবে না। তোমরা কাফের নারীদের সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক বজায় রেখো না। তোমরা যা ব্যয় করেছ, তা চেয়ে নাও এবং তারাও চেয়ে নিবে যা তারা ব্যয় করেছে। এটা আল্লাহর বিধান; তিনি তোমাদের মধ্যে ফয়সালা করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়।
11; তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যদি কেউ হাতছাড়া হয়ে কাফেরদের কাছে থেকে যায়, অতঃপর তোমরা সুযোগ পাও, তখন যাদের স্ত্রী হাতছাড়া হয়ে গেছে, তাদেরকে তাদের ব্যয়কৃত অর্থের সমপরিমাণ অর্থ প্রদান কর এবং আল্লাহকে ভয় কর, যার প্রতি তোমরা বিশ্বাস রাখ।
12; হে নবী, ঈমানদার নারীরা যখন আপনার কাছে এসে আনুগত্যের শপথ করে যে, তারা আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, তাদের সন্তানদেরকে হত্যা করবে না, জারজ সন্তানকে স্বামীর ঔরস থেকে আপন গর্ভজাত সন্তান বলে মিথ্যা দাবী করবে না এবং ভাল কাজে আপনার অবাধ্যতা করবে না, তখন তাদের আনুগত্য গ্রহণ করুন এবং তাদের জন্যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল অত্যন্ত দয়ালু।
13; মুমিনগণ, আল্লাহ যে জাতির প্রতি রুষ্ট, তোমরা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করো না। তারা পরকাল সম্পর্কে নিরাশ হয়ে গেছে যেমন কবরস্থ কাফেররা নিরাশ হয়ে গেছে।

Chapter 61 (Sura 61)
1; নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাবান।
2; মুমিনগণ! তোমরা যা কর না, তা কেন বল?
3; তোমরা যা কর না, তা বলা আল্লাহর কাছে খুবই অসন্তোষজনক।
4; আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন, যারা তাঁর পথে সারিবদ্ধভাবে লড়াই করে, যেন তারা সীসাগালানো প্রাচীর।
5; স্মরণ কর, যখন মূসা (আঃ) তাঁর সম্প্রদায়কে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা কেন আমাকে কষ্ট দাও, অথচ তোমরা জান যে, আমি তোমাদের কাছে আল্লাহর রসূল। অতঃপর তারা যখন বক্রতা অবলম্বন করল, তখন আল্লাহ তাদের অন্তরকে বক্র করে দিলেন। আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না।
6; স্মরণ কর, যখন মরিয়ম-তনয় ঈসা (আঃ) বললঃ হে বনী ইসরাইল! আমি তোমাদের কাছে আল্লাহর প্রেরিত রসূল, আমার পূর্ববর্তী তওরাতের আমি সত্যায়নকারী এবং আমি এমন একজন রসূলের সুসংবাদদাতা, যিনি আমার পরে আগমন করবেন। তাঁর নাম আহমদ। অতঃপর যখন সে স্পষ্ট প্রমাণাদি নিয়ে আগমন করল, তখন তারা বললঃ এ তো এক প্রকাশ্য যাদু।
7; যে ব্যক্তি ইসলামের দিকে আহুত হয়েও আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা বলে; তার চাইতে অধিক যালেম আর কে? আল্লাহ যালেম সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না।
8; তারা মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর আলো নিভিয়ে দিতে চায়। আল্লাহ তাঁর আলোকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে।
9; তিনি তাঁর রসূলকে পথ নির্দেশ ও সত্যধর্ম নিয়ে প্রেরণ করেছেন, যাতে একে সবধর্মের উপর প্রবল করে দেন যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে।
10; মুমিনগণ, আমি কি তোমাদেরকে এমন এক বানিজ্যের সন্ধান দিব, যা তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে মুক্তি দেবে?
11; তা এই যে, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং আল্লাহর পথে নিজেদের ধন-সম্পদ ও জীবনপণ করে জেহাদ করবে। এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম; যদি তোমরা বোঝ।
12; তিনি তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন এবং এমন জান্নাতে দাখিল করবেন, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত এবং বসবাসের জান্নাতে উত্তম বাসগৃহে। এটা মহাসাফল্য।
13; এবং আরও একটি অনুগ্রহ দিবেন, যা তোমরা পছন্দ কর। আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য এবং আসন্ন বিজয়। মুমিনদেরকে এর সুসংবাদ দান করুন।
14; মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হয়ে যাও, যেমন ঈসা ইবনে-মরিয়ম তার শিষ্যবর্গকে বলেছিল, আল্লাহর পথে কে আমার সাহায্যকারী হবে? শিষ্যবর্গ বলেছিলঃ আমরা আল্লাহর পথে সাহায্যকারী। অতঃপর বনী-ইসরাঈলের একদল বিশ্বাস স্থাপন করল এবং একদল কাফের হয়ে গেল। যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছিল, আমি তাদেরকে তাদের শত্রুদের মোকাবেলায় শক্তি যোগালাম, ফলে তারা বিজয়ী হল।

Chapter 62 (Sura 62)
1; রাজ্যাধিপতি, পবিত্র, পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময় আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে, যা কিছু আছে নভোমন্ডলে ও যা কিছু আছে ভূমন্ডলে।
2; তিনিই নিরক্ষরদের মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তার আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত। ইতিপূর্বে তারা ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত।
3; এই রসূল প্রেরিত হয়েছেন অন্য আরও লোকদের জন্যে, যারা এখনও তাদের সাথে মিলিত হয়নি। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
4; এটা আল্লাহর কৃপা, যাকে ইচ্ছা তিনি তা দান করেন। আল্লাহ মহাকৃপাশীল।
5; যাদেরকে তওরাত দেয়া হয়েছিল, অতঃপর তারা তার অনুসরণ করেনি, তাদের দৃষ্টান্ত সেই গাধা, যে পুস্তক বহন করে, যারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে, তাদের দৃষ্টান্ত কত নিকৃষ্ট। আল্লাহ জালেম সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না।
6; বলুন হে ইহুদীগণ, যদি তোমরা দাবী কর যে, তোমরাই আল্লাহর বন্ধু-অন্য কোন মানব নয়, তবে তোমরা মৃত্যু কামনা কর যদি তোমরা সত্যবাদী হও।
7; তারা নিজেদের কৃতকর্মের কারণে কখনও মৃত্যু কামনা করবে না। আল্লাহ জালেমদের সম্পর্কে সম্যক অবগত আছেন।
8; বলুন, তোমরা যে মৃত্যু থেকে পলায়নপর, সেই মৃত্যু অবশ্যই তোমাদের মুখামুখি হবে, অতঃপর তোমরা অদৃশ্য, দৃশ্যের জ্ঞানী আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে। তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দিবেন সেসব কর্ম, যা তোমরা করতে।
9; মুমিনগণ, জুমআর দিনে যখন নামাযের আযান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ।
10; অতঃপর নামায সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।
11; তারা যখন কোন ব্যবসায়ের সুযোগ অথবা ক্রীড়াকৌতুক দেখে তখন আপনাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে তারা সেদিকে ছুটে যায়। বলুনঃ আল্লাহর কাছে যা আছে, তা ক্রীড়াকৌতুক ও ব্যবসায় অপেক্ষা উৎকৃষ্ট। আল্লাহ সর্বোত্তম রিযিকদাতা।

Chapter 63 (Sura 63)
1; মুনাফিকরা আপনার কাছে এসে বলেঃ আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আপনি নিশ্চয়ই আল্লাহর রসূল। আল্লাহ জানেন যে, আপনি অবশ্যই আল্লাহর রসূল এবং আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী।
2; তারা তাদের শপথসমূহকে ঢালরূপে ব্যবহার করে। অতঃপর তারা আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করে। তারা যা করছে, তা খুবই মন্দ।
3; এটা এজন্য যে, তারা বিশ্বাস করার পর পুনরায় কাফের হয়েছে। ফলে তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেয়া হয়েছে। অতএব তারা বুঝে না।
4; আপনি যখন তাদেরকে দেখেন, তখন তাদের দেহাবয়ব আপনার কাছে প্রীতিকর মনে হয়। আর যদি তারা কথা বলে, তবে আপনি তাদের কথা শুনেন। তারা প্রাচীরে ঠেকানো কাঠসদৃশ্য। প্রত্যেক শোরগোলকে তারা নিজেদের বিরুদ্ধে মনে করে। তারাই শত্রু, অতএব তাদের সম্পর্কে সতর্ক হোন। ধ্বংস করুন আল্লাহ তাদেরকে। তারা কোথায় বিভ্রান্ত হচ্ছে ?
5; যখন তাদেরকে বলা হয়ঃ তোমরা এস, আল্লাহর রসূল তোমাদের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করবেন, তখন তারা মাথা ঘুরিয়ে নেয় এবং আপনি তাদেরকে দেখেন যে, তারা অহংকার করে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
6; আপনি তাদের জন্যে ক্ষমাপ্রার্থনা করুন অথবা না করুন, উভয়ই সমান। আল্লাহ কখনও তাদেরকে ক্ষমা করবেন না। আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না।
7; তারাই বলেঃ আল্লাহর রাসূলের সাহচর্যে যারা আছে তাদের জন্যে ব্যয় করো না। পরিণামে তারা আপনা-আপনি সরে যাবে। ভূ ও নভোমন্ডলের ধন-ভান্ডার আল্লাহরই কিন্তু মুনাফিকরা তা বোঝে না।
8; তারাই বলেঃ আমরা যদি মদীনায় প্রত্যাবর্তন করি তবে সেখান থেকে সবল অবশ্যই দুর্বলকে বহিস্কৃত করবে। শক্তি তো আল্লাহ তাঁর রসূল ও মুমিনদেরই কিন্তু মুনাফিকরা তা জানে না।
9; মুমিনগণ! তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না করে। যারা এ কারণে গাফেল হয়, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত।
10; আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় কর। অন্যথায় সে বলবেঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ দিলে না কেন? তাহলে আমি সদকা করতাম এবং সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।
11; প্রত্যেক ব্যক্তির নির্ধারিত সময় যখন উপস্থিত হবে, তখন আল্লাহ কাউকে অবকাশ দেবেন না। তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে খবর রাখেন।

Chapter 64 (Sura 64)
1; নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে। রাজত্ব তাঁরই এবং প্রশংসা তাঁরই। তিনি সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।
2; তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাদের মধ্যে কেউ কাফের এবং কেউ মুমিন। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন।
3; তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলকে যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর সুন্দর করেছেন তোমাদের আকৃতি। তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তন।
4; নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা আছে, তিনি তা জানেন। তিনি আরও জানেন তোমরা যা গোপনে কর এবং যা প্রকাশ্যে কর। আল্লাহ অন্তরের বিষয়াদি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত।
5; তোমাদের পুর্বে যারা কাফের ছিল, তাদের বৃত্তান্ত কি তোমাদের কাছে পৌছেনি? তারা তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করেছে, এবং তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
6; এটা এ কারণে যে, তাদের কাছে তাদের রসূলগণ প্রকাশ্য নিদর্শনাবলীসহ আগমন করলে তারা বলতঃ মানুষই কি আমাদেরকে পথপ্রদর্শন করবে? অতঃপর তারা কাফের হয়ে গেল এবং মুখ ফিরিয়ে নিল। এতে আল্লাহর কিছু আসে যায় না। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী প্রশংসিত।
7; কাফেররা দাবী করে যে, তারা কখনও পুনরুত্থিত হবে না। বলুন, অবশ্যই হবে, আমার পালনকর্তার কসম, তোমরা নিশ্চয় পুরুত্থিত হবে। অতঃপর তোমাদেরকে অবহিত করা হবে যা তোমরা করতে। এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ।
8; অতএব তোমরা আল্লাহ তাঁর রসূল এবং অবতীর্ন নূরের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। তোমরা যা কর, সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবগত।
9; সেদিন অর্থাৎ, সমাবেশের দিন আল্লাহ তোমাদেরকে সমবেত করবেন। এ দিন হার-জিতের দিন। যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, আল্লাহ তার পাপসমূহ মোচন করবেন এবং তাকে জান্নাতে দাখিল করবেন। যার তলদেশে নির্ঝরিনীসমূহ প্রবাহিত হবে, তারা তথায় চিরকাল বসবাস করবে। এটাই মহাসাফল্য।
10; আর যারা কাফের এবং আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে, তারাই জাহান্নামের অধিবাসী, তারা তথায় অনন্তকাল থাকবে। কতই না মন্দ প্রত্যাবর্তনস্থল এটা।
11; আল্লাহর নির্দেশ ব্যতিরেকে কোন বিপদ আসে না এবং যে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করে, তিনি তার অন্তরকে সৎপথ প্রদর্শন করেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত।
12; তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রসূলুল্লাহর আনুগত্য কর। যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে আমার রসূলের দায়িত্ব কেবল খোলাখুলি পৌছে দেয়া।
13; আল্লাহ তিনি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই। অতএব মুমিনগণ আল্লাহর উপর ভরসা করুক।
14; হে মুমিনগণ, তোমাদের কোন কোন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি তোমাদের দুশমন। অতএব তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাক। যদি মার্জনা কর, উপেক্ষা কর, এবং ক্ষমা কর, তবে আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুনাময়।
15; তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তো কেবল পরীক্ষাস্বরূপ। আর আল্লাহর কাছে রয়েছে মহাপুরস্কার।
16; অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর, শুন, আনুগত্য কর এবং ব্যয় কর। এটা তোমাদের জন্যে কল্যাণকর। যারা মনের কার্পন্য থেকে মুক্ত, তারাই সফলকাম।
17; যদি তোমরা আল্লাহকে উত্তম &#2443ণ দান কর, তিনি তোমাদের জন্যে তা দ্বিগুণ করে দেবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আল্লাহ গুণগ্রাহী, সহনশীল।
18; তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী, পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়।

