শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু
[1] ত্বা, সীন, মীম।
[2] এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত।
[3] তারা বিশ্বাস করে না বলে আপনি হয়তো মর্মব্যথায় আত্নঘাতী হবেন।
[4] আমি যদি ইচ্ছা করি, তবে আকাশ থেকে তাদের কাছে কোন নিদর্শন নাযিল করতে পারি। অতঃপর তারা এর সামনে নত হয়ে যাবে।
[5] যখনই তাদের কাছে রহমান এর কোন নতুন উপদেশ আসে, তখনই তারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
[6] অতএব তারা তো মিথ্যারোপ করেছেই; সুতরাং যে বিষয় নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করত, তার যথার্থ স্বরূপ শীঘ্রই তাদের কাছে পৌছবে।
[7] তারা কি ভুপৃষ্ঠের প্রতি দৃষ্টিপাত করে না? আমি তাতে সর্বপ্রকার বিশেষ-বস্তু কত উদগত করেছি।
[8] নিশ্চয় এতে নিদর্শন আছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
[9] আপনার পালনকর্তা তো পরাক্রমশালী পরম দয়ালু।
[10] যখন আপনার পালনকর্তা মূসাকে ডেকে বললেনঃ তুমি পাপিষ্ঠ সম্প্রদায়ের নিকট যাও;
[11] ফেরাউনের সম্প্রদায়ের নিকট; তারা কি ভয় করে না?
[12] সে বলল, হে আমার পালনকর্তা, আমার আশংকা হচ্ছে যে, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলে দেবে।
[13] এবং আমার মন হতবল হয়ে পড়ে এবং আমার জিহবা অচল হয়ে যায়। সুতরাং হারুনের কাছে বার্তা প্রেরণ করুন।
[14] আমার বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ আছে। অতএব আমি আশংকা করি যে, তারা আমাকে হত্যা করবে।
[15] আল্লাহ বলেন, কখনই নয় তোমরা উভয়ে যাও আমার নিদর্শনাবলী নিয়ে। আমি তোমাদের সাথে থেকে শোনব।
[16] অতএব তোমরা ফেরআউনের কাছে যাও এবং বল, আমরা বিশ্বজগতের পালনকর্তার রসূল।
[17] যাতে তুমি বনী-ইসরাঈলকে আমাদের সাথে যেতে দাও।
[18] ফেরাউন বলল, আমরা কি তোমাকে শিশু অবস্থায় আমাদের মধ্যে লালন-পালন করিনি? এবং তুমি আমাদের মধ্যে জীবনের বহু বছর কাটিয়েছ।
[19] তুমি সেই-তোমরা অপরাধ যা করবার করেছ। তুমি হলে কৃতঘ্ন।
[20] মূসা বলল, আমি সে অপরাধ তখন করেছি, যখন আমি ভ্রান্ত ছিলাম।
[21] অতঃপর আমি ভীত হয়ে তোমাদের কাছ থেকে পলায়ন করলাম। এরপর আমার পালনকর্তা আমাকে প্রজ্ঞা দান করেছেন এবং আমাকে পয়গম্বর করেছেন।
[22] আমার প্রতি তোমার যে অনুগ্রহের কথা বলছ, তা এই যে, তুমি বনী-ইসলাঈলকে গোলাম বানিয়ে রেখেছ।
[23] ফেরাউন বলল, বিশ্বজগতের পালনকর্তা আবার কি?
[24] মূসা বলল, তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুর পালনকর্তা যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।
[25] ফেরাউন তার পরিষদবর্গকে বলল, তোমরা কি শুনছ না?
[26] মূসা বলল, তিনি তোমাদের পালনকর্তা এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরও পালনকর্তা।
[27] ফেরাউন বলল, তোমাদের প্রতি প্রেরিত তোমাদের রসূলটি নিশ্চয়ই বদ্ধ পাগল।
[28] মূসা বলল, তিনি পূর্ব, পশ্চিম ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সব কিছুর পালনকর্তা, যদি তোমরা বোঝ।
[29] ফেরাউন বলল, তুমি যদি আমার পরিবর্তে অন্যকে উপাস্যরূপে গ্রহণ কর তবে আমি অবশ্যই তোমাকে কারাগারে নিক্ষেপ করব।
[30] মূসা বলল, আমি তোমার কাছে কোন স্পষ্ট বিষয় নিয়ে আগমন করলেও কি?
[31] ফেরাউন বলল, তুমি সত্যবাদী হলে তা উপস্থিত কর।
[32] অতঃপর তিনি লাঠি নিক্ষেপ করলে মুহূর্তের মধ্যে তা সুস্পষ্ট অজগর হয়ে গেল।
[33] আর তিনি তার হাত বের করলেন, তৎক্ষণাৎ তা দর্শকদের কাছে সুশুভ্র প্রতিভাত হলো।
[34] ফেরাউন তার পরিষদবর্গকে বলল, নিশ্চয় এ একজন সুদক্ষ জাদুকর।
[35] সে তার জাদু বলে তোমাদেরকে তোমাদের দেশ থেকে বহিস্কার করতে চায়। অতএব তোমাদের মত কি?
[36] তারা বলল, তাকে ও তার ভাইকে কিছু অবকাশ দিন এবং শহরে শহরে ঘোষক প্রেরণ করুন।
[37] তারা যেন আপনার কাছে প্রত্যেকটি দক্ষ জাদুকর কে উপস্থিত করে।
[38] অতঃপর এক নির্দিষ্ট দিনে জাদুকরদেরকে একত্রিত করা হল।
[39] এবং জনগণের মধ্যে ঘোষণা করা হল, তোমরাও সমবেত হও।
[40] যাতে আমরা জাদুকরদের অনুসরণ করতে পারি-যদি তারাই বিজয়ী হয়।
[41] যখন যাদুকররা আগমণ করল, তখন ফেরআউনকে বলল, যদি আমরা বিজয়ী হই, তবে আমরা পুরস্কার পাব তো?