Chapter 65 (Sura 65)
1; হে নবী, তোমরা যখন স্ত্রীদেরকে তালাক দিতে চাও, তখন তাদেরকে তালাক দিয়ো ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রেখে এবং ইদ্দত গণনা করো। তোমরা তোমাদের পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করো। তাদেরকে তাদের গৃহ থেকে বহিস্কার করো না এবং তারাও যেন বের না হয় যদি না তারা কোন সুস্পষ্ট নির্লজ্জ কাজে লিপ্ত হয়। এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। যে ব্যক্তি আল্লাহর সীমালংঘন করে, সে নিজেরই অনিষ্ট করে। সে জানে না, হয়তো আল্লাহ এই তালাকের পর কোন নতুন উপায় করে দেবেন।
2; অতঃপর তারা যখন তাদের ইদ্দতকালে পৌঁছে, তখন তাদেরকে যথোপযুক্ত পন্থায় রেখে দেবে অথবা যথোপযুক্ত পন্থায় ছেড়ে দেবে এবং তোমাদের মধ্য থেকে দু’জন নির্ভরযোগ্য লোককে সাক্ষী রাখবে। তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে সাক্ষ্য দিবে। এতদ্দ্বারা যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, তাকে উপদেশ দেয়া হচ্ছে। আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে নিস্কৃতির পথ করে দেবেন।
3; এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দেবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করবেন। আল্লাহ সবকিছুর জন্যে একটি পরিমাণ স্থির করে রেখেছেন।
4; তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যাদের &#2443তুবর্তী হওয়ার আশা নেই, তাদের ব্যাপারে সন্দেহ হলে তাদের ইদ্দত হবে তিন মাস। আর যারা এখনও &#2443তুর বয়সে পৌঁছেনি, তাদেরও অনুরূপ ইদ্দতকাল হবে। গর্ভবর্তী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তানপ্রসব পর্যন্ত। যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার কাজ সহজ করে দেন।
5; এটা আল্লাহর নির্দেশ, যা তিনি তোমাদের প্রতি নাযিল করেছেন। যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার পাপ মোচন করেন এবং তাকে মহাপুরস্কার দেন।
6; তোমরা তোমাদের সামর্থø অনুযায়ী যেরূপ গৃহে বাস কর, তাদেরকেও বসবাসের জন্যে সেরূপ গৃহ দাও। তাদেরকে কষ্ট দিয়ে সংকটাপন্ন করো না। যদি তারা গর্ভবতী হয়, তবে সন্তানপ্রসব পর্যন্ত তাদের ব্যয়ভার বহন করবে। যদি তারা তোমাদের সন্তানদেরকে স্তন্যদান করে, তবে তাদেরকে প্রাপ্য পারিশ্রমিক দেবে এবং এ সম্পর্কে পরস্পর সংযতভাবে পরামর্শ করবে। তোমরা যদি পরস্পর জেদ কর, তবে অন্য নারী স্তন্যদান করবে।
7; বিত্তশালী ব্যক্তি তার বিত্ত অনুযায়ী ব্যয় করবে। যে ব্যক্তি সীমিত পরিমাণে রিযিকপ্রাপ্ত, সে আল্লাহ যা দিয়েছেন, তা থেকে ব্যয় করবে। আল্লাহ যাকে যা দিয়েছেন, তদপেক্ষা বেশী ব্যয় করার আদেশ কাউকে করেন না। আল্লাহ কষ্টের পর সুখ দেবেন।
8; অনেক জনপদ তাদের পালনকর্তা ও তাঁর রসূলগণের আদেশ অমান্য করেছিল, অতঃপর আমি তাদেরকে কঠোর হিসাবে ধৃত করেছিলাম এবং তাদেরকে ভীষণ শাস্তি দিয়েছিলাম।
9; অতঃপর তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করল এবং তাদের কর্মের পরিণাম ক্ষতিই ছিল।
10; আল্লাহ তাদের জন্যে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তত রেখেছেন অতএব, হে বুদ্ধিমানগণ, যারা ঈমান এনেছ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। আল্লাহ তোমাদের প্রতি উপদেশ নাযিল করেছেন।
11; একজন রসূল, যিনি তোমাদের কাছে আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ পাঠ করেন, যাতে বিশ্বাসী ও সৎকর্মপরায়ণদের অন্ধকার থেকে আলোতে আনয়ন করেন। যে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে, তিনি তাকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত, তথায় তারা চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তাকে উত্তম রিযিক দেবেন।
12; আল্লাহ সপ্তাকাশ সৃষ্টি করেছেন এবং পৃথিবীও সেই পরিমাণে, এসবের মধ্যে তাঁর আদেশ অবতীর্ণ হয়, যাতে তোমরা জানতে পার যে, আল্লাহ সর্বশক্তিমান এবং সবকিছু তাঁর গোচরীভূত।

Chapter 66 (Sura 66)
1; হে নবী, আল্লাহ আপনার জন্যে যা হালাল করছেন, আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে খুশী করার জন্যে তা নিজের জন্যে হারাম করেছেন কেন? আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়াময়।
2; আল্লাহ তোমাদের জন্যে কসম থেকে অব্যহতি লাভের উপায় নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আল্লাহ তোমাদের মালিক। তিনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
3; যখন নবী তাঁর একজন স্ত্রীর কাছে একটি কথা গোপনে বললেন, অতঃপর স্ত্রী যখন তা বলে দিল এবং আল্লাহ নবীকে তা জানিয়ে দিলেন, তখন নবী সে বিষয়ে স্ত্রীকে কিছু বললেন এবং কিছু বললেন না। নবী যখন তা স্ত্রীকে বললেন, তখন স্ত্রী বললেনঃ কে আপনাকে এ সম্পর্কে অবহিত করল? নবী বললেন,ঃ যিনি সর্বজ্ঞ, ওয়াকিফহাল, তিনি আমাকে অবহিত করেছেন।
4; তোমাদের অন্তর অন্যায়ের দিকে ঝুঁকে পড়েছে বলে যদি তোমরা উভয়ে তওবা কর, তবে ভাল কথা। আর যদি নবীর বিরুদ্ধে একে অপরকে সাহায্য কর, তবে জেনে রেখ আল্লাহ জিবরাঈল এবং সৎকর্মপরায়ণ মুমিনগণ তাঁর সহায়। উপরন্তুত ফেরেশতাগণও তাঁর সাহায্যকারী।
5; যদি নবী তোমাদের সকলকে পরিত্যাগ করেন, তবে সম্ভবতঃ তাঁর পালনকর্তা তাঁকে পরিবর্তে দিবেন তোমাদের চাইতে উত্তম স্ত্রী, যারা হবে আজ্ঞাবহ, ঈমানদার, নামাযী তওবাকারিণী, এবাদতকারিণী, রোযাদার, অকুমারী ও কুমারী।
6; মুমিনগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই অগ্নি থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও প্রস্তর, যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয়, কঠোরস্বভাব ফেরেশতাগণ। তারা আল্লাহ তা’আলা যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয়, তাই করে।
7; হে কাফের সম্প্রদায়, তোমরা আজ ওযর পেশ করো না। তোমাদেরকে তারই প্রতিফল দেয়া হবে, যা তোমরা করতে।
8; মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ তা’আলার কাছে তওবা কর-আন্তরিক তওবা। আশা করা যায়, তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের মন্দ কর্মসমূহ মোচন করে দেবেন এবং তোমাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। সেদিন আল্লাহ নবী এবং তাঁর বিশ্বাসী সহচরদেরকে অপদস্থ করবেন না। তাদের নূর তাদের সামনে ও ডানদিকে ছুটোছুটি করবে। তারা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের নূরকে পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি সবকিছুর উপর সর্ব শক্তিমান।
9; হে নবী! কাফের ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জেহাদ করুন এবং তাদের প্রতি কঠোর হোন। তাদের ঠিকানা জাহান্নাম। সেটা কতই না নিকৃষ্ট স্থান।
10; আল্লাহ তা’আলা কাফেরদের জন্যে নূহ-পত্নী ও লূত-পত্নীর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন। তারা ছিল আমার দুই ধর্মপরায়ণ বান্দার গৃহে। অতঃপর তারা তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করল। ফলে নূহ ও লূত তাদেরকে আল্লাহ তা’আলার কবল থেকে রক্ষা করতে পারল না এবং তাদেরকে বলা হলঃ জাহান্নামীদের সাথে জাহান্নামে চলে যাও।
11; আল্লাহ তা’আলা মুমিনদের জন্যে ফেরাউন-পত্নীর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন। সে বললঃ হে আমার পালনকর্তা! আপনার সন্নিকটে জান্নাতে আমার জন্যে একটি গৃহ নির্মাণ করুন, আমাকে ফেরাউন ও তার দুস্কর্ম থেকে উদ্ধার করুন এবং আমাকে যালেম সম্প্রদায় থেকে মুক্তি দিন।
12; আর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন এমরান-তনয়া মরিয়মের, যে তার সতীত্ব বজায় রেখেছিল। অতঃপর আমি তার মধ্যে আমার পক্ষ থেকে জীবন ফুঁকে দিয়েছিলাম এবং সে তার পালনকর্তার বানী ও কিতাবকে সত্যে পরিণত করেছিল। সে ছিল বিনয় প্রকাশকারীনীদের একজন।

Chapter 67 (Sura 67)
1; পূণ্যময় তিনি, যাঁর হাতে রাজত্ব। তিনি সবকিছুর উপর সর্বশক্তিমান।
2; যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন, যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন-কে তোমাদের মধ্যে কর্মে শ্রেষ্ঠ? তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাময়।
3; তিনি সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। তুমি করুণাময় আল্লাহ তা’আলার সৃষ্টিতে কোন তফাত দেখতে পাবে না। আবার দৃষ্টিফেরাও; কোন ফাটল দেখতে পাও কি?
4; অতঃপর তুমি বার বার তাকিয়ে দেখ-তোমার দৃষ্টি ব্যর্থ ও পরিশ্রান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে।
5; আমি সর্বনিম্ন আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুসজ্জত করেছি; সেগুলোকে শয়তানদের জন্যে ক্ষেপণাস্ত্রবৎ করেছি এবং প্রস্তুত করে রেখেছি তাদের জন্যে জলন্ত অগ্নির শাস্তি।
6; যারা তাদের পালনকর্তাকে অস্বীকার করেছে তাদের জন্যে রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি। সেটা কতই না নিকৃষ্ট স্থান।
7; যখন তারা তথায় নিক্ষিপ্ত হবে, তখন তার উৎক্ষিপ্ত গর্জন শুনতে পাবে।
8; ক্রোধে জাহান্নাম যেন ফেটে পড়বে। যখনই তাতে কোন সম্প্রদায় নিক্ষিপ্ত হবে তখন তাদেরকে তার সিপাহীরা জিজ্ঞাসা করবে। তোমাদের কাছে কি কোন সতর্ককারী আগমন করেনি?
9; তারা বলবেঃ হ্যাঁ আমাদের কাছে সতর্ককারী আগমন করেছিল, অতঃপর আমরা মিথ্যারোপ করেছিলাম এবং বলেছিলামঃ আল্লাহ তা’আলা কোন কিছু নাজিল করেননি। তোমরা মহাবিভ্রান্তিতে পড়ে রয়েছ।
10; তারা আরও বলবেঃ যদি আমরা শুনতাম অথবা বুদ্ধি খাটাতাম, তবে আমরা জাহান্নামবাসীদের মধ্যে থাকতাম না।
11; অতঃপর তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করবে। জাহান্নামীরা দূর হোক।
12; নিশ্চয় যারা তাদের পালনকর্তাকে না দেখে ভয় করে, তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।
13; তোমরা তোমাদের কথা গোপনে বল অথবা প্রকাশ্যে বল, তিনি তো অন্তরের বিষয়াদি সম্পর্কে সম্যক অবগত।
14; যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি করে জানবেন না? তিনি সূক্ষ্নজ্ঞানী, সম্যক জ্ঞাত।
15; তিনি তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে সুগম করেছেন, অতএব, তোমরা তার কাঁধে বিচরণ কর এবং তাঁর দেয়া রিযিক আহার কর। তাঁরই কাছে পুনরুজ্জীবন হবে।
16; তোমরা কি ভাবনামুক্ত হয়ে গেছ যে, আকাশে যিনি আছেন তিনি তোমাদেরকে ভূগর্ভে বিলীন করে দেবেন, অতঃপর তা কাঁপতে থাকবে।
17; না তোমরা নিশ্চিন্ত হয়ে গেছ যে, আকাশে যিনি আছেন, তিনি তোমাদের উপর প্রস্তর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, অতঃপর তোমরা জানতে পারবে কেমন ছিল আমার সতর্কবাণী।
18; তাদের পূর্ববর্তীরা মিথ্যারোপ করেছিল, অতঃপর কত কঠোর হয়েছিল আমার অস্বীকৃতি।
19; তারা কি লক্ষ্য করে না, তাদের মাথার উপর উড়ন্ত পক্ষীকুলের প্রতি পাখা বিস্তারকারী ও পাখা সংকোচনকারী? রহমান আল্লাহ-ই তাদেরকে স্থির রাখেন। তিনি সর্ব-বিষয় দেখেন।
20; রহমান আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত তোমাদের কোন সৈন্য আছে কি, যে তোমাদেরকে সাহায্য করবে? কাফেররা বিভ্রান্তিতেই পতিত আছে।
21; তিনি যদি রিযিক বন্ধ করে দেন, তবে কে আছে, যে তোমাদেরকে রিযিক দিবে বরং তারা অবাধ্যতা ও বিমুখতায় ডুবে রয়েছে।
22; যে ব্যক্তি উপুড় হয়ে মুখে ভর দিয়ে চলে, সে-ই কি সৎ পথে চলে, না সে ব্যক্তি যে সোজা হয়ে সরলপথে চলে?
23; বলুন, তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং দিয়েছেন কর্ণ, চক্ষু ও অন্তর। তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।
24; বলুন, তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে বিস্তৃত করেছেন এবং তাঁরই কাছে তোমরা সমবেত হবে।
25; কাফেররা বলেঃ এই প্রতিশ্রুতি কবে হবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও?
26; বলুন, এর জ্ঞান আল্লাহ তা’আলার কাছেই আছে। আমি তো কেবল প্রকাশ্য সতর্ককারী।
27; যখন তারা সেই প্রতিশ্রুতিকে আসন্ন দেখবে তখন কাফেরদের মুখমন্ডল মলিন হয়ে পড়বে এবং বলা হবেঃ এটাই তো তোমরা চাইতে।
28; বলুন, তোমরা কি ভেবে দেখেছ-যদি আল্লাহ তা’আলা আমাকে ও আমার সংগীদেরকে ধ্বংস করেন অথবা আমাদের প্রতি দয়া করেন, তবে কাফেরদেরকে কে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?
29; বলুন, তিনি পরম করুণাময়, আমরা তাতে বিশ্বাস রাখি এবং তাঁরই উপর ভরসা করি। সত্ত্বরই তোমরা জানতে পারবে, কে প্রকাশ্য পথ-ভ্রষ্টতায় আছে।
30; বলুন, তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি তোমাদের পানি ভূগর্ভের গভীরে চলে যায়, তবে কে তোমাদেরকে সরবরাহ করবে পানির স্রোতধারা?