[42] ফেরাউন বলল, হঁ্যা এবং তখন তোমরা আমার নৈকট্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
[43] মূসা (আঃ) তাদেরকে বললেন, নিক্ষেপ কর তোমরা যা নিক্ষেপ করবে।
[44] অতঃপর তারা তাদের রশি ও লাঠি নিক্ষেপ করল এবং বলল, ফেরাউনের ইযযতের কসম, আমরাই বিজয়ী হব।
[45] অতঃপর মূসা তাঁর লাঠি নিক্ষেপ করল, হঠাৎ তা তাদের অলীক কীর্তিগুলোকে গ্রাস করতে লাগল।
[46] তখন জাদুকররা সেজদায় নত হয়ে গেল।
[47] তারা বলল, আমরা রাব্বুল আলামীনের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলাম।
[48] যিনি মূসা ও হারুনের রব।
[49] ফেরাউন বলল, আমার অনুমতি দানের পূর্বেই তোমরা কি তাকে মেনে নিলে? নিশ্চয় সে তোমাদের প্রধান, যে তোমাদেরকে জাদু শিক্ষা দিয়েছে। শীঘ্রই তোমরা পরিণাম জানতে পারবে। আমি অবশ্যই তোমাদের হাত ও পা বিপরীত দিক থেকে কর্তন করব। এবং তোমাদের সবাইকে শূলে চড়াব।
[50] তারা বলল, কোন ক্ষতি নেই। আমরা আমাদের পালনকর্তার কাছে প্রত্যাবর্তন করব।
[51] আমরা আশা করি, আমাদের পালনকর্তা আমাদের ক্রটি-বিচ্যুতি মার্জনা করবেন। কারণ, আমরা বিশ্বাস স্থাপনকারীদের মধ্যে অগ্রণী।
[52] আমি মূসাকে আদেশ করলাম যে, আমার বান্দাদেরকে নিয়ে রাত্রিযোগে বের হয়ে যাও, নিশ্চয় তোমাদের পশ্চাদ্ধাবন করা হবে।
[53] অতঃপর ফেরাউন শহরে শহরে সংগ্রাহকদেরকে প্রেরণ করল,
[54] নিশ্চয় এরা (বনী-ইসরাঈলরা) ক্ষুদ্র একটি দল।
[55] এবং তারা আমাদের ক্রোধের উদ্রেক করেছে।
[56] এবং আমরা সবাই সদা শংকিত।
[57] অতঃপর আমি ফেরআউনের দলকে তাদের বাগ-বাগিচা ও ঝর্ণাসমূহ থেকে বহিষ্কার করলাম।
[58] এবং ধন-ভান্ডার ও মনোরম স্থানসমূহ থেকে।
[59] এরূপই হয়েছিল এবং বনী-ইসলাঈলকে করে দিলাম এসবের মালিক।
[60] অতঃপর সুর্যোদয়ের সময় তারা তাদের পশ্চাদ্ধাবন করল।
[61] যখন উভয় দল পরস্পরকে দেখল, তখন মূসার সঙ্গীরা বলল, আমরা যে ধরা পড়ে গেলাম।
[62] মূসা বলল, কখনই নয়, আমার সাথে আছেন আমার পালনকর্তা। তিনি আমাকে পথ বলে দেবেন।
[63] অতঃপর আমি মূসাকে আদেশ করলাম, তোমার লাঠি দ্বারা সমূদ্রকে আঘাত কর। ফলে, তা বিদীর্ণ হয়ে গেল এবং প্রত্যেক ভাগ বিশাল পর্বতসদৃশ হয়ে গেল।
[64] আমি সেথায় অপর দলকে পৌঁছিয়ে দিলাম।
[65] এবং মূসা ও তাঁর সংগীদের সবাইকে বাঁচিয়ে দিলাম।
[66] অতঃপর অপর দলটিকে নিমজ্জত কললাম।
[67] নিশ্চয় এতে একটি নিদর্শন আছে এবং তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী ছিল না।
[68] আপনার পালনকর্তা অবশ্যই পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[69] আর তাদেরকে ইব্রাহীমের বৃত্তান্ত শুনিয়ে দিন।
[70] যখন তাঁর পিতাকে এবং তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন, তোমরা কিসের এবাদত কর?
[71] তারা বলল, আমরা প্রতিমার পূজা করি এবং সারাদিন এদেরকেই নিষ্ঠার সাথে আঁকড়ে থাকি।
[72] ইব্রাহীম (আঃ) বললেন, তোমরা যখন আহবান কর, তখন তারা শোনে কি?
[73] অথবা তারা কি তোমাদের উপকার কিংবা ক্ষতি করতে পারে?
[74] তারা বললঃ না, তবে আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে পেয়েছি, তারা এরূপই করত।
[75] ইব্রাহীম বললেন, তোমরা কি তাদের সম্পর্কে ভেবে দেখেছ, যাদের পূজা করে আসছ।
[76] তোমরা এবং তোমাদের পূর্ববর্তী পিতৃপুরুষেরা ?
[77] বিশ্বপালনকর্তা ব্যতীত তারা সবাই আমার শত্রু।
[78] যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনিই আমাকে পথপ্রদর্শন করেন,
[79] যিনি আমাকে আহার এবং পানীয় দান করেন,
[80] যখন আমি রোগাক্রান্ত হই, তখন তিনিই আরোগ্য দান করেন।
[81] যিনি আমার মৃত্যু ঘটাবেন, অতঃপর পুনর্জীবন দান করবেন।
[82] আমি আশা করি তিনিই বিচারের দিনে আমার ক্রটি-বিচ্যুতি মাফ করবেন।
[83] হে আমার পালনকর্তা, আমাকে প্রজ্ঞা দান কর এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত কর
[84] এবং আমাকে পরবর্তীদের মধ্যে সত্যভাষী কর।
[85] এবং আমাকে নেয়ামত উদ্যানের অধিকারীদের অন্তর্ভূক্ত কর।
[86] এবং আমার পিতাকে ক্ষমা কর। সে তো পথভ্রষ্টদের অন্যতম।
[87] এবং পূনরুত্থান দিবসে আমাকে লাঞ্ছিত করো না,
[88] যে দিবসে ধন-সম্পদ ও সন্তান সন্ততি কোন উপকারে আসবে না;
[89] কিন্তু যে সুস্থ অন্তর নিয়ে আল্লাহর কাছে আসবে।
[90] জান্নাত আল্লাহভীরুদের নিকটবর্তী করা হবে।
[91] এবং বিপথগামীদের সামনে উম্মোচিত করা হবে জাহান্নাম।
[92] তাদেরকে বলা হবেঃ তারা কোথায়, তোমরা যাদের পূজা করতে।
[93] আল্লাহর পরিবর্তে? তারা কি তোমাদের সাহায্য করতে পারে, অথবা তারা প্রতিশোধ নিতে পারে?
[94] অতঃপর তাদেরকে এবং পথভ্রষ্টদেরকে আধোমুখি করে নিক্ষেপ করা হবে জাহান্নামে।
[95] এবং ইবলীস বাহিনীর সকলকে।
[96] তারা তথায় কথা কাটাকাটিতে লিপ্ত হয়ে বলবেঃ
[97] আল্লাহর কসম, আমরা প্রকাশ্য বিভ্রান্তিতে লিপ্ত ছিলাম।
[98] যখন আমরা তোমাদেরকে বিশ্ব-পালনকর্তার সমতুল্য গন্য করতাম।
[99] আমাদেরকে দুষ্টকর্মীরাই গোমরাহ করেছিল।
[100] অতএব আমাদের কোন সুপারিশকারী নেই।
[101] এবং কোন সহৃদয় বন্ধু ও নেই।
[102] হায়, যদি কোনরুপে আমরা পৃথিবীতে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ পেতাম, তবে আমরা বিশ্বাস স্থাপনকারী হয়ে যেতাম।
[103] নিশ্চয়, এতে নিদর্শন আছে এবং তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
[104] আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[105] নূহের সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যারোপ করেছে।
[106] যখন তাদের ভ্রাতা নূহ তাদেরকে বললেন, তোমাদের কি ভয় নেই?
[107] আমি তোমাদের জন্য বিশ্বস্ত বার্তাবাহক।
[108] অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
[109] আমি তোমাদের কাছে এর জন্য কোন প্রতিদান চাই না, আমার প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তাই দেবেন।
[110] অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
[111] তারা বলল, আমরা কি তোমাকে মেনে নেব যখন তোমার অনুসরণ করছে ইতরজনেরা?
[112] নূহ বললেন, তারা কি কাজ করছে, তা জানা আমার কি দরকার?
[113] তাদের হিসাব নেয়া আমার পালনকর্তারই কাজ; যদি তোমরা বুঝতে!
[114] আমি মুমিনগণকে তাড়িয়ে দেয়ার লোক নই।
[115] আমি তো শুধু একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
[116] তারা বলল, হে নূহ যদি তুমি বিরত না হও, তবে তুমি নিশ্চিতই প্রস্তরাঘাতে নিহত হবে।
[117] নূহ বললেন, হে আমার পালনকর্তা, আমার সম্প্রদায় তো আমাকে মিথ্যাবাদী বলছে।
[118] অতএব, আমার ও তাদের মধ্যে কোন ফয়সালা করে দিন এবং আমাকে ও আমার সংগী মুমিনগণকে রক্ষা করুন।
[119] অতঃপর আমি তাঁকে ও তাঁর সঙ্গিগণকে বোঝাই করা নৌকায় রক্ষা করলাম।
[120] এরপর অবশিষ্ট সবাইকে নিমজ্জত করলাম।
[121] নিশ্চয় এতে নিদর্শন আছে এবং তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
[122] নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[123] আদ সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
[124] তখন তাদের ভাই হুদ তাদেরকে বললেনঃ তোমাদের কি ভয় নেই?
[125] আমি তোমাদের বিশ্বস্ত রসূল।
[126] অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
[127] আমি তোমাদের কাছে এর জন্যে প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান তো পালনকর্তা দেবেন।
[128] তোমরা কি প্রতিটি উচ্চস্থানে অযথা নিদর্শন নির্মান করছ?
[129] এবং বড় বড় প্রাসাদ নির্মাণ করছ, যেন তোমরা চিরকাল থাকবে?
[130] যখন তোমরা আঘাত হান, তখন জালেম ও নিষ্ঠুরের মত আঘাত হান।
[131] অতএব, আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার অনুগত্য কর।
[132] ভয় কর তাঁকে, যিনি তোমাদেরকে সেসব বস্তু দিয়েছেন, যা তোমরা জান।
[133] তোমাদেরকে দিয়েছেন চতুষ্পদ জন্তু ও পুত্র-সন্তান,
[134] এবং উদ্যান ও ঝরণা।
[135] আমি তোমাদের জন্যে মহাদিবসের শাস্তি আশংকা করি।
[136] তারা বলল, তুমি উপদেশ দাও অথবা উপদেশ নাই দাও, উভয়ই আমাদের জন্যে সমান।
[137] এসব কথাবার্তা পূর্ববর্তী লোকদের অভ্যাস বৈ নয়।
[138] আমরা শাস্তিপ্রাপ্ত হব না।
[139] অতএব, তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী বলতে লাগল এবং আমি তাদেরকে নিপাত করে দিলাম। এতে অবশ্যই নিদর্শন আছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
[140] এবং আপনার পালনকর্তা, তিনি তো প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[141] সামুদ সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
[142] যখন তাদের ভাই সালেহ, তাদেরকে বললেন, তোমরা কি ভয় কর না?
[143] আমি তোমাদের বিশ্বস্ত পয়গম্বর।
[144] অতএব, আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
[145] আমি এর জন্যে তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তাই দেবেন।
[146] তোমাদেরকে কি এ জগতের ভোগ-বিলাসের মধ্যে নিরাপদে রেখে দেয়া হবে?
[147] উদ্যানসমূহের মধ্যে এবং ঝরণাসমূহের মধ্যে ?
[148] শস্যক্ষেত্রের মধ্যে এবং মঞ্জুরিত খেজুর বাগানের মধ্যে ?
[149] তোমরা পাহাড় কেটে জাঁক জমকের গৃহ নির্মাণ করছ।
[150] সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার অনুগত্য কর।
[151] এবং সীমালংঘনকারীদের আদেশ মান্য কর না;
[152] যারা পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করে এবং শান্তি স্থাপন করে না;
[153] তারা বলল, তুমি তো জাদুগ্রস্থুরেদ একজন।
[154] তুমি তো আমাদের মতই একজন মানুষ বৈ নও। সুতরাং যদি তুমি সত্যবাদী হও, তবে কোন নিদর্শন উপস্থিত কর।
[155] সালেহ বললেন এই উষ্ট্রী, এর জন্যে আছে পানি পানের পালা এবং তোমাদের জন্যে আছে পানি পানের পালা নির্দিষ্ট এক-এক দিনের।
[156] তোমরা একে কোন কষ্ট দিও না। তাহলে তোমাদেরকে মহাদিবসের আযাব পাকড়াও করবে।
[157] তারা তাকে বধ করল ফলে, তারা অনুতপ্ত হয়ে গেল।
[158] এরপর আযাব তাদেরকে পাকড়াও করল। নিশ্চয় এতে নিদর্শন আছে। কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
[159] আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[160] লূতের সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
[161] যখন তাদের ভাই লূত তাদেরকে বললেন, তোমরা কি ভয় কর না ?
[162] আমি তোমাদের বিশ্বস্ত পয়গম্বর।
[163] অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
[164] আমি এর জন্যে তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তা দেবেন।
[165] সারা জাহানের মানুষের মধ্যে তোমরাই কি পুরূষদের সাথে কুকর্ম কর?