Chapter 68 (Sura 68)
1; নূন। শপথ কলমের এবং সেই বিষয়ের যা তারা লিপিবদ্ধ করে,
2; আপনার পালনকর্তার অনুগ্রহে আপনি উম্মাদ নন।
3; আপনার জন্যে অবশ্যই রয়েছে অশেষ পুরস্কার।
4; আপনি অবশ্যই মহান চরিত্রের অধিকারী।
5; সত্ত্বরই আপনি দেখে নিবেন এবং তারাও দেখে নিবে।
6; কে তোমাদের মধ্যে বিকারগ্রস্ত।
7; আপনার পালনকর্তা সম্যক জানেন কে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তিনি জানেন যারা সৎপথ প্রাপ্ত।
8; অতএব, আপনি মিথ্যারোপকারীদের আনুগত্য করবেন না।
9; তারা চায় যদি আপনি নমনীয় হন, তবে তারাও নমনীয় হবে।
10; যে অধিক শপথ করে, যে লাঞ্ছিত, আপনি তার আনুগত্য করবেন না।
11; যে পশ্চাতে নিন্দা করে একের কথা অপরের নিকট লাগিয়ে ফিরে।
12; যে ভাল কাজে বাধা দেয়, সে সীমালংঘন করে, সে পাপিষ্ঠ,
13; কঠোর স্বভাব, তদুপরি কুখ্যাত;
14; এ কারণে যে, সে ধন-সম্পদ ও সন্তান সন্ততির অধিকারী।
15; তার কাছে আমার আয়াত পাঠ করা হলে সে বলে; সেকালের উপকথা।
16; আমি তার নাসিকা দাগিয়ে দিব।
17; আমি তাদেরকে পরীক্ষা করেছি, যেমন পরীক্ষা করেছি উদ্যানওয়ালাদের, যখন তারা শপথ করেছিল যে, সকালে বাগানের ফল আহরণ করবে,
18; ইনশাআল্লাহ না বলে।
19; অতঃপর আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে বাগানে এক বিপদ এসে পতিত হলো। যখন তারা নিদ্রিত ছিল।
20; ফলে সকাল পর্যন্ত হয়ে গেল ছিন্নবিচ্ছিন্ন তৃণসম।
21; সকালে তারা একে অপরকে ডেকে বলল,
22; তোমরা যদি ফল আহরণ করতে চাও, তবে সকাল সকাল ক্ষেতে চল।
23; অতঃপর তারা চলল ফিসফিস করে কথা বলতে বলতে,
24; অদ্য যেন কোন মিসকীন ব্যক্তি তোমাদের কাছে বাগানে প্রবেশ করতে না পারে।
25; তারা সকালে লাফিয়ে লাফিয়ে সজোরে রওয়ানা হল।
26; অতঃপর যখন তারা বাগান দেখল, তখন বললঃ আমরা তো পথ ভূলে গেছি।
27; বরং আমরা তো কপালপোড়া,
28; তাদের উত্তম ব্যক্তি বললঃ আমি কি তোমাদেরকে বলিনি? এখনও তোমরা আল্লাহ তা’আলার পবিত্রতা বর্ণনা করছো না কেন?
29; তারা বললঃ আমরা আমাদের পালনকর্তার পবিত্রতা ঘোষণা করছি, নিশ্চিতই আমরা সীমালংঘনকারী ছিলাম।
30; অতঃপর তারা একে অপরকে ভৎর্সনা করতে লাগল।
31; তারা বললঃ হায়! দুর্ভোগ আমাদের আমরা ছিলাম সীমাতিক্রমকারী।
32; সম্ভবতঃ আমাদের পালনকর্তা পরিবর্তে এর চাইতে উত্তম বাগান আমাদেরকে দিবেন। আমরা আমাদের পালনকর্তার কাছে আশাবাদী।
33; শাস্তি এভাবেই আসে এবং পরকালের শাস্তি আরও গুরুতর; যদি তারা জানত!
34; মোত্তাকীদের জন্যে তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে নেয়ামতের জান্নাত।
35; আমি কি আজ্ঞাবহদেরকে অপরাধীদের ন্যায় গণ্য করব?
36; তোমাদের কি হল ? তোমরা কেমন সিদ্ধান্ত দিচ্ছ?
37; তোমাদের কি কোন কিতাব আছে, যা তোমরা পাঠ কর।
38; তাতে তোমরা যা পছন্দ কর, তাই পাও?
39; না তোমরা আমার কাছ থেকেকেয়ামত পর্যন্ত বলবৎ কোন শপথ নিয়েছ যে, তোমরা তাই পাবে যা তোমরা সিদ্ধান্ত করবে?
40; আপনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করুন তাদের কে এ বিষয়ে দায়িত্বশীল?
41; না তাদের কোন শরীক উপাস্য আছে? থাকলে তাদের শরীক উপাস্যদেরকে উপস্থিত করুক যদি তারা সত্যবাদী হয়।
42; গোছা পর্যন্ত পা খোলার দিনের কথা স্মরণ কর, সেদিন তাদেরকে সেজদা করতে আহবান জানানো হবে, অতঃপর তারা সক্ষম হবে না।
43; তাদের দৃষ্টি অবনত থাকবে; তারা লাঞ্ছনাগ্রস্ত হবে, অথচ যখন তারা সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল, তখন তাদেরকে সেজদা করতে আহবান জানানো হত।
44; অতএব, যারা এই কালামকে মিথ্যা বলে, তাদেরকে আমার হাতে ছেড়ে দিন, আমি এমন ধীরে ধীরে তাদেরকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাব যে, তারা জানতে পারবে না।
45; আমি তাদেরকে সময় দেই। নিশ্চয় আমার কৌশল মজবুত।
46; আপনি কি তাদের কাছে পারিশ্রমিক চান? ফলে তাদের উপর জরিমানার বোঝা পড়ছে?
47; না তাদের কাছে গায়বের খবর আছে? অতঃপর তারা তা লিপিবদ্ধ করে।
48; আপনি আপনার পালনকর্তার আদেশের অপেক্ষায় সবর করুন এবং মাছওয়ালা ইউনুসের মত হবেন না, যখন সে দুঃখাকুল মনে প্রার্থনা করেছিল।
49; যদি তার পালনকর্তার অনুগ্রহ তাকে সামাল না দিত, তবে সে নিন্দিত অবস্থায় জনশুন্য প্রান্তরে নিক্ষিপ্ত হত।
50; অতঃপর তার পালনকর্তা তাকে মনোনীত করলেন এবং তাকে সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করে নিলেন।
51; কাফেররা যখন কোরআন শুনে, তখন তারা তাদের দৃষ্টি দ্বারা যেন আপনাকে আছাড় দিয়ে ফেলে দিবে এবং তারা বলেঃ সে তো একজন পাগল।
52; অথচ এই কোরআন তো বিশ্বজগতের জন্যে উপদেশ বৈ নয়।

Chapter 69 (Sura 69)
1; সুনিশ্চিত বিষয়।
2; সুনিশ্চিত বিষয় কি?
3; আপনি কি কিছু জানেন, সেই সুনিশ্চিত বিষয় কি?
4; আদ ও সামুদ গোত্র মহাপ্রলয়কে মিথ্যা বলেছিল।
5; অতঃপর সমুদ গোত্রকে ধ্বংস করা হয়েছিল এক প্রলয়ংকর বিপর্যয় দ্বারা।
6; এবং আদ গোত্রকে ধ্বংস করা হয়েছিল এক প্রচন্ড ঝঞ্জাবায়ূ,
7; যা তিনি প্রবাহিত করেছিলেন তাদের উপর সাত রাত্রি ও আট দিবস পর্যন্ত অবিরাম। আপনি তাদেরকে দেখতেন যে, তারা অসার খর্জুর কান্ডের ন্যায় ভূপাতিত হয়ে রয়েছে।
8; আপনি তাদের কোন অস্তিত্ব দেখতে পান কি?
9; ফেরাউন, তাঁর পূর্ববর্তীরা এবং উল্টে যাওয়া বস্তিবাসীরা গুরুতর পাপ করেছিল।
10; তারা তাদের পালনকর্তার রসূলকে অমান্য করেছিল। ফলে তিনি তাদেরকে কঠোরহস্তে পাকড়াও করলেন।
11; যখন জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল, তখন আমি তোমাদেরকে চলন্ত নৌযানে আরোহণ করিয়েছিলাম।
12; যাতে এ ঘটনা তোমাদের জন্যে স্মৃতির বিষয় এবং কান এটাকে উপদেশ গ্রহণের উপযোগী রূপে গ্রহণ করে।
13; যখন শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে-একটি মাত্র ফুৎকার
14; এবং পৃথিবী ও পর্বতমালা উত্তোলিত হবে ও চুর্ণ-বিচুর্ণ করে দেয়া হবে,
15; সেদিন কেয়ামত সংঘটিত হবে।
16; সেদিন আকাশ বিদীর্ণ হবে ও বিক্ষিপ্ত হবে।
17; এবং ফেরেশতাগণ আকাশের প্রান্তদেশে থাকবে ও আট জন ফেরেশতা আপনার পালনকর্তার আরশকে তাদের উর্ধ্বে বহন করবে।
18; সেদিন তোমাদেরকে উপস্থিত করা হবে। তোমাদের কোন কিছু গোপন থাকবে না।
19; অতঃপর যার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে, সে বলবেঃ নাও, তোমরাও আমলনামা পড়ে দেখ।
20; আমি জানতাম যে, আমাকে হিসাবের সম্মুখীন হতে হবে।
21; অতঃপর সে সুখী জীবন-যাপন করবে,
22; সুউচ্চ জান্নাতে।
23; তার ফলসমূহ অবনমিত থাকবে।
24; বিগত দিনে তোমরা যা প্রেরণ করেছিলে, তার প্রতিদানে তোমরা খাও এবং পান কর তৃপ্তি সহকারে।
25; যার আমলনামা তার বাম হাতে দেয়া হবে, সে বলবেঃ হায় আমায় যদি আমার আমল নামা না দেয়া হতো।
26; আমি যদি না জানতাম আমার হিসাব!
27; হায়, আমার মৃত্যুই যদি শেষ হত।
28; আমার ধন-সম্পদ আমার কোন উপকারে আসল না।
29; আমার ক্ষমতাও বরবাদ হয়ে গেল।
30; ফেরেশতাদেরকে বলা হবেঃ ধর একে গলায় বেড়ি পড়িয়ে দাও,
31; অতঃপর নিক্ষেপ কর জাহান্নামে।
32; অতঃপর তাকে শৃঙ্খলিত কর সত্তর গজ দীর্ঘ এক শিকলে।
33; নিশ্চয় সে মহান আল্লাহতে বিশ্বাসী ছিল না।
34; এবং মিসকীনকে আহার্য দিতে উৎসাহিত করত না।
35; অতএব, আজকের দিন এখানে তার কোন সুহূদ নাই।
36; এবং কোন খাদ্য নাই, ক্ষত-নিঃসৃত পুঁজ ব্যতীত।
37; গোনাহগার ব্যতীত কেউ এটা খাবে না।
38; তোমরা যা দেখ, আমি তার শপথ করছি।
39; এবং যা তোমরা দেখ না, তার-
40; নিশ্চয়ই এই কোরআন একজন সম্মানিত রসূলের আনীত।
41; এবং এটা কোন কবির কালাম নয়; তোমরা কমই বিশ্বাস কর।
42; এবং এটা কোন অতীন্দ্রিয়বাদীর কথা নয়; তোমরা কমই অনুধাবন কর।
43; এটা বিশ্বপালনকর্তার কাছ থেকে অবতীর্ণ।
44; সে যদি আমার নামে কোন কথা রচনা করত,
45; তবে আমি তার দক্ষিণ হস্ত ধরে ফেলতাম,
46; অতঃপর কেটে দিতাম তার গ্রীবা।
47; তোমাদের কেউ তাকে রক্ষা করতে পারতে না।
48; এটা খোদাভীরুদের জন্যে অবশ্যই একটি উপদেশ।
49; আমি জানি যে, তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ মিথ্যারোপ করবে।
50; নিশ্চয় এটা কাফেরদের জন্যে অনুতাপের কারণ।
51; নিশ্চয় এটা নিশ্চিত সত্য।
52; অতএব, আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামের পবিত্রতা বর্ননা করুন।

Chapter 70 (Sura 70)
1; একব্যক্তি চাইল, সেই আযাব সংঘটিত হোক যা অবধারিত-
2; কাফেরদের জন্যে, যার প্রতিরোধকারী কেউ নেই।
3; তা আসবে আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে, যিনি সমুন্নত মর্তবার অধিকারী।
4; ফেরেশতাগণ এবং রূহ আল্লাহ তা’আলার দিকে উর্ধ্বগামী হয় এমন একদিনে, যার পরিমাণ পঞ্চাশ হাজার বছর।
5; অতএব, আপনি উত্তম সবর করুন।
6; তারা এই আযাবকে সুদূরপরাহত মনে করে,
7; আর আমি একে আসন্ন দেখছি।
8; সেদিন আকাশ হবে গলিত তামার মত।
9; এবং পর্বতসমূহ হবে রঙ্গীন পশমের মত,
10; বন্ধু বন্ধুর খবর নিবে না।
11; যদিও একে অপরকে দেখতে পাবে। সেদিন গোনাহগার ব্যক্তি পনস্বরূপ দিতে চাইবে তার সন্তান-সন্ততিকে,
12; তার স্ত্রীকে, তার ভ্রাতাকে,
13; তার গোষ্ঠীকে, যারা তাকে আশ্রয় দিত।
14; এবং পৃথিবীর সবকিছুকে, অতঃপর নিজেকে রক্ষা করতে চাইবে।
15; কখনই নয়। নিশ্চয় এটা লেলিহান অগ্নি।
16; যা চামড়া তুলে দিবে।
17; সে সেই ব্যক্তিকে ডাকবে যে সত্যের প্রতি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করেছিল ও বিমুখ হয়েছিল।
18; সম্পদ পুঞ্জীভূত করেছিল, অতঃপর আগলিয়ে রেখেছিল।
19; মানুষ তো সৃজিত হয়েছে ভীরুরূপে।
20; যখন তাকে অনিষ্ট স্পর্শ করে, তখন সে হা-হুতাশ করে।
21; আর যখন কল্যাণপ্রাপ্ত হয়, তখন কৃপণ হয়ে যায়।
22; তবে তারা স্বতন্ত্র, যারা নামায আদায় কারী।
23; যারা তাদের নামাযে সার্বক্ষণিক কায়েম থাকে।
24; এবং যাদের ধন-সম্পদে নির্ধারিত হক আছে
25; যাঞ্ছাকারী ও বঞ্চিতের
26; এবং যারা প্রতিফল দিবসকে সত্য বলে বিশ্বাস করে।
27; এবং যারা তাদের পালনকর্তার শাস্তির সম্পর্কে ভীত-কম্পিত।
28; নিশ্চয় তাদের পালনকর্তার শাস্তি থেকে নিঃশঙ্কা থাকা যায় না।
29; এবং যারা তাদের যৌন-অঙ্গকে সংযত রাখে
30; কিন্তু তাদের স্ত্রী অথবা মালিকানাভূক্ত দাসীদের বেলায় তিরস্কৃত হবে না।
31; অতএব, যারা এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করে, তারাই সীমালংঘনকারী।
32; এবং যারা তাদের আমানত ও অঙ্গীকার রক্ষা করে
33; এবং যারা তাদের সাক্ষ্যদানে সরল-নিষ্ঠাবান
34; এবং যারা তাদের নামাযে যত্নবান,
35; তারাই জান্নাতে সম্মানিত হবে।
36; অতএব, কাফেরদের কি হল যে, তারা আপনার দিকে উর্ধ্বশ্বাসে ছুটে আসছে।
37; ডান ও বামদিক থেকে দলে দলে।
38; তাদের প্রত্যেকেই কি আশা করে যে, তাকে নেয়ামতের জান্নাতে দাখিল করা হবে?
39; কখনই নয়, আমি তাদেরকে এমন বস্তু দ্বারা সৃষ্টি করেছি, যা তারা জানে।
40; আমি শপথ করছি উদয়াচল ও অস্তাচলসমূহের পালনকর্তার, নিশ্চয়ই আমি সক্ষম!
41; তাদের পরিবর্তে উৎকৃষ্টতর মানুষ সৃষ্টি করতে এবং এটা আমার সাধ্যের অতীত নয়।
42; অতএব, আপনি তাদেরকে ছেড়ে দিন, তারা বাকবিতন্ডা ও ক্রীড়া-কৌতুক করুক সেই দিবসের সম্মুখীন হওয়া পর্যন্ত, যে দিবসের ওয়াদা তাদের সাথে করা হচ্ছে।
43; সে দিন তারা কবর থেকে দ্রুতবেগে বের হবে, যেন তারা কোন এক লক্ষ্যস্থলের দিকে ছুটে যাচ্ছে।
44; তাদের দৃষ্টি থাকবে অবনমিত; তারা হবে হীনতাগ্রস্ত। এটাই সেইদিন, যার ওয়াদা তাদেরকে দেয়া হত।