[166] এবং তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের জন্যে যে স্ত্রীগনকে সৃষ্টি করেছেন, তাদেরকে বর্জন কর? বরং তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়।
[167] তারা বলল, হে লূত, তুমি যদি বিরত না হও, তবে অবশ্যই তোমাকে বহিস্কৃত করা হবে।
[168] লূত বললেন, আমি তোমাদের এই কাজকে ঘৃণা করি।
[169] হে আমার পালনকর্তা, আমাকে এবং আমার পরিবারবর্গকে তারা যা করে, তা থেকে রক্ষা কর।
[170] অতঃপর আমি তাঁকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে রক্ষা করলাম।
[171] এক বৃদ্ধা ব্যতীত, সে ছিল ধ্বংস প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত।
[172] এরপর অন্যদেরকে নিপাত করলাম।
[173] তাদের উপর এক বিশেষ বৃষ্টি বর্ষণ করলাম। ভীতি-প্রদর্শিত দের জন্যে এই বৃষ্টি ছিল কত নিকৃষ্ট।
[174] নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
[175] নিশ্চয়ই আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[176] বনের অধিবাসীরা পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
[177] যখন শো’আয়ব তাদের কে বললেন, তোমরা কি ভয় কর না?
[178] আমি তোমাদের বিশ্বস্ত পয়গম্বর।
[179] অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
[180] আমি তোমাদের কাছে এর জন্য কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তাই দেবেন।
[181] মাপ পূর্ণ কর এবং যারা পরিমাপে কম দেয়, তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।
[182] সোজা দাঁড়ি-পাল্লায় ওজন কর।
[183] মানুষকে তাদের বস্তু কম দিও না এবং পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করে ফিরো না।
[184] ভয় কর তাঁকে, যিনি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তী লোক-সম্প্রদায়কে সৃষ্টি করেছেন।
[185] তারা বলল, তুমি তো জাদুগ্রস্তদের অন্যতম।
[186] তুমি আমাদের মত মানুষ বৈ তো নও। আমাদের ধারণা-তুমি মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।
[187] অতএব, যদি সত্যবাদী হও, তবে আকাশের কোন টুকরো আমাদের উপর ফেলে দাও।
[188] শো’আয়ব বললেন, তোমরা যা কর, সে সম্পর্কে আমার পালনকর্তা ভালরূপে অবহিত।
[189] অতঃপর তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী বলে দিল। ফলে তাদেরকে মেঘাচ্ছন্ন দিবসের আযাব পাকড়াও করল। নিশ্চয় সেটা ছিল এক মহাদিবসের আযাব।
[190] নিশ্চয় এতে নিদর্শন রয়েছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাস করে না।
[191] নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[192] এই কোরআন তো বিশ্ব-জাহানের পালনকর্তার নিকট থেকে অবতীর্ণ।
[193] বিশ্বস্ত ফেরেশতা একে নিয়ে অবতরণ করেছে।
[194] আপনার অন্তরে, যাতে আপনি ভীতি প্রদর্শণকারীদের অন্তর্ভুক্ত হন,
[195] সুস্পষ্ট আরবী ভাষায়।
[196] নিশ্চয় এর উল্লেখ আছে পূর্ববর্তী কিতাবসমূহে।
[197] তাদের জন্যে এটা কি নিদর্শন নয় যে, বনী-ইসরাঈলের আলেমগণ এটা অবগত আছে?
[198] যদি আমি একে কোন ভিন্নভাষীর প্রতি অবতীর্ণ করতাম,
[199] অতঃপর তিনি তা তাদের কাছে পাঠ করতেন, তবে তারা তাতে বিশ্বাস স্থাপন করত না।
[200] এমনিভাবে আমি গোনাহগারদের অন্তরে অবিশ্বাস সঞ্চার করেছি।
[201] তারা এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে না, যে পর্যন্ত প্রত্যক্ষ না করে মর্মন্তুদ আযাব।
[202] অতঃপর তা আকস্মিকভাবে তাদের কাছে এসে পড়বে, তারা তা বুঝতে ও পারবে না।
[203] তখন তারা বলবে, আমরা কি অবকাশ পাব না?
[204] তারা কি আমার শাস্তি দ্রুত কামনা করে?
[205] আপনি ভেবে দেখুন তো, যদি আমি তাদেরকে বছরের পর বছর ভোগ-বিলাস করতে দেই,
[206] অতঃপর যে বিষয়ে তাদেরকে ওয়াদা দেয়া হত, তা তাদের কাছে এসে পড়ে।
[207] তখন তাদের ভোগ বিলাস তা তাদের কি কোন উপকারে আসবে?
[208] আমি কোন জনপদ ধ্বংস করিনি; কিন্তু এমতাবস্থায় যে, তারা সতর্ককারী ছিল।
[209] স্মরণ করানোর জন্যে, এবং আমার কাজ অন্যায়াচরণ নয়।
[210] এই কোরআন শয়তানরা অবতীর্ণ করেনি।
[211] তারা এ কাজের উপযুক্ত নয় এবং তারা এর সামর্থøও রাখে না।
[212] তাদেরকে তো শ্রবণের জায়গা থেকে দূরে রাখা রয়েছে।
[213] অতএব, আপনি আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যকে আহবান করবেন না। করলে শাস্তিতে পতিত হবেন।
[214] আপনি নিকটতম আত্মীয়দেরকে সতর্ক করে দিন।
[215] এবং আপনার অনুসারী মুমিনদের প্রতি সদয় হোন।
[216] যদি তারা আপনার অবাধ্য করে, তবে বলে দিন, তোমরা যা কর, তা থেকে আমি মুক্ত।
[217] আপনি ভরসা করুন পরাক্রমশালী, পরম দয়ালুর উপর,
[218] যিনি আপনাকে দেখেন যখন আপনি নামাযে দন্ডায়মান হন,
[219] এবং নামাযীদের সাথে উঠাবসা করেন।
[220] নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।
[221] আমি আপনাকে বলব কি কার নিকট শয়তানরা অবতরণ করে?
[222] তারা অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক মিথ্যাবাদী, গোনাহগারের উপর।
[223] তারা শ্রুত কথা এনে দেয় এবং তাদের অধিকাংশই মিথ্যাবাদী।
[224] বিভ্রান্ত লোকেরাই কবিদের অনুসরণ করে।
[225] তুমি কি দেখ না যে, তারা প্রতি ময়দানেই উদভ্রান্ত হয়ে ফিরে?
[226] এবং এমন কথা বলে, যা তারা করে না।
[227] তবে তাদের কথা ভিন্ন, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং আল্লাহ কে খুব স্মরণ করে এবং নিপীড়িত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে। নিপীড়নকারীরা শীঘ্রই জানতে পারবে তাদের গন্তব্যস্থল কিরূপ।
[1] ত্বা, সীন, মীম।
[2] এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত।
[3] তারা বিশ্বাস করে না বলে আপনি হয়তো মর্মব্যথায় আত্নঘাতী হবেন।
[4] আমি যদি ইচ্ছা করি, তবে আকাশ থেকে তাদের কাছে কোন নিদর্শন নাযিল করতে পারি। অতঃপর তারা এর সামনে নত হয়ে যাবে।
[5] যখনই তাদের কাছে রহমান এর কোন নতুন উপদেশ আসে, তখনই তারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
[6] অতএব তারা তো মিথ্যারোপ করেছেই; সুতরাং যে বিষয় নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করত, তার যথার্থ স্বরূপ শীঘ্রই তাদের কাছে পৌছবে।
[7] তারা কি ভুপৃষ্ঠের প্রতি দৃষ্টিপাত করে না? আমি তাতে সর্বপ্রকার বিশেষ-বস্তু কত উদগত করেছি।
[8] নিশ্চয় এতে নিদর্শন আছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
[9] আপনার পালনকর্তা তো পরাক্রমশালী পরম দয়ালু।
[10] যখন আপনার পালনকর্তা মূসাকে ডেকে বললেনঃ তুমি পাপিষ্ঠ সম্প্রদায়ের নিকট যাও;
[11] ফেরাউনের সম্প্রদায়ের নিকট; তারা কি ভয় করে না?
[12] সে বলল, হে আমার পালনকর্তা, আমার আশংকা হচ্ছে যে, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলে দেবে।
[13] এবং আমার মন হতবল হয়ে পড়ে এবং আমার জিহবা অচল হয়ে যায়। সুতরাং হারুনের কাছে বার্তা প্রেরণ করুন।
[14] আমার বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ আছে। অতএব আমি আশংকা করি যে, তারা আমাকে হত্যা করবে।
[15] আল্লাহ বলেন, কখনই নয় তোমরা উভয়ে যাও আমার নিদর্শনাবলী নিয়ে। আমি তোমাদের সাথে থেকে শোনব।
[16] অতএব তোমরা ফেরআউনের কাছে যাও এবং বল, আমরা বিশ্বজগতের পালনকর্তার রসূল।
[17] যাতে তুমি বনী-ইসরাঈলকে আমাদের সাথে যেতে দাও।
[18] ফেরাউন বলল, আমরা কি তোমাকে শিশু অবস্থায় আমাদের মধ্যে লালন-পালন করিনি? এবং তুমি আমাদের মধ্যে জীবনের বহু বছর কাটিয়েছ।
[19] তুমি সেই-তোমরা অপরাধ যা করবার করেছ। তুমি হলে কৃতঘ্ন।
[20] মূসা বলল, আমি সে অপরাধ তখন করেছি, যখন আমি ভ্রান্ত ছিলাম।
[21] অতঃপর আমি ভীত হয়ে তোমাদের কাছ থেকে পলায়ন করলাম। এরপর আমার পালনকর্তা আমাকে প্রজ্ঞা দান করেছেন এবং আমাকে পয়গম্বর করেছেন।
[22] আমার প্রতি তোমার যে অনুগ্রহের কথা বলছ, তা এই যে, তুমি বনী-ইসলাঈলকে গোলাম বানিয়ে রেখেছ।
[23] ফেরাউন বলল, বিশ্বজগতের পালনকর্তা আবার কি?
[24] মূসা বলল, তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুর পালনকর্তা যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।
[25] ফেরাউন তার পরিষদবর্গকে বলল, তোমরা কি শুনছ না?
[26] মূসা বলল, তিনি তোমাদের পালনকর্তা এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরও পালনকর্তা।
[27] ফেরাউন বলল, তোমাদের প্রতি প্রেরিত তোমাদের রসূলটি নিশ্চয়ই বদ্ধ পাগল।
[28] মূসা বলল, তিনি পূর্ব, পশ্চিম ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সব কিছুর পালনকর্তা, যদি তোমরা বোঝ।
[29] ফেরাউন বলল, তুমি যদি আমার পরিবর্তে অন্যকে উপাস্যরূপে গ্রহণ কর তবে আমি অবশ্যই তোমাকে কারাগারে নিক্ষেপ করব।
[30] মূসা বলল, আমি তোমার কাছে কোন স্পষ্ট বিষয় নিয়ে আগমন করলেও কি?
[31] ফেরাউন বলল, তুমি সত্যবাদী হলে তা উপস্থিত কর।
[32] অতঃপর তিনি লাঠি নিক্ষেপ করলে মুহূর্তের মধ্যে তা সুস্পষ্ট অজগর হয়ে গেল।
[33] আর তিনি তার হাত বের করলেন, তৎক্ষণাৎ তা দর্শকদের কাছে সুশুভ্র প্রতিভাত হলো।
[34] ফেরাউন তার পরিষদবর্গকে বলল, নিশ্চয় এ একজন সুদক্ষ জাদুকর।
[35] সে তার জাদু বলে তোমাদেরকে তোমাদের দেশ থেকে বহিস্কার করতে চায়। অতএব তোমাদের মত কি?
[36] তারা বলল, তাকে ও তার ভাইকে কিছু অবকাশ দিন এবং শহরে শহরে ঘোষক প্রেরণ করুন।
[37] তারা যেন আপনার কাছে প্রত্যেকটি দক্ষ জাদুকর কে উপস্থিত করে।
[38] অতঃপর এক নির্দিষ্ট দিনে জাদুকরদেরকে একত্রিত করা হল।
[39] এবং জনগণের মধ্যে ঘোষণা করা হল, তোমরাও সমবেত হও।
[40] যাতে আমরা জাদুকরদের অনুসরণ করতে পারি-যদি তারাই বিজয়ী হয়।
[41] যখন যাদুকররা আগমণ করল, তখন ফেরআউনকে বলল, যদি আমরা বিজয়ী হই, তবে আমরা পুরস্কার পাব তো?