Chapter 71 (Sura 71)
1; আমি নূহকে প্রেরণ করেছিলাম তাঁর সম্প্রদায়ের প্রতি একথা বলেঃ তুমি তোমার সম্প্রদায়কে সতর্ক কর, তাদের প্রতি মর্মন্তদ শাস্তি আসার আগে।
2; সে বলল, হে আমার সম্প্রদায়! আমি তোমাদের জন্যে স্পষ্ট সতর্ককারী।
3; এ বিষয়ে যে, তোমরা আল্লাহ তা’আলার এবাদত কর, তাঁকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
4; আল্লাহ তা’আলা তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করবেন এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবকাশ দিবেন। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলার নির্দিষ্টকাল যখন হবে, তখন অবকাশ দেয়া হবে না, যদি তোমরা তা জানতে!
5; সে বললঃ হে আমার পালনকর্তা! আমি আমার সম্প্রদায়কে দিবারাত্রি দাওয়াত দিয়েছি;
6; কিন্তু আমার দাওয়াত তাদের পলায়নকেই বৃদ্ধি করেছে।
7; আমি যতবারই তাদেরকে দাওয়াত দিয়েছি, যাতে আপনি তাদেরকে ক্ষমা করেন, ততবারই তারা কানে অঙ্গুলি দিয়েছে, মুখমন্ডল বস্ত্রাবৃত করেছে, জেদ করেছে এবং খুব ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করেছে।
8; অতঃপর আমি তাদেরকে প্রকাশ্যে দাওয়াত দিয়েছি,
9; অতঃপর আমি ঘোষণা সহকারে প্রচার করেছি এবং গোপনে চুপিসারে বলেছি।
10; অতঃপর বলেছিঃ তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল।
11; তিনি তোমাদের উপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দিবেন,
12; তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দিবেন, তোমাদের জন্যে উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্যে নদীনালা প্রবাহিত করবেন।
13; তোমাদের কি হল যে, তোমরা আল্লাহ তা’আলার শ্রেষ্টত্ব আশা করছ না।
14; অথচ তিনি তোমাদেরকে বিভিন্ন রকমে সৃষ্টি করেছেন।
15; তোমরা কি লক্ষ্য কর না যে, আল্লাহ কিভাবে সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন।
16; এবং সেখানে চন্দ্রকে রেখেছেন আলোরূপে এবং সূর্যকে রেখেছেন প্রদীপরূপে।
17; আল্লাহ তা’আলা তোমাদেরকে মৃত্তিকা থেকে উদগত করেছেন।
18; অতঃপর তাতে ফিরিয়ে নিবেন এবং আবার পুনরুত্থিত করবেন।
19; আল্লাহ তা’আলা তোমাদের জন্যে ভূমিকে করেছেন বিছানা।
20; যাতে তোমরা চলাফেরা কর প্রশস্ত পথে।
21; নূহ বললঃ হে আমার পালনকর্তা, আমার সম্প্রদায় আমাকে অমান্য করেছে আর অনুসরণ করছে এমন লোককে, যার ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কেবল তার ক্ষতিই বৃদ্ধি করছে।
22; আর তারা ভয়ানক চক্রান্ত করছে।
23; তারা বলছেঃ তোমরা তোমাদের উপাস্যদেরকে ত্যাগ করো না এবং ত্যাগ করো না ওয়াদ, সূয়া, ইয়াগুছ, ইয়াউক ও নসরকে।
24; অথচ তারা অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে। অতএব আপনি জালেমদের পথভ্রষ্টতাই বাড়িয়ে দিন।
25; তাদের গোনাহসমূহের দরুন তাদেরকে নিমজ্জিত করা হয়েছে, অতঃপর দাখিল করা হয়েছে জাহান্নামে। অতঃপর তারা আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত কাউকে সাহায্যকারী পায়নি।
26; নূহ আরও বললঃ হে আমার পালনকর্তা, আপনি পৃথিবীতে কোন কাফের গৃহবাসীকে রেহাই দিবেন না।
27; যদি আপনি তাদেরকে রেহাই দেন, তবে তারা আপনার বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করবে এবং জন্ম দিতে থাকবে কেবল পাপাচারী, কাফের।
28; হে আমার পালনকর্তা! আপনি আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে, যারা মুমিন হয়ে আমার গৃহে প্রবেশ করে-তাদেরকে এবং মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে ক্ষমা করুন এবং যালেমদের কেবল ধ্বংসই বৃদ্ধি করুন।

Chapter 72 (Sura 72)
1; বলুনঃ আমার প্রতি ওহী নাযিল করা হয়েছে যে, জিনদের একটি দল কোরআন শ্রবণ করেছে, অতঃপর তারা বলেছেঃ আমরা বিস্ময়কর কোরআন শ্রবণ করেছি;
2; যা সৎপথ প্রদর্শন করে। ফলে আমরা তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমরা কখনও আমাদের পালনকর্তার সাথে কাউকে শরীক করব না।
3; এবং আরও বিশ্বাস করি যে, আমাদের পালনকর্তার মহান মর্যাদা সবার উর্ধ্বে। তিনি কোন পত্নী গ্রহণ করেননি এবং তাঁর কোন সন্তান নেই।
4; আমাদের মধ্যে নির্বোধেরা আল্লাহ তা’আলা সম্পর্কে বাড়াবাড়ির কথাবার্তা বলত।
5; অথচ আমরা মনে করতাম, মানুষ ও জিন কখনও আল্লাহ তা’আলা সম্পর্কে মিথ্যা বলতে পারে না।
6; অনেক মানুষ অনেক জিনের আশ্রয় নিত, ফলে তারা জিনদের আত্নম্ভরিতা বাড়িয়ে দিত।
7; তারা ধারণা করত, যেমন তোমরা মানবেরা ধারণা কর যে, মৃত্যুর পর আল্লাহ তা’আলা কখনও কাউকে পুনরুত্থিত করবেন না।
8; আমরা আকাশ পর্যবেক্ষণ করছি, অতঃপর দেখতে পেয়েছি যে, কঠোর প্রহরী ও উল্কাপিন্ড দ্বারা আকাশ পরিপূর্ণ।
9; আমরা আকাশের বিভিন্ন ঘাঁটিতে সংবাদ শ্রবণার্থে বসতাম। এখন কেউ সংবাদ শুনতে চাইলে সে জলন্ত উল্কাপিন্ড ওঁৎ পেতে থাকতে দেখে।
10; আমরা জানি না পৃথিবীবাসীদের অমঙ্গল সাধন করা অভীষ্ট, না তাদের পালনকর্তা তাদের মঙ্গল সাধন করার ইচ্ছা রাখেন।
11; আমাদের কেউ কেউ সৎকর্মপরায়ণ এবং কেউ কেউ এরূপ নয়। আমরা ছিলাম বিভিন্ন পথে বিভক্ত।
12; আমরা বুঝতে পেরেছি যে, আমরা পৃথিবীতে আল্লাহ তা’আলাকে পরাস্ত করতে পারব না এবং পলায়ন করেও তাকে অপারক করত পরব না।
13; আমরা যখন সুপথের নির্দেশ শুনলাম, তখন তাতে বিশ্বাস স্থাপন করলাম। অতএব, যে তার পালনকর্তার প্রতি বিশ্বাস করে, সে লোকসান ও জোর-জবরের আশংকা করে না।
14; আমাদের কিছুসংখ্যক আজ্ঞাবহ এবং কিছুসংখ্যক অন্যায়কারী। যারা আজ্ঞাবহ হয়, তারা সৎপথ বেছে নিয়েছে।
15; আর যারা অন্যায়কারী, তারা তো জাহান্নামের ইন্ধন।
16; আর এই প্রত্যাদেশ করা হয়েছে যে, তারা যদি সত্যপথে কায়েম থাকত, তবে আমি তাদেরকে প্রচুর পানি বর্ষণে সিক্ত করতাম।
17; যাতে এ ব্যাপারে তাদেরকে পরীক্ষা করি। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তিনি তাকে উদীয়মান আযাবে পরিচালিত করবেন।
18; এবং এই ওহীও করা হয়েছে যে, মসজিদসমূহ আল্লাহ তা’আলাকে স্মরণ করার জন্য। অতএব, তোমরা আল্লাহ তা’আলার সাথে কাউকে ডেকো না।
19; আর যখন আল্লাহ তা’আলার বান্দা তাঁকে ডাকার জন্যে দন্ডায়মান হল, তখন অনেক জিন তার কাছে ভিড় জমাল।
20; বলুনঃ আমি তো আমার পালনকর্তাকেই ডাকি এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করি না।
21; বলুনঃ আমি তোমাদের ক্ষতি সাধন করার ও সুপথে আনয়ন করার মালিক নই।
22; বলুনঃ আল্লাহ তা’আলার কবল থেকে আমাকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না এবং তিনি ব্যতীত আমি কোন আশ্রয়স্থল পাব না।
23; কিন্তু আল্লাহ তা’আলার বাণী পৌছানো ও তাঁর পয়গাম প্রচার করাই আমার কাজ। যে আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে অমান্য করে, তার জন্যে রয়েছে জাহান্নামের অগ্নি। তথায় তারা চিরকাল থাকবে।
24; এমনকি যখন তারা প্রতিশ্রুত শাস্তি দেখতে পাবে, তখন তারা জানতে পারবে, কার সাহায্যকারী দূর্বল এবং কার সংখ্যা কম।
25; বলুনঃ আমি জানি না তোমাদের প্রতিশ্রুত বিষয় আসন্ন না আমার পালনকর্তা এর জন্যে কোন মেয়াদ স্থির করে রেখেছেন।
26; তিনি অদৃশ্যের জ্ঞানী। পরন্ত তিনি অদৃশ্য বিষয় কারও কাছে প্রকাশ করেন না।
27; তাঁর মনোনীত রসূল ব্যতীত। তখন তিনি তার অগ্রে ও পশ্চাতে প্রহরী নিযুক্ত করেন
28; যাতে আল্লাহ তা’আলা জেনে নেন যে, রসূলগণ তাঁদের পালনকর্তার পয়গাম পৌছিয়েছেন কি না। রসূলগণের কাছে যা আছে, তা তাঁর জ্ঞান-গোচর। তিনি সবকিছুর সংখ্যার হিসাব রাখেন।

Chapter 73 (Sura 73)
1; হে বস্ত্রাবৃত!
2; রাত্রিতে দন্ডায়মান হোন কিছু অংশ বাদ দিয়ে;
3; অর্ধরাত্রি অথবা তদপেক্ষা কিছু কম
4; অথবা তদপেক্ষা বেশী এবং কোরআন আবৃত্তি করুন সুবিন্যস্ত ভাবে ও স্পষ্টভাবে।
5; আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি গুরুত্বপূর্ণ বাণী।
6; নিশ্চয় এবাদতের জন্যে রাত্রিতে উঠা প্রবৃত্তি দলনে সহায়ক এবং স্পষ্ট উচ্চারণের অনুকূল।
7; নিশ্চয় দিবাভাগে রয়েছে আপনার দীর্ঘ কর্মব্যস্ততা।
8; আপনি আপনার পালনকর্তার নাম স্মরণ করুন এবং একাগ্রচিত্তে তাতে মগ্ন হোন।
9; তিনি পূর্ব ও পশ্চিমের অধিকর্তা। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। অতএব, তাঁকেই গ্রহণ করুন কর্মবিধায়করূপে।
10; কাফেররা যা বলে, তজ্জন্যে আপনি সবর করুন এবং সুন্দরভাবে তাদেরকে পরিহার করে চলুন।
11; বিত্ত-বৈভবের অধিকারী মিথ্যারোপকারীদেরকে আমার হাতে ছেড়ে দিন এবং তাদেরকে কিছু অবকাশ দিন।
12; নিশ্চয় আমার কাছে আছে শিকল ও অগ্নিকুন্ড।
13; গলগ্রহ হয়ে যায় এমন খাদ্য এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
14; যেদিন পৃথিবী পর্বতমালা প্রকম্পিত হবে এবং পর্বতসমূহ হয়ে যাবে বহমান বালুকাস্তুপ।
15; আমি তোমাদের কাছে একজন রসূলকে তোমাদের জন্যে সাক্ষী করে প্রেরণ করেছি, যেমন প্রেরণ করেছিলাম ফেরাউনের কাছে একজন রসূল।
16; অতঃপর ফেরাউন সেই রসূলকে অমান্য করল, ফলে আমি তাকে কঠিন শাস্তি দিয়েছি।
17; অতএব, তোমরা কিরূপে আত্নরক্ষা করবে যদি তোমরা সেদিনকে অস্বীকার কর, যেদিন বালককে করে দিব বৃদ্ধ?
18; সেদিন আকাশ বিদীর্ণ হবে। তার প্রতিশ্রুতি অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে।
19; এটা উপদেশ। অতএব, যার ইচ্ছা, সে তার পালনকর্তার দিকে পথ অবলম্বন করুক।
20; আপনার পালনকর্তা জানেন, আপনি এবাদতের জন্যে দন্ডায়মান হন রাত্রির প্রায় দু’তৃতীয়াংশ, অর্ধাংশ ও তৃতীয়াংশ এবং আপনার সঙ্গীদের একটি দলও দন্ডায়মান হয়। আল্লাহ দিবা ও রাত্রি পরিমাপ করেন। তিনি জানেন, তোমরা এর পূর্ণ হিসাব রাখতে পার না। অতএব তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমা পরায়ন হয়েছেন। কাজেই কোরআনের যতটুকু তোমাদের জন্যে সহজ, ততটুকু আবৃত্তি কর। তিনি জানেন তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হবে, কেউ কেউ আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধানে দেশে-বিদেশে যাবে এবং কেউ কেউ আল্লাহর পথে জেহাদে লিপ্ত হবে। কাজেই কোরআনের যতটুকু তোমাদের জন্যে সহজ ততটুকু আবৃত্তি কর। তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ দাও। তোমরা নিজেদের জন্যে যা কিছু অগ্রে পাঠাবে, তা আল্লাহর কাছে উত্তম আকারে এবং পুরস্কার হিসেবে বর্ধিতরূপে পাবে। তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।

Chapter 74 (Sura 74)
1; হে চাদরাবৃত!
2; উঠুন, সতর্ক করুন,
3; আপন পালনকর্তার মাহাত্ম্য ঘোষনা করুন,
4; আপন পোশাক পবিত্র করুন
5; এবং অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকুন।
6; অধিক প্রতিদানের আশায় অন্যকে কিছু দিবেন না।
7; এবং আপনার পালনকর্তার উদ্দেশে সবর করুন।
8; যেদিন শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে;
9; সেদিন হবে কঠিন দিন,
10; কাফেরদের জন্যে এটা সহজ নয়।
11; যাকে আমি অনন্য করে সৃষ্টি করেছি, তাকে আমার হাতে ছেড়ে দিন।
12; আমি তাকে বিপুল ধন-সম্পদ দিয়েছি।
13; এবং সদা সংগী পুত্রবর্গ দিয়েছি,
14; এবং তাকে খুব সচ্ছলতা দিয়েছি।
15; এরপরও সে আশা করে যে, আমি তাকে আরও বেশী দেই।
16; কখনই নয়! সে আমার নিদর্শনসমূহের বিরুদ্ধাচরণকারী।
17; আমি সত্ত্বরই তাকে শাস্তির পাহাড়ে আরোহণ করাব।
18; সে চিন্তা করেছে এবং মনঃস্থির করেছে,
19; ধ্বংস হোক সে, কিরূপে সে মনঃস্থির করেছে!
20; আবার ধ্বংস হোক সে, কিরূপে সে মনঃস্থির করেছে!
21; সে আবার দৃষ্টিপাত করেছে,
22; অতঃপর সে ভ্রূকুঞ্চিত করেছে ও মুখ বিকৃত করেছে,
23; অতঃপর পৃষ্ঠপ্রদশন করেছে ও অহংকার করেছে।
24; এরপর বলেছেঃ এতো লোক পরস্পরায় প্রাপ্ত জাদু বৈ নয়,
25; এতো মানুষের উক্তি বৈ নয়।
26; আমি তাকে দাখিল করব অগ্নিতে।
27; আপনি কি বুঝলেন অগ্নি কি?
28; এটা অক্ষত রাখবে না এবং ছাড়বেও না।
29; মানুষকে দগ্ধ করবে।
30; এর উপর নিয়োজিত আছে উনিশ (ফেরেশতা)।
31; আমি জাহান্নামের তত্ত্বাবধায়ক ফেরেশতাই রেখেছি। আমি কাফেরদেরকে পরীক্ষা করার জন্যেই তার এই সংখ্যা করেছি-যাতে কিতাবীরা দৃঢ়বিশ্বাসী হয়, মুমিনদের ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং কিতাবীরা ও মুমিনগণ সন্দেহ পোষণ না করে এবং যাতে যাদের অন্তরে রোগ আছে, তারা এবং কাফেররা বলে যে, আল্লাহ এর দ্বারা কি বোঝাতে চেয়েছেন। এমনিভাবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা সৎপথে চালান। আপনার পালনকর্তার বাহিনী সম্পর্কে একমাত্র তিনিই জানেন এটা তো মানুষের জন্যে উপদেশ বৈ নয়।
32; কখনই নয়। চন্দ্রের শপথ,
33; শপথ রাত্রির যখন তার অবসান হয়,
34; শপথ প্রভাতকালের যখন তা আলোকোদ্ভাসিত হয়,
35; নিশ্চয় জাহান্নাম গুরুতর বিপদসমূহের অন্যতম,
36; মানুষের জন্যে সতর্ককারী।
37; তোমাদের মধ্যে যে সামনে অগ্রসর হয় অথবা পশ্চাতে থাকে।
38; প্রত্যেক ব্যক্তি তার কৃতকর্মের জন্য দায়ী;
39; কিন্তু ডানদিকস্থরা,
40; তারা থাকবে জান্নাতে এবং পরস্পরে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
41; অপরাধীদের সম্পর্কে
42; বলবেঃ তোমাদেরকে কিসে জাহান্নামে নীত করেছে?
43; তারা বলবেঃ আমরা নামায পড়তাম না,
44; অভাবগ্রস্তকে আহার্য্য দিতাম না,
45; আমরা সমালোচকদের সাথে সমালোচনা করতাম।
46; এবং আমরা প্রতিফল দিবসকে অস্বীকার করতাম।
47; আমাদের মৃত্যু পর্যন্ত।
48; অতএব, সুপারিশকারীদের সুপারিশ তাদের কোন উপকারে আসবে না।
49; তাদের কি হল যে, তারা উপদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়?
50; যেন তারা ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত গর্দভ।
51; হট্টগোলের কারণে পলায়নপর।
52; বরং তাদের প্রত্যেকেই চায় তাদের প্রত্যেককে একটি উম্মুক্ত গ্রন্থ দেয়া হোক।
53; কখনও না, বরং তারা পরকালকে ভয় করে না।
54; কখনও না, এটা তো উপদেশ মাত্র।
55; অতএব, যার ইচ্ছা, সে একে স্মরণ করুক।
56; তারা স্মরণ করবে না, কিন্তু যদি আল্লাহ চান। তিনিই ভয়ের যোগ্য এবং ক্ষমার অধিকারী।