[42] ফেরাউন বলল, হঁ্যা এবং তখন তোমরা আমার নৈকট্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
[43] মূসা (আঃ) তাদেরকে বললেন, নিক্ষেপ কর তোমরা যা নিক্ষেপ করবে।
[44] অতঃপর তারা তাদের রশি ও লাঠি নিক্ষেপ করল এবং বলল, ফেরাউনের ইযযতের কসম, আমরাই বিজয়ী হব।
[45] অতঃপর মূসা তাঁর লাঠি নিক্ষেপ করল, হঠাৎ তা তাদের অলীক কীর্তিগুলোকে গ্রাস করতে লাগল।
[46] তখন জাদুকররা সেজদায় নত হয়ে গেল।
[47] তারা বলল, আমরা রাব্বুল আলামীনের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলাম।
[48] যিনি মূসা ও হারুনের রব।
[49] ফেরাউন বলল, আমার অনুমতি দানের পূর্বেই তোমরা কি তাকে মেনে নিলে? নিশ্চয় সে তোমাদের প্রধান, যে তোমাদেরকে জাদু শিক্ষা দিয়েছে। শীঘ্রই তোমরা পরিণাম জানতে পারবে। আমি অবশ্যই তোমাদের হাত ও পা বিপরীত দিক থেকে কর্তন করব। এবং তোমাদের সবাইকে শূলে চড়াব।
[50] তারা বলল, কোন ক্ষতি নেই। আমরা আমাদের পালনকর্তার কাছে প্রত্যাবর্তন করব।
[51] আমরা আশা করি, আমাদের পালনকর্তা আমাদের ক্রটি-বিচ্যুতি মার্জনা করবেন। কারণ, আমরা বিশ্বাস স্থাপনকারীদের মধ্যে অগ্রণী।
[52] আমি মূসাকে আদেশ করলাম যে, আমার বান্দাদেরকে নিয়ে রাত্রিযোগে বের হয়ে যাও, নিশ্চয় তোমাদের পশ্চাদ্ধাবন করা হবে।
[53] অতঃপর ফেরাউন শহরে শহরে সংগ্রাহকদেরকে প্রেরণ করল,
[54] নিশ্চয় এরা (বনী-ইসরাঈলরা) ক্ষুদ্র একটি দল।
[55] এবং তারা আমাদের ক্রোধের উদ্রেক করেছে।
[56] এবং আমরা সবাই সদা শংকিত।
[57] অতঃপর আমি ফেরআউনের দলকে তাদের বাগ-বাগিচা ও ঝর্ণাসমূহ থেকে বহিষ্কার করলাম।
[58] এবং ধন-ভান্ডার ও মনোরম স্থানসমূহ থেকে।
[59] এরূপই হয়েছিল এবং বনী-ইসলাঈলকে করে দিলাম এসবের মালিক।
[60] অতঃপর সুর্যোদয়ের সময় তারা তাদের পশ্চাদ্ধাবন করল।
[61] যখন উভয় দল পরস্পরকে দেখল, তখন মূসার সঙ্গীরা বলল, আমরা যে ধরা পড়ে গেলাম।
[62] মূসা বলল, কখনই নয়, আমার সাথে আছেন আমার পালনকর্তা। তিনি আমাকে পথ বলে দেবেন।
[63] অতঃপর আমি মূসাকে আদেশ করলাম, তোমার লাঠি দ্বারা সমূদ্রকে আঘাত কর। ফলে, তা বিদীর্ণ হয়ে গেল এবং প্রত্যেক ভাগ বিশাল পর্বতসদৃশ হয়ে গেল।
[64] আমি সেথায় অপর দলকে পৌঁছিয়ে দিলাম।
[65] এবং মূসা ও তাঁর সংগীদের সবাইকে বাঁচিয়ে দিলাম।
[66] অতঃপর অপর দলটিকে নিমজ্জত কললাম।
[67] নিশ্চয় এতে একটি নিদর্শন আছে এবং তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী ছিল না।
[68] আপনার পালনকর্তা অবশ্যই পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[69] আর তাদেরকে ইব্রাহীমের বৃত্তান্ত শুনিয়ে দিন।
[70] যখন তাঁর পিতাকে এবং তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন, তোমরা কিসের এবাদত কর?
[71] তারা বলল, আমরা প্রতিমার পূজা করি এবং সারাদিন এদেরকেই নিষ্ঠার সাথে আঁকড়ে থাকি।
[72] ইব্রাহীম (আঃ) বললেন, তোমরা যখন আহবান কর, তখন তারা শোনে কি?
[73] অথবা তারা কি তোমাদের উপকার কিংবা ক্ষতি করতে পারে?
[74] তারা বললঃ না, তবে আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে পেয়েছি, তারা এরূপই করত।
[75] ইব্রাহীম বললেন, তোমরা কি তাদের সম্পর্কে ভেবে দেখেছ, যাদের পূজা করে আসছ।
[76] তোমরা এবং তোমাদের পূর্ববর্তী পিতৃপুরুষেরা ?
[77] বিশ্বপালনকর্তা ব্যতীত তারা সবাই আমার শত্রু।
[78] যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনিই আমাকে পথপ্রদর্শন করেন,
[79] যিনি আমাকে আহার এবং পানীয় দান করেন,
[80] যখন আমি রোগাক্রান্ত হই, তখন তিনিই আরোগ্য দান করেন।
[81] যিনি আমার মৃত্যু ঘটাবেন, অতঃপর পুনর্জীবন দান করবেন।
[82] আমি আশা করি তিনিই বিচারের দিনে আমার ক্রটি-বিচ্যুতি মাফ করবেন।
[83] হে আমার পালনকর্তা, আমাকে প্রজ্ঞা দান কর এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত কর
[84] এবং আমাকে পরবর্তীদের মধ্যে সত্যভাষী কর।
[85] এবং আমাকে নেয়ামত উদ্যানের অধিকারীদের অন্তর্ভূক্ত কর।
[86] এবং আমার পিতাকে ক্ষমা কর। সে তো পথভ্রষ্টদের অন্যতম।
[87] এবং পূনরুত্থান দিবসে আমাকে লাঞ্ছিত করো না,
[88] যে দিবসে ধন-সম্পদ ও সন্তান সন্ততি কোন উপকারে আসবে না;
[89] কিন্তু যে সুস্থ অন্তর নিয়ে আল্লাহর কাছে আসবে।
[90] জান্নাত আল্লাহভীরুদের নিকটবর্তী করা হবে।
[91] এবং বিপথগামীদের সামনে উম্মোচিত করা হবে জাহান্নাম।
[92] তাদেরকে বলা হবেঃ তারা কোথায়, তোমরা যাদের পূজা করতে।
[93] আল্লাহর পরিবর্তে? তারা কি তোমাদের সাহায্য করতে পারে, অথবা তারা প্রতিশোধ নিতে পারে?
[94] অতঃপর তাদেরকে এবং পথভ্রষ্টদেরকে আধোমুখি করে নিক্ষেপ করা হবে জাহান্নামে।
[95] এবং ইবলীস বাহিনীর সকলকে।
[96] তারা তথায় কথা কাটাকাটিতে লিপ্ত হয়ে বলবেঃ
[97] আল্লাহর কসম, আমরা প্রকাশ্য বিভ্রান্তিতে লিপ্ত ছিলাম।
[98] যখন আমরা তোমাদেরকে বিশ্ব-পালনকর্তার সমতুল্য গন্য করতাম।
[99] আমাদেরকে দুষ্টকর্মীরাই গোমরাহ করেছিল।
[100] অতএব আমাদের কোন সুপারিশকারী নেই।
[101] এবং কোন সহৃদয় বন্ধু ও নেই।
[102] হায়, যদি কোনরুপে আমরা পৃথিবীতে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ পেতাম, তবে আমরা বিশ্বাস স্থাপনকারী হয়ে যেতাম।
[103] নিশ্চয়, এতে নিদর্শন আছে এবং তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
[104] আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[105] নূহের সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যারোপ করেছে।
[106] যখন তাদের ভ্রাতা নূহ তাদেরকে বললেন, তোমাদের কি ভয় নেই?
[107] আমি তোমাদের জন্য বিশ্বস্ত বার্তাবাহক।
[108] অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
[109] আমি তোমাদের কাছে এর জন্য কোন প্রতিদান চাই না, আমার প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তাই দেবেন।
[110] অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
[111] তারা বলল, আমরা কি তোমাকে মেনে নেব যখন তোমার অনুসরণ করছে ইতরজনেরা?
[112] নূহ বললেন, তারা কি কাজ করছে, তা জানা আমার কি দরকার?
[113] তাদের হিসাব নেয়া আমার পালনকর্তারই কাজ; যদি তোমরা বুঝতে!
[114] আমি মুমিনগণকে তাড়িয়ে দেয়ার লোক নই।
[115] আমি তো শুধু একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
[116] তারা বলল, হে নূহ যদি তুমি বিরত না হও, তবে তুমি নিশ্চিতই প্রস্তরাঘাতে নিহত হবে।
[117] নূহ বললেন, হে আমার পালনকর্তা, আমার সম্প্রদায় তো আমাকে মিথ্যাবাদী বলছে।
[118] অতএব, আমার ও তাদের মধ্যে কোন ফয়সালা করে দিন এবং আমাকে ও আমার সংগী মুমিনগণকে রক্ষা করুন।
[119] অতঃপর আমি তাঁকে ও তাঁর সঙ্গিগণকে বোঝাই করা নৌকায় রক্ষা করলাম।
[120] এরপর অবশিষ্ট সবাইকে নিমজ্জত করলাম।
[121] নিশ্চয় এতে নিদর্শন আছে এবং তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
[122] নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[123] আদ সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
[124] তখন তাদের ভাই হুদ তাদেরকে বললেনঃ তোমাদের কি ভয় নেই?
[125] আমি তোমাদের বিশ্বস্ত রসূল।
[126] অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
[127] আমি তোমাদের কাছে এর জন্যে প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান তো পালনকর্তা দেবেন।
[128] তোমরা কি প্রতিটি উচ্চস্থানে অযথা নিদর্শন নির্মান করছ?
[129] এবং বড় বড় প্রাসাদ নির্মাণ করছ, যেন তোমরা চিরকাল থাকবে?
[130] যখন তোমরা আঘাত হান, তখন জালেম ও নিষ্ঠুরের মত আঘাত হান।
[131] অতএব, আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার অনুগত্য কর।
[132] ভয় কর তাঁকে, যিনি তোমাদেরকে সেসব বস্তু দিয়েছেন, যা তোমরা জান।
[133] তোমাদেরকে দিয়েছেন চতুষ্পদ জন্তু ও পুত্র-সন্তান,
[134] এবং উদ্যান ও ঝরণা।
[135] আমি তোমাদের জন্যে মহাদিবসের শাস্তি আশংকা করি।
[136] তারা বলল, তুমি উপদেশ দাও অথবা উপদেশ নাই দাও, উভয়ই আমাদের জন্যে সমান।
[137] এসব কথাবার্তা পূর্ববর্তী লোকদের অভ্যাস বৈ নয়।
[138] আমরা শাস্তিপ্রাপ্ত হব না।
[139] অতএব, তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী বলতে লাগল এবং আমি তাদেরকে নিপাত করে দিলাম। এতে অবশ্যই নিদর্শন আছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
[140] এবং আপনার পালনকর্তা, তিনি তো প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[141] সামুদ সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
[142] যখন তাদের ভাই সালেহ, তাদেরকে বললেন, তোমরা কি ভয় কর না?
[143] আমি তোমাদের বিশ্বস্ত পয়গম্বর।
[144] অতএব, আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
[145] আমি এর জন্যে তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তাই দেবেন।
[146] তোমাদেরকে কি এ জগতের ভোগ-বিলাসের মধ্যে নিরাপদে রেখে দেয়া হবে?
[147] উদ্যানসমূহের মধ্যে এবং ঝরণাসমূহের মধ্যে ?
[148] শস্যক্ষেত্রের মধ্যে এবং মঞ্জুরিত খেজুর বাগানের মধ্যে ?
[149] তোমরা পাহাড় কেটে জাঁক জমকের গৃহ নির্মাণ করছ।
[150] সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার অনুগত্য কর।
[151] এবং সীমালংঘনকারীদের আদেশ মান্য কর না;
[152] যারা পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করে এবং শান্তি স্থাপন করে না;
[153] তারা বলল, তুমি তো জাদুগ্রস্থুরেদ একজন।
[154] তুমি তো আমাদের মতই একজন মানুষ বৈ নও। সুতরাং যদি তুমি সত্যবাদী হও, তবে কোন নিদর্শন উপস্থিত কর।
[155] সালেহ বললেন এই উষ্ট্রী, এর জন্যে আছে পানি পানের পালা এবং তোমাদের জন্যে আছে পানি পানের পালা নির্দিষ্ট এক-এক দিনের।
[156] তোমরা একে কোন কষ্ট দিও না। তাহলে তোমাদেরকে মহাদিবসের আযাব পাকড়াও করবে।
[157] তারা তাকে বধ করল ফলে, তারা অনুতপ্ত হয়ে গেল।
[158] এরপর আযাব তাদেরকে পাকড়াও করল। নিশ্চয় এতে নিদর্শন আছে। কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
[159] আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[160] লূতের সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
[161] যখন তাদের ভাই লূত তাদেরকে বললেন, তোমরা কি ভয় কর না ?
[162] আমি তোমাদের বিশ্বস্ত পয়গম্বর।
[163] অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
[164] আমি এর জন্যে তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তা দেবেন।
[165] সারা জাহানের মানুষের মধ্যে তোমরাই কি পুরূষদের সাথে কুকর্ম কর?