Chapter 75 (Sura 75)
1; আমি শপথ করি কেয়ামত দিবসের,
2; আরও শপথ করি সেই মনের, যে নিজেকে ধিক্কার দেয়-
3; মানুষ কি মনে করে যে আমি তার অস্থিসমূহ একত্রিত করব না?
4; পরন্ত আমি তার অংগুলিগুলো পর্যন্ত সঠিকভাবে সন্নিবেশিত করতে সক্ষম।
5; বরং মানুষ তার ভবিষ্যত জীবনেও ধৃষ্টতা করতে চায়
6; সে প্রশ্ন করে-কেয়ামত দিবস কবে?
7; যখন দৃষ্টি চমকে যাবে,
8; চন্দ্র জ্যোতিহীন হয়ে যাবে।
9; এবং সূর্য ও চন্দ্রকে একত্রিত করা হবে-
10; সে দিন মানুষ বলবেঃ পলায়নের জায়গা কোথায় ?
11; না কোথাও আশ্রয়স্থল নেই।
12; আপনার পালনকর্তার কাছেই সেদিন ঠাঁই হবে।
13; সেদিন মানুষকে অবহিত করা হবে সে যা সামনে প্রেরণ করেছে ও পশ্চাতে ছেড়ে দিয়েছে।
14; বরং মানুষ নিজেই তার নিজের সম্পর্কে চক্ষুমান।
15; যদিও সে তার অজুহাত পেশ করতে চাইবে।
16; তাড়াতাড়ি শিখে নেয়ার জন্যে আপনি দ্রুত ওহী আবৃত্তি করবেন না।
17; এর সংরক্ষণ ও পাঠ আমারই দায়িত্ব।
18; অতঃপর আমি যখন তা পাঠ করি, তখন আপনি সেই পাঠের অনুসরণ করুন।
19; এরপর বিশদ বর্ণনা আমারই দায়িত্ব।
20; কখনও না, বরং তোমরা পার্থিব জীবনকে ভালবাস
21; এবং পরকালকে উপেক্ষা কর।
22; সেদিন অনেক মুখমন্ডল উজ্জ্বল হবে।
23; তারা তার পালনকর্তার দিকে তাকিয়ে থাকবে।
24; আর অনেক মুখমন্ডল সেদিন উদাস হয়ে পড়বে।
25; তারা ধারণা করবে যে, তাদের সাথে কোমর-ভাঙ্গা আচরণ করা হবে।
26; কখনও না, যখন প্রাণ কন্ঠাগত হবে।
27; এবং বলা হবে, কে ঝাড়বে
28; এবং সে মনে করবে যে, বিদায়ের ক্ষণ এসে গেছে।
29; এবং গোছা গোছার সাথে জড়িত হয়ে যাবে।
30; সেদিন, আপনার পালনকর্তার নিকট সবকিছু নীত হবে।
31; সে বিশ্বাস করেনি এবং নামায পড়েনি;
32; পরন্ত মিথ্যারোপ করেছে ও পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছে।
33; অতঃপর সে দম্ভভরে পরিবার-পরিজনের নিকট ফিরে গিয়েছে।
34; তোমার দুর্ভোগের উপর দুর্ভোগ।
35; অতঃপর, তোমার দুর্ভোগের উপর দূর্ভোগ।
36; মানুষ কি মনে করে যে, তাকে এমনি ছেড়ে দেয়া হবে?
37; সে কি স্খলিত বীর্য ছিল না?
38; অতঃপর সে ছিল রক্তপিন্ড, অতঃপর আল্লাহ তাকে সৃষ্টি করেছেন এবং সুবিন্যস্ত করেছেন।
39; অতঃপর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন যুগল নর ও নারী।
40; তবুও কি সেই আল্লাহ মৃতদেরকে জীবিত করতে সক্ষম নন?

Chapter 76 (Sura 76)
1; মানুষের উপর এমন কিছু সময় অতিবাহিত হয়েছে যখন সে উল্লেখযোগ্য কিছু ছিল না।
2; আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্র শুক্রবিন্দু থেকে, এভাবে যে, তাকে পরীক্ষা করব অতঃপর তাকে করে দিয়েছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন।
3; আমি তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছি। এখন সে হয় কৃতজ্ঞ হয়, না হয় অকৃতজ্ঞ হয়।
4; আমি অবিশ্বাসীদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছি শিকল, বেড়ি ও প্রজ্বলিত অগ্নি।
5; নিশ্চয়ই সৎকর্মশীলরা পান করবে কাফুর মিশ্রিত পানপাত্র।
6; এটা একটা ঝরণা, যা থেকে আল্লাহর বান্দাগণ পান করবে-তারা একে প্রবাহিত করবে।
7; তারা মান্নত পূর্ণ করে এবং সেদিনকে ভয় করে, যেদিনের অনিষ্ট হবে সুদূরপ্রসারী।
8; তারা আল্লাহর প্রেমে অভাবগ্রস্ত, এতীম ও বন্দীকে আহার্য দান করে।
9; তারা বলেঃ কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে আমরা তোমাদেরকে আহার্য দান করি এবং তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান ও কৃতজ্ঞতা কামনা করি না।
10; আমরা আমাদের পালনকর্তার তরফ থেকে এক ভীতিপ্রদ ভয়ংকর দিনের ভয় রাখি।
11; অতঃপর আল্লাহ তাদেরকে সেদিনের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবেন এবং তাদেরকে দিবেন সজীবতা ও আনন্দ।
12; এবং তাদের সবরের প্রতিদানে তাদেরকে দিবেন জান্নাত ও রেশমী পোশাক।
13; তারা সেখানে সিংহাসনে হেলান দিয়ে বসবে। সেখানে রৌদ্র ও শৈত্য অনুভব করবে না।
14; তার বৃক্ষছায়া তাদের উপর ঝুঁকে থাকবে এবং তার ফলসমূহ তাদের আয়ত্তাধীন রাখা হবে।
15; তাদেরকে পরিবেশন করা হবে রূপার পাত্রে এবং স্ফটিকের মত পানপাত্রে।
16; রূপালী স্ফটিক পাত্রে, পরিবেশনকারীরা তা পরিমাপ করে পূর্ণ করবে।
17; তাদেরকে সেখানে পান করানো হবে ‘যানজাবীল’ মিশ্রিত পানপাত্র।
18; এটা জান্নাতস্থিত ‘সালসাবীল’ নামক একটি ঝরণা।
19; তাদের কাছে ঘোরাফেরা করবে চির কিশোরগণ। আপনি তাদেরকে দেখে মনে করবেন যেন বিক্ষিপ্ত মনি-মুক্তা।
20; আপনি যখন সেখানে দেখবেন, তখন নেয়ামতরাজি ও বিশাল রাজ্য দেখতে পাবেন।
21; তাদের আবরণ হবে চিকন সবুজ রেশম ও মোটা সবুজ রেশম এবং তাদেরকে পরিধান করোনো হবে রৌপ্য নির্মিত কংকণ এবং তাদের পালনকর্তা তাদেরকে পান করাবেন ‘শরাবান-তহুরা’।
22; এটা তোমাদের প্রতিদান। তোমাদের প্রচেষ্টা স্বীকৃতি লাভ করেছে।
23; আমি আপনার প্রতি পর্যায়ক্রমে কোরআন নাযিল করেছি।
24; অতএব, আপনি আপনার পালনকর্তার আদেশের জন্যে ধৈর্য্য সহকারে অপেক্ষা করুন এবং ওদের মধ্যকার কোন পাপিষ্ঠ কাফেরের আনুগত্য করবেন না।
25; এবং সকাল-সন্ধ্যায় আপন পালনকর্তার নাম স্মরণ করুন।
26; রাত্রির কিছু অংশে তাঁর উদ্দেশে সিজদা করুন এবং রাত্রির দীর্ঘ সময় তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা করুন।
27; নিশ্চয় এরা পার্থিব জীবনকে ভালবাসে এবং এক কঠিন দিবসকে পশ্চাতে ফেলে রাখে।
28; আমি তাদেরকে সৃষ্টি করেছি এবং মজবুত করেছি তাদের গঠন। আমি যখন ইচ্ছা করব, তখন তাদের পরিবর্তে তাদের অনুরূপ লোক আনব।
29; এটা উপদেশ, অতএব যার ইচ্ছা হয় সে তার পালনকর্তার পথ অবলম্বন করুক।
30; আল্লাহর অভিপ্রায় ব্যতিরেকে তোমরা অন্য কোন অভিপ্রায় পোষণ করবে না। আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়।
31; তিনি যাকে ইচ্ছা তাঁর রহমতে দাখিল করেন। আর যালেমদের জন্যে তো প্রস্তুত রেখেছেন মর্মন্তুদ শাস্তি।

Chapter 77 (Sura 77)
1; কল্যাণের জন্যে প্রেরিত বায়ুর শপথ,
2; সজোরে প্রবাহিত ঝটিকার শপথ,
3; মেঘবিস্তৃতকারী বায়ুর শপথ
4; মেঘপুঞ্জ বিতরণকারী বায়ুর শপথ এবং
5; ওহী নিয়ে অবতরণকারী ফেরেশতাগণের শপথ-
6; ওযর-আপত্তির অবকাশ না রাখার জন্যে অথবা সতর্ক করার জন্যে।
7; নিশ্চয়ই তোমাদেরকে প্রদত্ত ওয়াদা বাস্তবায়িত হবে।
8; অতঃপর যখন নক্ষত্রসমুহ নির্বাপিত হবে,
9; যখন আকাশ ছিদ্রযুক্ত হবে,
10; যখন পর্বতমালাকে উড়িয়ে দেয়া হবে এবং
11; যখন রসূলগণের একত্রিত হওয়ার সময় নিরূপিত হবে,
12; এসব বিষয় কোন দিবসের জন্যে স্থগিত রাখা হয়েছে?
13; বিচার দিবসের জন্য।
14; আপনি জানেন বিচার দিবস কি?
15; সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
16; আমি কি পূর্ববর্তীদেরকে ধ্বংস করিনি?
17; অতঃপর তাদের পশ্চাতে প্রেরণ করব পরবর্তীদেরকে।
18; অপরাধীদের সাথে আমি এরূপই করে থাকি।
19; সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
20; আমি কি তোমাদেরকে তুচ্ছ পানি থেকে সৃষ্টি করিনি?
21; অতঃপর আমি তা রেখেছি এক সংরক্ষিত আধারে,
22; এক নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত,
23; অতঃপর আমি পরিমিত আকারে সৃষ্টি করেছি, আমি কত সক্ষম স্রষ্টা?
24; সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
25; আমি কি পৃথিবীকে সৃষ্টি করিনি ধারণকারিণীরূপে,
26; জীবিত ও মৃতদেরকে?
27; আমি তাতে স্থাপন করেছি মজবুত সুউচ্চ পর্বতমালা এবং পান করিয়েছি তোমাদেরকে তৃষ্ণা নিবারণকারী সুপেয় পানি।
28; সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
29; চল তোমরা তারই দিকে, যাকে তোমরা মিথ্যা বলতে।
30; চল তোমরা তিন কুন্ডলীবিশিষ্ট ছায়ার দিকে,
31; যে ছায়া সুনিবিড় নয় এবং অগ্নির উত্তাপ থেকে রক্ষা করে না।
32; এটা অট্টালিকা সদৃশ বৃহৎ স্ফুলিংগ নিক্ষেপ করবে।
33; যেন সে পীতবর্ণ উষ্ট্রশ্রেণী।
34; সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
35; এটা এমন দিন, যেদিন কেউ কথা বলবে না।
36; এবং কাউকে তওবা করার অনুমতি দেয়া হবে না।
37; সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
38; এটা বিচার দিবস, আমি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে একত্রিত করেছি।
39; অতএব, তোমাদের কোন অপকৌশল থাকলে তা প্রয়োগ কর আমার কাছে।
40; সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
41; নিশ্চয় খোদাভীরুরা থাকবে ছায়ায় এবং প্রস্রবণসমূহে-
42; এবং তাদের বাঞ্ছিত ফল-মূলের মধ্যে।
43; বলা হবেঃ তোমরা যা করতে তার বিনিময়ে তৃপ্তির সাথে পানাহার কর।
44; এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি।
45; সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
46; কাফেরগণ, তোমরা কিছুদিন খেয়ে নাও এবং ভোগ করে নাও। তোমরা তো অপরাধী।
47; সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
48; যখন তাদেরকে বলা হয়, নত হও, তখন তারা নত হয় না।
49; সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
50; এখন কোন কথায় তারা এরপর বিশ্বাস স্থাপন করবে?