[166] এবং তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের জন্যে যে স্ত্রীগনকে সৃষ্টি করেছেন, তাদেরকে বর্জন কর? বরং তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়।
[167] তারা বলল, হে লূত, তুমি যদি বিরত না হও, তবে অবশ্যই তোমাকে বহিস্কৃত করা হবে।
[168] লূত বললেন, আমি তোমাদের এই কাজকে ঘৃণা করি।
[169] হে আমার পালনকর্তা, আমাকে এবং আমার পরিবারবর্গকে তারা যা করে, তা থেকে রক্ষা কর।
[170] অতঃপর আমি তাঁকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে রক্ষা করলাম।
[171] এক বৃদ্ধা ব্যতীত, সে ছিল ধ্বংস প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত।
[172] এরপর অন্যদেরকে নিপাত করলাম।
[173] তাদের উপর এক বিশেষ বৃষ্টি বর্ষণ করলাম। ভীতি-প্রদর্শিত দের জন্যে এই বৃষ্টি ছিল কত নিকৃষ্ট।
[174] নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
[175] নিশ্চয়ই আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[176] বনের অধিবাসীরা পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
[177] যখন শো’আয়ব তাদের কে বললেন, তোমরা কি ভয় কর না?
[178] আমি তোমাদের বিশ্বস্ত পয়গম্বর।
[179] অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
[180] আমি তোমাদের কাছে এর জন্য কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তাই দেবেন।
[181] মাপ পূর্ণ কর এবং যারা পরিমাপে কম দেয়, তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।
[182] সোজা দাঁড়ি-পাল্লায় ওজন কর।
[183] মানুষকে তাদের বস্তু কম দিও না এবং পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করে ফিরো না।
[184] ভয় কর তাঁকে, যিনি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তী লোক-সম্প্রদায়কে সৃষ্টি করেছেন।
[185] তারা বলল, তুমি তো জাদুগ্রস্তদের অন্যতম।
[186] তুমি আমাদের মত মানুষ বৈ তো নও। আমাদের ধারণা-তুমি মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।
[187] অতএব, যদি সত্যবাদী হও, তবে আকাশের কোন টুকরো আমাদের উপর ফেলে দাও।
[188] শো’আয়ব বললেন, তোমরা যা কর, সে সম্পর্কে আমার পালনকর্তা ভালরূপে অবহিত।
[189] অতঃপর তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী বলে দিল। ফলে তাদেরকে মেঘাচ্ছন্ন দিবসের আযাব পাকড়াও করল। নিশ্চয় সেটা ছিল এক মহাদিবসের আযাব।
[190] নিশ্চয় এতে নিদর্শন রয়েছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাস করে না।
[191] নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[192] এই কোরআন তো বিশ্ব-জাহানের পালনকর্তার নিকট থেকে অবতীর্ণ।
[193] বিশ্বস্ত ফেরেশতা একে নিয়ে অবতরণ করেছে।
[194] আপনার অন্তরে, যাতে আপনি ভীতি প্রদর্শণকারীদের অন্তর্ভুক্ত হন,
[195] সুস্পষ্ট আরবী ভাষায়।
[196] নিশ্চয় এর উল্লেখ আছে পূর্ববর্তী কিতাবসমূহে।
[197] তাদের জন্যে এটা কি নিদর্শন নয় যে, বনী-ইসরাঈলের আলেমগণ এটা অবগত আছে?
[198] যদি আমি একে কোন ভিন্নভাষীর প্রতি অবতীর্ণ করতাম,
[199] অতঃপর তিনি তা তাদের কাছে পাঠ করতেন, তবে তারা তাতে বিশ্বাস স্থাপন করত না।
[200] এমনিভাবে আমি গোনাহগারদের অন্তরে অবিশ্বাস সঞ্চার করেছি।
[201] তারা এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে না, যে পর্যন্ত প্রত্যক্ষ না করে মর্মন্তুদ আযাব।
[202] অতঃপর তা আকস্মিকভাবে তাদের কাছে এসে পড়বে, তারা তা বুঝতে ও পারবে না।
[203] তখন তারা বলবে, আমরা কি অবকাশ পাব না?
[204] তারা কি আমার শাস্তি দ্রুত কামনা করে?
[205] আপনি ভেবে দেখুন তো, যদি আমি তাদেরকে বছরের পর বছর ভোগ-বিলাস করতে দেই,
[206] অতঃপর যে বিষয়ে তাদেরকে ওয়াদা দেয়া হত, তা তাদের কাছে এসে পড়ে।
[207] তখন তাদের ভোগ বিলাস তা তাদের কি কোন উপকারে আসবে?
[208] আমি কোন জনপদ ধ্বংস করিনি; কিন্তু এমতাবস্থায় যে, তারা সতর্ককারী ছিল।
[209] স্মরণ করানোর জন্যে, এবং আমার কাজ অন্যায়াচরণ নয়।
[210] এই কোরআন শয়তানরা অবতীর্ণ করেনি।
[211] তারা এ কাজের উপযুক্ত নয় এবং তারা এর সামর্থøও রাখে না।
[212] তাদেরকে তো শ্রবণের জায়গা থেকে দূরে রাখা রয়েছে।
[213] অতএব, আপনি আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যকে আহবান করবেন না। করলে শাস্তিতে পতিত হবেন।
[214] আপনি নিকটতম আত্মীয়দেরকে সতর্ক করে দিন।
[215] এবং আপনার অনুসারী মুমিনদের প্রতি সদয় হোন।
[216] যদি তারা আপনার অবাধ্য করে, তবে বলে দিন, তোমরা যা কর, তা থেকে আমি মুক্ত।
[217] আপনি ভরসা করুন পরাক্রমশালী, পরম দয়ালুর উপর,
[218] যিনি আপনাকে দেখেন যখন আপনি নামাযে দন্ডায়মান হন,
[219] এবং নামাযীদের সাথে উঠাবসা করেন।
[220] নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।
[221] আমি আপনাকে বলব কি কার নিকট শয়তানরা অবতরণ করে?
[222] তারা অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক মিথ্যাবাদী, গোনাহগারের উপর।
[223] তারা শ্রুত কথা এনে দেয় এবং তাদের অধিকাংশই মিথ্যাবাদী।
[224] বিভ্রান্ত লোকেরাই কবিদের অনুসরণ করে।
[225] তুমি কি দেখ না যে, তারা প্রতি ময়দানেই উদভ্রান্ত হয়ে ফিরে?
[226] এবং এমন কথা বলে, যা তারা করে না।
[227] তবে তাদের কথা ভিন্ন, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং আল্লাহ কে খুব স্মরণ করে এবং নিপীড়িত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে। নিপীড়নকারীরা শীঘ্রই জানতে পারবে তাদের গন্তব্যস্থল কিরূপ।