Chapter 78 (Sura 78)
1; তারা পরস্পরে কি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে?
2; মহা সংবাদ সম্পর্কে,
3; যে সম্পর্কে তারা মতানৈক্য করে।
4; না, সত্ত্বরই তারা জানতে পারবে,
5; অতঃপর না, সত্বর তারা জানতে পারবে।
6; আমি কি করিনি ভূমিকে বিছানা
7; এবং পর্বতমালাকে পেরেক?
8; আমি তোমাদেরকে জোড়া জোড়া সৃষ্টি করেছি,
9; তোমাদের নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী,
10; রাত্রিকে করেছি আবরণ।
11; দিনকে করেছি জীবিকা অর্জনের সময়,
12; নির্মান করেছি তোমাদের মাথার উপর মজবুত সপ্ত-আকাশ।
13; এবং একটি উজ্জ্বল প্রদীপ সৃষ্টি করেছি।
14; আমি জলধর মেঘমালা থেকে প্রচুর বৃষ্টিপাত করি,
15; যাতে তদ্দ্বারা উৎপন্ন করি শস্য, উদ্ভিদ।
16; ও পাতাঘন উদ্যান।
17; নিশ্চয় বিচার দিবস নির্ধারিত রয়েছে।
18; যেদিন শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে, তখন তোমরা দলে দলে সমাগত হবে।
19; আকাশ বিদীর্ণ হয়ে; তাতে বহু দরজা সৃষ্টি হবে।
20; এবং পর্বতমালা চালিত হয়ে মরীচিকা হয়ে যাবে।
21; নিশ্চয় জাহান্নাম প্রতীক্ষায় থাকবে,
22; সীমালংঘনকারীদের আশ্রয়স্থলরূপে।
23; তারা তথায় শতাব্দীর পর শতাব্দী অবস্থান করবে।
24; তথায় তারা কোন শীতল এবং পানীয় আস্বাদন করবে না;
25; কিন্তু ফুটন্ত পানি ও পূঁজ পাবে।
26; পরিপূর্ণ প্রতিফল হিসেবে।
27; নিশ্চয় তারা হিসাব-নিকাশ আশা করত না।
28; এবং আমার আয়াতসমূহে পুরোপুরি মিথ্যারোপ করত।
29; আমি সবকিছুই লিপিবদ্ধ করে সংরক্ষিত করেছি।
30; অতএব, তোমরা আস্বাদন কর, আমি কেবল তোমাদের শাস্তিই বৃদ্ধি করব।
31; পরহেযগারদের জন্যে রয়েছে সাফল্য।
32; উদ্যান, আঙ্গুর,
33; সমবয়স্কা, পূর্ণযৌবনা তরুণী।
34; এবং পূর্ণ পানপাত্র।
35; তারা তথায় অসার ও মিথ্যা বাক্য শুনবে না।
36; এটা আপনার পালনকর্তার তরফ থেকে যথোচিত দান,
37; যিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুর পালনকর্তা, দয়াময়, কেউ তাঁর সাথে কথার অধিকারী হবে না।
38; যেদিন রূহ ও ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াবে। দয়াময় আল্লাহ যাকে অনুমতি দিবেন, সে ব্যতিত কেউ কথা বলতে পারবে না এবং সে সত্যকথা বলবে।
39; এই দিবস সত্য। অতঃপর যার ইচ্ছা, সে তার পালনকর্তার কাছে ঠিকানা তৈরী করুক।
40; আমি তোমাদেরকে আসন্ন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করলাম, যেদিন মানুষ প্রত্যেক্ষ করবে যা সে সামনে প্রেরণ করেছে এবং কাফের বলবেঃ হায়, আফসোস-আমি যদি মাটি হয়ে যেতাম।

Chapter 79 (Sura 79)
1; শপথ সেই ফেরেশতাগণের, যারা ডুব দিয়ে আত্মা উৎপাটন করে,
2; শপথ তাদের, যারা আত্মার বাঁধন খুলে দেয় মৃদুভাবে;
3; শপথ তাদের, যারা সন্তরণ করে দ্রুতগতিতে,
4; শপথ তাদের, যারা দ্রুতগতিতে অগ্রসর হয় এবং
5; শপথ তাদের, যারা সকল কর্মনির্বাহ করে, কেয়ামত অবশ্যই হবে।
6; যেদিন প্রকম্পিত করবে প্রকম্পিতকারী,
7; অতঃপর পশ্চাতে আসবে পশ্চাদগামী;
8; সেদিন অনেক হৃদয় ভীত-বিহবল হবে।
9; তাদের দৃষ্টি নত হবে।
10; তারা বলেঃ আমরা কি উলটো পায়ে প্রত্যাবর্তিত হবই-
11; গলিত অস্থি হয়ে যাওয়ার পরও?
12; তবে তো এ প্রত্যাবর্তন সর্বনাশা হবে!
13; অতএব, এটা তো কেবল এক মহা-নাদ,
14; তখনই তারা ময়দানে আবির্ভূত হবে।
15; মূসার বৃত্তান্ত আপনার কাছে পৌছেছে কি?
16; যখন তার পালনকর্তা তাকে পবিত্র তুয়া উপ্যকায় আহবান করেছিলেন,
17; ফেরাউনের কাছে যাও, নিশ্চয় সে সীমালংঘন করেছে।
18; অতঃপর বলঃ তোমার পবিত্র হওয়ার আগ্রহ আছে কি?
19; আমি তোমাকে তোমার পালনকর্তার দিকে পথ দেখাব, যাতে তুমি তাকে ভয় কর।
20; অতঃপর সে তাকে মহা-নিদর্শন দেখাল।
21; কিন্তু সে মিথ্যারোপ করল এবং অমান্য করল।
22; অতঃপর সে প্রতিকার চেষ্টায় প্রস্থান করল।
23; সে সকলকে সমবেত করল এবং সজোরে আহবান করল,
24; এবং বললঃ আমিই তোমাদের সেরা পালনকর্তা।
25; অতঃপর আল্লাহ তাকে পরকালের ও ইহকালের শাস্তি দিলেন।
26; যে ভয় করে তার জন্যে অবশ্যই এতে শিক্ষা রয়েছে।
27; তোমাদের সৃষ্টি অধিক কঠিন না আকাশের, যা তিনি নির্মাণ করেছেন?
28; তিনি একে উচ্চ করেছেন ও সুবিন্যস্ত করেছেন।
29; তিনি এর রাত্রিকে করেছেন অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং এর সূর্যোলোক প্রকাশ করেছেন।
30; পৃথিবীকে এর পরে বিস্তৃত করেছেন।
31; তিনি এর মধ্য থেকে এর পানি ও ঘাম নির্গত করেছেন,
32; পর্বতকে তিনি দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন,
33; তোমাদের ও তোমাদের চতুস্পদ জন্তুদের উপকারার্থে।
34; অতঃপর যখন মহাসংকট এসে যাবে।
35; অর্থাৎ যেদিন মানুষ তার কৃতকর্ম স্মরণ করবে
36; এবং দর্শকদের জন্যে জাহান্নাম প্রকাশ করা হবে,
37; তখন যে ব্যক্তি সীমালংঘন করেছে;
38; এবং পার্থিব জীবনকে অগ্রাধিকার দিয়েছে,
39; তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম।
40; পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে দন্ডায়মান হওয়াকে ভয় করেছে এবং খেয়াল-খুশী থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রেখেছে,
41; তার ঠিকানা হবে জান্নাত।
42; তারা আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, কেয়ামত কখন হবে?
43; এর বর্ণনার সাথে আপনার কি সম্পর্ক ?
44; এর চরম জ্ঞান আপনার পালনকর্তার কাছে।
45; যে একে ভয় করে, আপনি তো কেবল তাকেই সতর্ক করবেন।
46; যেদিন তারা একে দেখবে, সেদিন মনে হবে যেন তারা দুনিয়াতে মাত্র এক সন্ধ্যা অথবা এক সকাল অবস্থান করেছে।

Chapter 80 (Sura 80)
1; তিনি ভ্রূকুঞ্চিত করলেন এবং মুখ ফিরিয়ে নিলেন।
2; কারণ, তাঁর কাছে এক অন্ধ আগমন করল।
3; আপনি কি জানেন, সে হয়তো পরিশুদ্ধ হত,
4; অথবা উপদেশ গ্রহণ করতো এবং উপদেশ তার উপকার হত।
5; পরন্তু যে বেপরোয়া,
6; আপনি তার চিন্তায় মশগুল।
7; সে শুদ্ধ না হলে আপনার কোন দোষ নেই।
8; যে আপনার কাছে দৌড়ে আসলো
9; এমতাবস্থায় যে, সে ভয় করে,
10; আপনি তাকে অবজ্ঞা করলেন।
11; কখনও এরূপ করবেন না, এটা উপদেশবানী।
12; অতএব, যে ইচ্ছা করবে, সে একে গ্রহণ করবে।
13; এটা লিখিত আছে সম্মানিত,
14; উচ্চ পবিত্র পত্রসমূহে,
15; লিপিকারের হস্তে,
16; যারা মহৎ, পূত চরিত্র।
17; মানুষ ধ্বংস হোক, সে কত অকৃতজ্ঞ!
18; তিনি তাকে কি বস্তু থেকে সৃষ্টি করেছেন?
19; শুক্র থেকে তাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তাকে সুপরিমিত করেছেন।
20; অতঃপর তার পথ সহজ করেছেন,
21; অতঃপর তার মৃত্যু ঘটান ও কবরস্থ করেন তাকে।
22; এরপর যখন ইচ্ছা করবেন তখন তাকে পুনরুজ্জীবিত করবেন।
23; সে কখনও কৃতজ্ঞ হয়নি, তিনি তাকে যা আদেশ করেছেন, সে তা পূর্ণ করেনি।
24; মানুষ তার খাদ্যের প্রতি লক্ষ্য করুক,
25; আমি আশ্চর্য উপায়ে পানি বর্ষণ করেছি,
26; এরপর আমি ভূমিকে বিদীর্ণ করেছি,
27; অতঃপর তাতে উৎপন্ন করেছি শস্য,
28; আঙ্গুর, শাক-সব্জি,
29; যয়তুন, খর্জূর,
30; ঘন উদ্যান,
31; ফল এবং ঘাস
32; তোমাদেরও তোমাদের চতুস্পদ জন্তুদের উপাকারার্থে।
33; অতঃপর যেদিন কর্ণবিদারক নাদ আসবে,
34; সেদিন পলায়ন করবে মানুষ তার ভ্রাতার কাছ থেকে,
35; তার মাতা, তার পিতা,
36; তার পত্নী ও তার সন্তানদের কাছ থেকে।
37; সেদিন প্রত্যেকেরই নিজের এক চিন্তা থাকবে, যা তাকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখবে।
38; অনেক মুখমন্ডল সেদিন হবে উজ্জ্বল,
39; সহাস্য ও প্রফুল্ল।
40; এবং অনেক মুখমন্ডল সেদিন হবে ধুলি ধূসরিত।
41; তাদেরকে কালিমা আচ্ছন্ন করে রাখবে।
42; তারাই কাফের পাপিষ্ঠের দল।

Chapter 81 (Sura 81)
1; যখন সূর্য আলোহীন হয়ে যাবে,
2; যখন নক্ষত্র মলিন হয়ে যাবে,
3; যখন পর্বতমালা অপসারিত হবে,
4; যখন দশ মাসের গর্ভবতী উষ্ট্রীসমূহ উপেক্ষিত হবে;
5; যখন বন্য পশুরা একত্রিত হয়ে যাবে,
6; যখন সমুদ্রকে উত্তাল করে তোলা হবে,
7; যখন আত্মাসমূহকে যুগল করা হবে,
8; যখন জীবন্ত প্রোথিত কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে,
9; কি অপরাধে তাকে হত্য করা হল?
10; যখন আমলনামা খোলা হবে,
11; যখন আকাশের আবরণ অপসারিত হবে,
12; যখন জাহান্নামের অগ্নি প্রজ্বলিত করা হবে
13; এবং যখন জান্নাত সন্নিকটবর্তী হবে,
14; তখন প্রত্যেকেই জেনে নিবে সে কি উপস্থিত করেছে।
15; আমি শপথ করি যেসব নক্ষত্রগুলো পশ্চাতে সরে যায়।
16; চলমান হয় ও অদৃশ্য হয়,
17; শপথ নিশাবসান ও
18; প্রভাত আগমন কালের,
19; নিশ্চয় কোরআন সম্মানিত রসূলের আনীত বাণী,
20; যিনি শক্তিশালী, আরশের মালিকের নিকট মর্যাদাশালী,
21; সবার মান্যবর, সেখানকার বিশ্বাসভাজন।
22; এবং তোমাদের সাথী পাগল নন।
23; তিনি সেই ফেরেশতাকে প্রকাশ্য দিগন্তে দেখেছেন।
24; তিনি অদৃশ্য বিষয় বলতে কৃপনতা করেন না।
25; এটা বিতাড়িত শয়তানের উক্তি নয়।
26; অতএব, তোমরা কোথায় যাচ্ছ?
27; এটা তো কেবল বিশ্বাবাসীদের জন্যে উপদেশ,
28; তার জন্যে, যে তোমাদের মধ্যে সোজা চলতে চায়।
29; তোমরা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অভিপ্রায়ের বাইরে অন্য কিছুই ইচ্ছা করতে পার না।

Chapter 82 (Sura 82)
1; যখন আকাশ বিদীর্ণ হবে,
2; যখন নক্ষত্রসমূহ ঝরে পড়বে,
3; যখন সমুদ্রকে উত্তাল করে তোলা হবে,
4; এবং যখন কবরসমূহ উম্মোচিত হবে,
5; তখন প্রত্যেকে জেনে নিবে সে কি অগ্রে প্রেরণ করেছে এবং কি পশ্চাতে ছেড়ে এসেছে।
6; হে মানুষ, কিসে তোমাকে তোমার মহামহিম পালনকর্তা সম্পর্কে বিভ্রান্ত করল?
7; যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাকে সুবিন্যস্ত করেছেন এবং সুষম করেছেন।
8; যিনি তোমাকে তাঁর ইচ্ছামত আকৃতিতে গঠন করেছেন।
9; কখনও বিভ্রান্ত হয়ো না; বরং তোমরা দান-প্রতিদানকে মিথ্যা মনে কর।
10; অবশ্যই তোমাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত আছে।
11; সম্মানিত আমল লেখকবৃন্দ।
12; তারা জানে যা তোমরা কর।
13; সৎকর্মশীলগণ থাকবে জান্নাতে।
14; এবং দুষ্কর্মীরা থাকবে জাহান্নামে;
15; তারা বিচার দিবসে তথায় প্রবেশ করবে।
16; তারা সেখান থেকে পৃথক হবে না।
17; আপনি জানেন, বিচার দিবস কি?
18; অতঃপর আপনি জানেন, বিচার দিবস কি?
19; যেদিন কেউ কারও কোন উপকার করতে পারবে না এবং সেদিন সব কতৃêত্ব হবে আল্লাহর।

Chapter 83 (Sura 83)
1; যারা মাপে কম করে, তাদের জন্যে দুর্ভোগ,
2; যারা লোকের কাছ থেকে যখন মেপে নেয়, তখন পূর্ণ মাত্রায় নেয়
3; এবং যখন লোকদেরকে মেপে দেয় কিংবা ওজন করে দেয়, তখন কম করে দেয়।
4; তারা কি চিন্তা করে না যে, তারা পুনরুত্থিত হবে।
5; সেই মহাদিবসে,
6; যেদিন মানুষ দাঁড়াবে বিশ্ব পালনকর্তার সামনে।
7; এটা কিছুতেই উচিত নয়, নিশ্চয় পাপাচারীদের আমলনামা সিজ্জীনে আছে।
8; আপনি জানেন, সিজ্জীন কি?
9; এটা লিপিবদ্ধ খাতা।
10; সেদিন দুর্ভোগ মিথ্যারোপকারীদের,
11; যারা প্রতিফল দিবসকে মিথ্যারোপ করে।
12; প্রত্যেক সীমালংঘনকারী পাপিষ্ঠই কেবল একে মিথ্যারোপ করে।
13; তার কাছে আমার আয়াতসমূহ পাঠ করা হলে সে বলে, পুরাকালের উপকথা।
14; কখনও না, বরং তারা যা করে, তাই তাদের হৃদয় মরিচা ধরিয়ে দিয়েছে।
15; কখনও না, তারা সেদিন তাদের পালনকর্তার থেকে পর্দার অন্তরালে থাকবে।
16; অতঃপর তারা জাহান্নামে প্রবেশ করবে।
17; এরপর বলা হবে, একেই তো তোমরা মিথ্যারোপ করতে।
18; কখনও না, নিশ্চয় সৎলোকদের আমলনামা আছে ইল্লিয়্যীনে।
19; আপনি জানেন ইল্লিয়্যীন কি?
20; এটা লিপিবদ্ধ খাতা।
21; আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতাগণ একে প্রত্যক্ষ করে।
22; নিশ্চয় সৎলোকগণ থাকবে পরম আরামে,
23; সিংহাসনে বসে অবলোকন করবে।
24; আপনি তাদের মুখমন্ডলে স্বাচ্ছন্দ্যের সজীবতা দেখতে পাবেন।
25; তাদেরকে মোহর করা বিশুদ্ধ পানীয় পান করানো হবে।
26; তার মোহর হবে কস্তুরী। এ বিষয়ে প্রতিযোগীদের প্রতিযোগিতা করা উচিত।
27; তার মিশ্রণ হবে তসনীমের পানি।
28; এটা একটা ঝরণা, যার পানি পান করবে নৈকট্যশীলগণ।
29; যারা অপরাধী, তারা বিশ্বাসীদেরকে উপহাস করত।
30; এবং তারা যখন তাদের কাছ দিয়ে গমন করত তখন পরস্পরে চোখ টিপে ইশারা করত।
31; তারা যখন তাদের পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরত, তখনও হাসাহাসি করে ফিরত।
32; আর যখন তারা বিশ্বাসীদেরকে দেখত, তখন বলত, নিশ্চয় এরা বিভ্রান্ত।
33; অথচ তারা বিশ্বাসীদের তত্ত্বাবধায়করূপে প্রেরিত হয়নি।
34; আজ যারা বিশ্বাসী, তারা কাফেরদেরকে উপহাস করছে।
35; সিংহাসনে বসে, তাদেরকে অবলোকন করছে,
36; কাফেররা যা করত, তার প্রতিফল পেয়েছে তো?

Chapter 84 (Sura 84)
1; যখন আকাশ বিদীর্ণ হবে,
2; ও তার পালনকর্তার আদেশ পালন করবে এবং আকাশ এরই উপযুক্ত
3; এবং যখন পৃথিবীকে সম্প্রসারিত করা হবে।
4; এবং পৃথিবী তার গর্ভস্থিত সবকিছু বাইরে নিক্ষেপ করবে ও শুন্যগর্ভ হয়ে যাবে।
5; এবং তার পালনকর্তার আদেশ পালন করবে এবং পৃথিবী এরই উপযুক্ত।
6; হে মানুষ, তোমাকে তোমরা পালনকর্তা পর্যন্ত পৌছতে কষ্ট স্বীকার করতে হবে, অতঃপর তার সাক্ষাৎ ঘটবে।
7; যাকে তার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে
8; তার হিসাব-নিকাশ সহজে হয়ে যাবে
9; এবং সে তার পরিবার-পরিজনের কাছে হৃষ্টচিত্তে ফিরে যাবে
10; এবং যাকে তার আমলনামা পিঠের পশ্চাদ্দিক থেকে দেয়া, হবে,
11; সে মৃত্যুকে আহবান করবে,
12; এবং জাহান্নামে প্রবেশ করবে।
13; সে তার পরিবার-পরিজনের মধ্যে আনন্দিত ছিল।
14; সে মনে করত যে, সে কখনও ফিরে যাবে না।
15; কেন যাবে না, তার পালনকর্তা তো তাকে দেখতেন।
16; আমি শপথ করি সন্ধ্যাকালীন লাল আভার
17; এবং রাত্রির, এবং তাতে যার সমাবেশ ঘটে
18; এবং চন্দ্রের, যখন তা পূর্ণরূপ লাভ করে,
19; নিশ্চয় তোমরা এক সিঁড়ি থেকে আরেক সিঁড়িতে আরোহণ করবে।
20; অতএব, তাদের কি হল যে, তারা ঈমান আনে না?
21; যখন তাদের কাছে কোরআন পাঠ করা হয়, তখন সেজদা করে না।
22; বরং কাফেররা এর প্রতি মিথ্যারোপ করে।
23; তারা যা সংরক্ষণ করে, আল্লাহ তা জানেন।
24; অতএব, তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দিন।
25; কিন্তু যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্য রয়েছে অফুরন্ত পুরস্কার।

Chapter 85 (Sura 85)
1; শপথ গ্রহ-নক্ষত্র শোভিত আকাশের,
2; এবং প্রতিশ্রুত দিবসের,
3; এবং সেই দিবসের, যে উপস্থিত হয় ও যাতে উপস্থিত হয়
4; অভিশপ্ত হয়েছে গর্ত ওয়ালারা অর্থাৎ,
5; অনেক ইন্ধনের অগ্নিসংযোগকারীরা;
6; যখন তারা তার কিনারায় বসেছিল।
7; এবং তারা বিশ্বাসীদের সাথে যা করেছিল, তা নিরীক্ষণ করছিল।
8; তারা তাদেরকে শাস্তি দিয়েছিল শুধু এ কারণে যে, তারা প্রশংসিত, পরাক্রান্ত আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিল,
9; যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের ক্ষমতার মালিক, আল্লাহর সামনে রয়েছে সবকিছু।
10; যারা মুমিন পুরুষ ও নারীকে নিপীড়ন করেছে, অতঃপর তওবা করেনি, তাদের জন্যে আছে জাহান্নামের শাস্তি, আর আছে দহন যন্ত্রণা,
11; যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাদের জন্যে আছে জান্নাত, যার তলদেশে প্রবাহিত হয় নির্ঝরিণীসমূহ। এটাই মহাসাফল্য।
12; নিশ্চয় তোমার পালনকর্তার পাকড়াও অত্যন্ত কঠিন।
13; তিনিই প্রথমবার অস্তিত্ব দান করেন এবং পুনরায় জীবিত করেন।
14; তিনি ক্ষমাশীল, প্রেমময়;
15; মহান আরশের অধিকারী।
16; তিনি যা চান, তাই করেন।
17; আপনার কাছে সৈন্যবাহিনীর ইতিবৃত্ত পৌছেছে কি?
18; ফেরাউনের এবং সামুদের?
19; বরং যারা কাফের, তারা মিথ্যারোপে রত আছে।
20; আল্লাহ তাদেরকে চতুর্দিক থেকে পরিবেষ্টন করে রেখেছেন।
21; বরং এটা মহান কোরআন,
22; লওহে মাহফুযে লিপিবদ্ধ।

Chapter 86 (Sura 86)
1; শপথ আকাশের এবং রাত্রিতে আগমনকারীর।
2; আপনি জানেন, যে রাত্রিতে আসে সেটা কি?
3; সেটা এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।
4; প্রত্যেকের উপর একজন তত্ত্বাবধায়ক রয়েছে।
5; অতএব, মানুষের দেখা উচিত কি বস্তু থেকে সে সৃজিত হয়েছে।
6; সে সৃজিত হয়েছে সবেগে স্খলিত পানি থেকে।
7; এটা নির্গত হয় মেরুদন্ড ও বক্ষপাজরের মধ্য থেকে।
8; নিশ্চয় তিনি তাকে ফিরিয়ে নিতে সক্ষম।
9; যেদিন গোপন বিষয়াদি পরীক্ষিত হবে,
10; সেদিন তার কোন শক্তি থাকবে না এবং সাহায্যকারীও থাকবে না।
11; শপথ চক্রশীল আকাশের
12; এবং বিদারনশীল পৃথিবীর
13; নিশ্চয় কোরআন সত্য-মিথ্যার ফয়সালা।
14; এবং এটা উপহাস নয়।
15; তারা ভীষণ চক্রান্ত করে,
16; আর আমিও কৌশল করি।
17; অতএব, কাফেরদেরকে অবকাশ দিন, তাদেরকে অবকাশ দিন, কিছু দিনের জন্যে।

Chapter 87 (Sura 87)
1; আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামের পবিত্রতা বর্ণনা করুন
2; যিনি সৃষ্টি করেছেন ও সুবিন্যস্ত করেছেন।
3; এবং যিনি সুপরিমিত করেছেন ও পথ প্রদর্শন করেছেন
4; এবং যিনি তৃণাদি উৎপন্ন করেছেন,
5; অতঃপর করেছেন তাকে কাল আবর্জনা।
6; আমি আপনাকে পাঠ করাতে থাকব, ফলে আপনি বিস্মৃত হবেন না
7; আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত। নিশ্চয় তিনি জানেন প্রকাশ্য ও গোপন বিষয়।
8; আমি আপনার জন্যে সহজ শরীয়ত সহজতর করে দেবো।
9; উপদেশ ফলপ্রসূ হলে উপদেশ দান করুন,
10; যে ভয় করে, সে উপদেশ গ্রহণ করবে,
11; আর যে, হতভাগা, সে তা উপেক্ষা করবে,
12; সে মহা-অগ্নিতে প্রবেশ করবে।
13; অতঃপর সেখানে সে মরবেও না, জীবিতও থাকবে না।
14; নিশ্চয় সাফল্য লাভ করবে সে, যে শুদ্ধ হয়
15; এবং তার পালনকর্তার নাম স্মরণ করে, অতঃপর নামায আদায় করে।
16; বস্তুতঃ তোমরা পার্থিব জীবনকে অগ্রাধিকার দাও,
17; অথচ পরকালের জীবন উৎকৃষ্ট ও স্থায়ী।
18; এটা লিখিত রয়েছে পূর্ববতী কিতাবসমূহে;
19; ইব্রাহীম ও মূসার কিতাবসমূহে।

Chapter 88 (Sura 88)
1; আপনার কাছে আচ্ছন্নকারী কেয়ামতের বৃত্তান্ত পৌঁছেছে কি?
2; অনেক মুখমন্ডল সেদিন হবে লাঞ্ছিত,
3; ক্লিষ্ট, ক্লান্ত।
4; তারা জ্বলন্ত আগুনে পতিত হবে।
5; তাদেরকে ফুটন্ত নহর থেকে পান করানো হবে।
6; কন্টকপূর্ণ ঝাড় ব্যতীত তাদের জন্যে কোন খাদ্য নেই।
7; এটা তাদেরকে পুষ্ট করবে না এবং ক্ষুধায়ও উপকার করবে না।
8; অনেক মুখমন্ডল সেদিন হবে, সজীব,
9; তাদের কর্মের কারণে সন্তুষ্ট।
10; তারা থাকবে, সুউচ্চ জান্নাতে।
11; তথায় শুনবে না কোন অসার কথাবার্তা।
12; তথায় থাকবে প্রবাহিত ঝরণা।
13; তথায় থাকবে উন্নত সুসজ্জিত আসন।
14; এবং সংরক্ষিত পানপাত্র
15; এবং সারি সারি গালিচা
16; এবং বিস্তৃত বিছানো কার্পেট।
17; তারা কি উষ্ট্রের প্রতি লক্ষ্য করে না যে, তা কিভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে?
18; এবং আকাশের প্রতি লক্ষ্য করে না যে, তা কিভাবে উচ্চ করা হয়েছে?
19; এবং পাহাড়ের দিকে যে, তা কিভাবে স্থাপন করা হয়েছে?
20; এবং পৃথিবীর দিকে যে, তা কিভাবে সমতল বিছানো হয়েছে?
21; অতএব, আপনি উপদেশ দিন, আপনি তো কেবল একজন উপদেশদাতা,
22; আপনি তাদের শাসক নন,
23; কিন্তু যে মুখ ফিরিয়ে নেয় ও কাফের হয়ে যায়,
24; আল্লাহ তাকে মহা আযাব দেবেন।
25; নিশ্চয় তাদের প্রত্যাবর্তন আমারই নিকট,
26; অতঃপর তাদের হিসাব-নিকাশ আমারই দায়িত্ব।

Chapter 89 (Sura 89)
1; শপথ ফজরের,
2; শপথ দশ রাত্রির, শপথ তার,
3; যা জোড় ও যা বিজোড়
4; এবং শপথ রাত্রির যখন তা গত হতে থাকে
5; এর মধ্যে আছে শপথ জ্ঞানী ব্যক্তির জন্যে।
6; আপনি কি লক্ষ্য করেননি, আপনার পালনকর্তা আদ বংশের ইরাম গোত্রের সাথে কি আচরণ করেছিলেন,
7; যাদের দৈহিক গঠন স্তম্ভ ও খুঁটির ন্যায় দীর্ঘ ছিল এবং
8; যাদের সমান শক্তি ও বলবীর্যে সারা বিশ্বের শহরসমূহে কোন লোক সৃজিত হয়নি
9; এবং সামুদ গোত্রের সাথে, যারা উপত্যকায় পাথর কেটে গৃহ নির্মাণ করেছিল।
10; এবং বহু কীলকের অধিপতি ফেরাউনের সাথে
11; যারা দেশে সীমালঙ্ঘন করেছিল।
12; অতঃপর সেখানে বিস্তর অশান্তি সৃষ্টি করেছিল।
13; অতঃপর আপনার পালনকর্তা তাদেরকে শাস্তির কশাঘাত করলেন।
14; নিশ্চয় আপনার পালকর্তা সতর্ক দৃষ্টি রাখেন।
15; মানুষ এরূপ যে, যখন তার পালনকর্তা তাকে পরীক্ষা করেন, অতঃপর সম্মান ও অনুগ্রহ দান করেন, তখন বলে, আমার পালনকর্তা আমাকে সম্মান দান করেছেন।
16; এবং যখন তাকে পরীক্ষা করেন, অতঃপর রিযিক সংকুচিত করে দেন, তখন বলেঃ আমার পালনকর্তা আমাকে হেয় করেছেন।
17; এটা অমূলক, বরং তোমরা এতীমকে সম্মান কর না।
18; এবং মিসকীনকে অন্নদানে পরস্পরকে উৎসাহিত কর না।
19; এবং তোমরা মৃতের ত্যাজ্য সম্পত্তি সম্পূর্ণরূপে কুক্ষিগত করে ফেল
20; এবং তোমরা ধন-সম্পদকে প্রাণভরে ভালবাস।
21; এটা অনুচিত। যখন পৃথিবী চুর্ণ-বিচুর্ণ হবে
22; এবং আপনার পালনকর্তা ও ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে উপস্থিত হবেন,
23; এবং সেদিন জাহান্নামকে আনা হবে, সেদিন মানুষ স্মরণ করবে, কিন্তু এই স্মরণ তার কি কাজে আসবে?
24; সে বলবেঃ হায়, এ জীবনের জন্যে আমি যদি কিছু অগ্রে প্রেরণ করতাম!
25; সেদিন তার শাস্তির মত শাস্তি কেউ দিবে না।
26; এবং তার বন্ধনের মত বন্ধন কেউ দিবে না।
27; হে প্রশান্ত মন,
28; তুমি তোমার পালনকর্তার নিকট ফিরে যাও সন্তুষ্ট ও সন্তোষভাজন হয়ে।
29; অতঃপর আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও।
30; এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ কর।

Chapter 90 (Sura 90)
1; আমি এই নগরীর শপথ করি
2; এবং এই নগরীতে আপনার উপর কোন প্রতিবন্ধকতা নেই।
3; শপথ জনকের ও যা জন্ম দেয়।
4; নিশ্চয় আমি মানুষকে শ্রমনির্ভররূপে সৃষ্টি করেছি।
5; সে কি মনে করে যে, তার উপর কেউ ক্ষমতাবান হবে না ?
6; সে বলেঃ আমি প্রচুর ধন-সম্পদ ব্যয় করেছি।
7; সে কি মনে করে যে, তাকে কেউ দেখেনি?
8; আমি কি তাকে দেইনি চক্ষুদ্বয়,
9; জিহবা ও ওষ্ঠদ্বয় ?
10; বস্তুতঃ আমি তাকে দু’টি পথ প্রদর্শন করেছি।
11; অতঃপর সে ধর্মের ঘাঁটিতে প্রবেশ করেনি।
12; আপনি জানেন, সে ঘাঁটি কি?
13; তা হচ্ছে দাসমুক্তি
14; অথবা দুর্ভিক্ষের দিনে অন্নদান।
15; এতীম আত্বীয়কে
16; অথবা ধুলি-ধুসরিত মিসকীনকে
17; অতঃপর তাদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া, যারা ঈমান আনে এবং পরস্পরকে উপদেশ দেয় সবরের ও উপদেশ দেয় দয়ার।
18; তারাই সৌভাগ্যশালী।
19; আর যারা আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে তারাই হতভাগা।
20; তারা অগ্নিপরিবেষ্টিত অবস্থায় বন্দী থাকবে।

Chapter 91 (Sura 91)
1; শপথ সূর্যের ও তার কিরণের,
2; শপথ চন্দ্রের যখন তা সূর্যের পশ্চাতে আসে,
3; শপথ দিবসের যখন সে সূর্যকে প্রখরভাবে প্রকাশ করে,
4; শপথ রাত্রির যখন সে সূর্যকে আচ্ছাদিত করে,
5; শপথ আকাশের এবং যিনি তা নির্মাণ করেছেন, তাঁর।
6; শপথ পৃথিবীর এবং যিনি তা বিস্তৃত করেছেন, তাঁর,
7; শপথ প্রাণের এবং যিনি তা সুবিন্যস্ত করেছেন, তাঁর,
8; অতঃপর তাকে তার অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন,
9; যে নিজেকে শুদ্ধ করে, সেই সফলকাম হয়।
10; এবং যে নিজেকে কলুষিত করে, সে ব্যর্থ মনোরথ হয়।
11; সামুদ সম্প্রদায় অবাধ্যতা বশতঃ মিথ্যারোপ করেছিল।
12; যখন তাদের সর্বাধিক হতভাগ্য ব্যক্তি তৎপর হয়ে উঠেছিল।
13; অতঃপর আল্লাহর রসূল তাদেরকে বলেছিলেনঃ আল্লাহর উষ্ট্রী ও তাকে পানি পান করানোর ব্যাপারে সতর্ক থাক।
14; অতঃপর ওরা তার প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল এবং উষ্ট্রীর পা কর্তন করেছিল। তাদের পাপের কারণে তাদের পালনকর্তা তাদের উপর ধ্বংস নাযিল করে একাকার করে দিলেন।
15; আল্লাহ তা’আলা এই ধ্বংসের কোন বিরূপ পরিণতির আশংকা করেন না।

Chapter 92 (Sura 92)
1; শপথ রাত্রির, যখন সে আচ্ছন্ন করে,
2; শপথ দিনের, যখন সে আলোকিত হয়
3; এবং তাঁর, যিনি নর ও নারী সৃষ্টি করেছেন,
4; নিশ্চয় তোমাদের কর্ম প্রচেষ্টা বিভিন্ন ধরনের।
5; অতএব, যে দান করে এবং খোদাভীরু হয়,
6; এবং উত্তম বিষয়কে সত্য মনে করে,
7; আমি তাকে সুখের বিষয়ের জন্যে সহজ পথ দান করব।
8; আর যে কৃপণতা করে ও বেপরওয়া হয়
9; এবং উত্তম বিষয়কে মিথ্যা মনে করে,
10; আমি তাকে কষ্টের বিষয়ের জন্যে সহজ পথ দান করব।
11; যখন সে অধঃপতিত হবে, তখন তার সম্পদ তার কোনই কাজে আসবে না।
12; আমার দায়িত্ব পথ প্রদর্শন করা।
13; আর আমি মালিক ইহকালের ও পরকালের।
14; অতএব, আমি তোমাদেরকে প্রজ্বলিত অগ্নি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছি।
15; এতে নিতান্ত হতভাগ্য ব্যক্তিই প্রবেশ করবে,
16; যে মিথ্যারোপ করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়।
17; এ থেকে দূরে রাখা হবে খোদাভীরু ব্যক্তিকে,
18; যে আত্নশুদ্ধির জন্যে তার ধন-সম্পদ দান করে।
19; এবং তার উপর কারও কোন প্রতিদানযোগ্য অনুগ্রহ থাকে না।
20; তার মহান পালনকর্তার সন্তুষ্টি অন্বেষণ ব্যতীত।
21; সে সত্বরই সন্তুষ্টি লাভ করবে।

Chapter 93 (Sura 93)
1; শপথ পূর্বাহ্নের,
2; শপথ রাত্রির যখন তা গভীর হয়,
3; আপনার পালনকর্তা আপনাকে ত্যাগ করেনি এবং আপনার প্রতি বিরূপও হননি।
4; আপনার জন্যে পরকাল ইহকাল অপেক্ষা শ্রেয়।
5; আপনার পালনকর্তা সত্বরই আপনাকে দান করবেন, অতঃপর আপনি সন্তুষ্ট হবেন।
6; তিনি কি আপনাকে এতীমরূপে পাননি? অতঃপর তিনি আশ্রয় দিয়েছেন।
7; তিনি আপনাকে পেয়েছেন পথহারা, অতঃপর পথপ্রদর্শন করেছেন।
8; তিনি আপনাকে পেয়েছেন নিঃস্ব, অতঃপর অভাবমুক্ত করেছেন।
9; সুতরাং আপনি এতীমের প্রতি কঠোর হবেন না;
10; সওয়ালকারীকে ধমক দেবেন না।
11; এবং আপনার পালনকর্তার নেয়ামতের কথা প্রকাশ করুন।

Chapter 94 (Sura 94)
1; আমি কি আপনার বক্ষ উম্মুক্ত করে দেইনি?
2; আমি লাঘব করেছি আপনার বোঝা,
3; যা ছিল আপনার জন্যে অতিশয় দুঃসহ।
4; আমি আপনার আলোচনাকে সমুচ্চ করেছি।
5; নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে।
6; নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে।
7; অতএব, যখন অবসর পান পরিশ্রম করুন।
8; এবং আপনার পালনকর্তার প্রতি মনোনিবেশ করুন।

Chapter 95 (Sura 95)
1; শপথ আঞ্জীর (ডুমুর) ও যয়তুনের,
2; এবং সিনাই প্রান্তরস্থ তূর পর্বতের,
3; এবং এই নিরাপদ নগরীর।
4; আমি সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতর অবয়বে।
5; অতঃপর তাকে ফিরিয়ে দিয়েছি নীচ থেকে নীচে।
6; কিন্তু যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্যে রয়েছে অশেষ পুরস্কার।
7; অতঃপর কেন তুমি অবিশ্বাস করছ কেয়ামতকে?
8; আল্লাহ কি বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্টতম বিচারক নন?

Chapter 96 (Sura 96)
1; পাঠ করুন আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন
2; সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে।
3; পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু,
4; যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন,
5; শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না।
6; সত্যি সত্যি মানুষ সীমালংঘন করে,
7; এ কারণে যে, সে নিজেকে অভাবমুক্ত মনে করে।
8; নিশ্চয় আপনার পালনকর্তার দিকেই প্রত্যাবর্তন হবে।
9; আপনি কি তাকে দেখেছেন, যে নিষেধ করে
10; এক বান্দাকে যখন সে নামায পড়ে?
11; আপনি কি দেখেছেন যদি সে সৎপথে থাকে।
12; অথবা খোদাভীতি শিক্ষা দেয়।
13; আপনি কি দেখেছেন, যদি সে মিথ্যারোপ করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়।
14; সে কি জানে না যে, আল্লাহ দেখেন?
15; কখনই নয়, যদি সে বিরত না হয়, তবে আমি মস্তকের সামনের কেশগুচ্ছ ধরে হেঁচড়াবই-
16; মিথ্যাচারী, পাপীর কেশগুচ্ছ।
17; অতএব, সে তার সভাসদদেরকে আহবান করুক।
18; আমিও আহবান করব জাহান্নামের প্রহরীদেরকে
19; কখনই নয়, আপনি তার আনুগত্য করবেন না। আপনি সেজদা করুন ও আমার নৈকট্য অর্জন করুন।

Chapter 97 (Sura 97)
1; আমি একে নাযিল করেছি শবে-কদরে।
2; শবে-কদর সমন্ধে আপনি কি জানেন?
3; শবে-কদর হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।
4; এতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে।
5; এটা নিরাপত্তা, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

Chapter 98 (Sura 98)
1; আহলে-কিতাব ও মুশরেকদের মধ্যে যারা কাফের ছিল, তারা প্রত্যাবর্তন করত না যতক্ষণ না তাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ আসত।
2; অর্থাৎ আল্লাহর একজন রসূল, যিনি আবৃত্তি করতেন পবিত্র সহীফা,
3; যাতে আছে, সঠিক বিষয়বস্তু।
4; অপর কিতাব প্রাপ্তরা যে বিভ্রান্ত হয়েছে, তা হয়েছে তাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পরেই।
5; তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর এবাদত করবে, নামায কায়েম করবে এবং যাকাত দেবে। এটাই সঠিক ধর্ম।
6; আহলে-কিতাব ও মুশরেকদের মধ্যে যারা কাফের, তারা জাহান্নামের আগুনে স্থায়ীভাবে থাকবে। তারাই সৃষ্টির অধম।
7; যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তারাই সৃষ্টির সেরা।
8; তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে তাদের প্রতিদান চিরকাল বসবাসের জান্নাত, যার তলদেশে নির্ঝরিণী প্রবাহিত। তারা সেখানে থাকবে অনন্তকাল। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। এটা তার জন্যে, যে তার পালনকর্তাকে ভয় কর।

Chapter 99 (Sura 99)
1; যখন পৃথিবী তার কম্পনে প্রকম্পিত হবে,
2; যখন সে তার বোঝা বের করে দেবে।
3; এবং মানুষ বলবে, এর কি হল ?
4; সেদিন সে তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে,
5; কারণ, আপনার পালনকর্তা তাকে আদেশ করবেন।
6; সেদিন মানুষ বিভিন্ন দলে প্রকাশ পাবে, যাতে তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম দেখানো হয়।
7; অতঃপর কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে তা দেখতে পাবে
8; এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করলে তাও দেখতে পাবে।

Chapter 100 (Sura 100)
1; শপথ উর্ধ্বশ্বাসে চলমান অশ্বসমূহের,
2; অতঃপর ক্ষুরাঘাতে অগ্নিবিচ্ছুরক অশ্বসমূহের
3; অতঃপর প্রভাতকালে আক্রমণকারী অশ্বসমূহের
4; ও যারা সে সময়ে ধুলি উৎক্ষিপ্ত করে
5; অতঃপর যারা শক্রদলের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে-
6; নিশ্চয় মানুষ তার পালনকর্তার প্রতি অকৃতজ্ঞ।
7; এবং সে অবশ্য এ বিষয়ে অবহিত
8; এবং সে নিশ্চিতই ধন-সম্পদের ভালবাসায় মত্ত।
9; সে কি জানে না, যখন কবরে যা আছে, তা উত্থিত হবে
10; এবং অন্তরে যা আছে, তা অর্জন করা হবে?
11; সেদিন তাদের কি হবে, সে সম্পর্কে তাদের পালনকর্তা সবিশেষ জ্ঞাত।

Chapter 101 (Sura 101)
1; করাঘাতকারী,
2; করাঘাতকারী কি?
3; করাঘাতকারী সম্পর্কে আপনি কি জানেন ?
4; যেদিন মানুষ হবে বিক্ষিপ্ত পতংগের মত
5; এবং পর্বতমালা হবে ধুনিত রঙ্গীন পশমের মত।
6; অতএব যার পাল্লা ভারী হবে,
7; সে সুখীজীবন যাপন করবে।
8; আর যার পাল্লা হালকা হবে,
9; তার ঠিকানা হবে হাবিয়া।
10; আপনি জানেন তা কি?
11; প্রজ্জ্বলিত অগ্নি!

Chapter 102 (Sura 102)
1; প্রাচুর্যের লালসা তোমাদেরকে গাফেল রাখে,
2; এমনকি, তোমরা কবরস্থানে পৌছে যাও।
3; এটা কখনও উচিত নয়। তোমরা সত্ত্বরই জেনে নেবে।
4; অতঃপর এটা কখনও উচিত নয়। তোমরা সত্ত্বরই জেনে নেবে।
5; কখনই নয়; যদি তোমরা নিশ্চিত জানতে।
6; তোমরা অবশ্যই জাহান্নাম দেখবে,
7; অতঃপর তোমরা তা অবশ্যই দেখবে দিব্য প্রত্যয়ে,
8; এরপর অবশ্যই সেদিন তোমরা নেয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।

Chapter 103 (Sura 103)
1; কসম যুগের (সময়ের),
2; নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত;
3; কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের এবং তাকীদ করে সবরের।

Chapter 104 (Sura 104)
1; প্রত্যেক পশ্চাতে ও সম্মুখে পরনিন্দাকারীর দুর্ভোগ,
2; যে অর্থ সঞ্চিত করে ও গণনা করে
3; সে মনে করে যে, তার অর্থ চিরকাল তার সাথে থাকবে!
4; কখনও না, সে অবশ্যই নিক্ষিপ্ত হবে পিষ্টকারীর মধ্যে।
5; আপনি কি জানেন, পিষ্টকারী কি?
6; এটা আল্লাহর প্রজ্জ্বলিত অগ্নি,
7; যা হৃদয় পর্যন্ত পৌছবে।
8; এতে তাদেরকে বেঁধে দেয়া হবে,
9; লম্বা লম্বা খুঁটিতে।

Chapter 105 (Sura 105)
1; আপনি কি দেখেননি আপনার পালনকর্তা হস্তীবাহিনীর সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছেন?
2; তিনি কি তাদের চক্রান্ত নস্যাৎ করে দেননি?
3; তিনি তাদের উপর প্রেরণ করেছেন ঝাঁকে ঝাঁকে পাখী,
4; যারা তাদের উপর পাথরের কংকর নিক্ষেপ করছিল।
5; অতঃপর তিনি তাদেরকে ভক্ষিত তৃণসদৃশ করে দেন।

Chapter 106 (Sura 106)
1; কোরাইশের আসক্তির কারণে,
2; আসক্তির কারণে তাদের শীত ও গ্রীষ্মকালীন সফরের।
3; অতএব তারা যেন এবাদত করে এই ঘরের পালনকর্তার
4; যিনি তাদেরকে ক্ষুধায় আহার দিয়েছেন এবং যুদ্ধভীতি থেকে তাদেরকে নিরাপদ করেছেন।

Chapter 107 (Sura 107)
1; আপনি কি দেখেছেন তাকে, যে বিচারদিবসকে মিথ্যা বলে?
2; সে সেই ব্যক্তি, যে এতীমকে গলা ধাক্কা দেয়
3; এবং মিসকীনকে অন্ন দিতে উৎসাহিত করে না।
4; অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাযীর,
5; যারা তাদের নামায সম্বন্ধে বে-খবর;
6; যারা তা লোক-দেখানোর জন্য করে
7; এবং নিত্য ব্যবহার্য্য বস্তু অন্যকে দেয় না।

Chapter 108 (Sura 108)
1; নিশ্চয় আমি আপনাকে কাওসার দান করেছি।
2; অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কোরবানী করুন।
3; যে আপনার শত্রু, সেই তো লেজকাটা, নির্বংশ।

Chapter 109 (Sura 109)
1; বলুন, হে কাফেরকূল,
2; আমি এবাদত করিনা, তোমরা যার এবাদত কর।
3; এবং তোমরাও এবাদতকারী নও, যার এবাদত আমি করি
4; এবং আমি এবাদতকারী নই, যার এবাদত তোমরা কর।
5; তোমরা এবাদতকারী নও, যার এবাদত আমি করি।
6; তোমাদের কর্ম ও কর্মফল তোমাদের জন্যে এবং আমার কর্ম ও কর্মফল আমার জন্যে।

Chapter 110 (Sura 110)
1; যখন আসবে আল্লাহর সাহায্য ও বিজয়
2; এবং আপনি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে দেখবেন,
3; তখন আপনি আপনার পালনকর্তার পবিত্রতা বর্ণনা করুন এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাকারী।

Chapter 111 (Sura 111)
1; আবু লাহাবের হস্তদ্বয় ধ্বংস হোক এবং ধ্বংস হোক সে নিজে,
2; কোন কাজে আসেনি তার ধন-সম্পদ ও যা সে উপার্জন করেছে।
3; সত্বরই সে প্রবেশ করবে লেলিহান অগ্নিতে
4; এবং তার স্ত্রীও-যে ইন্ধন বহন করে,
5; তার গলদেশে খর্জুরের রশি নিয়ে।

Chapter 112 (Sura 112)
1; বলুন, তিনি আল্লাহ, এক,
2; আল্লাহ অমুখাপেক্ষী,
3; তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি
4; এবং তার সমতুল্য কেউ নেই।

Chapter 113 (Sura 113)
1; বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি প্রভাতের পালনকর্তার,
2; তিনি যা সৃষ্টি করেছেন, তার অনিষ্ট থেকে,
3; অন্ধকার রাত্রির অনিষ্ট থেকে, যখন তা সমাগত হয়,
4; গ্রন্থিতে ফুঁৎকার দিয়ে জাদুকারিনীদের অনিষ্ট থেকে
5; এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে।

Chapter 114 (Sura 114)
1; বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করিতেছি মানুষের পালনকর্তার,
2; মানুষের অধিপতির,
3; মানুষের মা’বুদের
4; তার অনিষ্ট থেকে, যে কুমন্ত্রণা দেয় ও আত্নগোপন করে,
5; যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে
6; জ্বিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে।