ডকুমেন্ট পড়ুন: দুআ-মুনাজাত : কখন ও কিভাবে ▐ নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লামের নামায আদায়ের পদ্ধতি ▐ কুরআনের আলোকে যাকাতের বিধান ▐ গুরুত্বপূর্ণ দোআ সমূহ ▐ কবরের আযাব ▐ আল কুরআনের আলোকে আল্লাহর পথে দানের গুরুত্ব ▐ ঈমান সুদৃঢ় রাখার কিছু উপায় ▐ আল্লাহর হক ▐ জান্নাতে প্রবেশের কিছু উপায়▐ নামাযে প্রচলিত ভুল-ত্রুটি ▐ আমাদের দেশে প্রচলিত কয়েকটি বড় ধরনের বিদ'আত ▐ পুন্যের অসংখ্য পথ ▐ কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত ▐ যদি সবকিছু পূর্ব নির্ধারিত হয়ে থাকে তাহলে সেগুলো সম্পাদনের জন্যে মানুষকে জবাবদিহি করতে হবে কেন ? ▐ তাওবার ফজিলত ▐ মা-বাবার মৃত্যুর পর তাদের জন্য করণীয় আমলসূমহ ▐ অন্তর বিধ্বংসী বিষয়সমূহ : অহংকার ▐ কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে তাওবা ও পাপ মোচনকারী কিছু আমল ▐ দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শনের ব্যাপারে ইসলামের বিধান ▐ একশটি কবীরা গুনাহ ▐ ফতোওয়া যাকাত: যাকাত বিষয়ক অতি গুরুত্বপূর্ণ ৩৭টি প্রশ্নোত্তর ▐ মৃত-ব্যক্তির জন্য করণীয় কাজের মাসনূন পদ্ধতি ▐ দান-ছদকার ফযীলত ▐ ইসলামে নারীর যৌন অধিকার ▐ আমরা যেভাবে আল্লাহ্‌র নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করব ▐ কুরআন ও সুন্নাহ্‌র আলোকে জান্নাত ও জাহান্নাম ▐ সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ: গুরুত্ব ও তাৎপর্য ▐ প্রশ্নোত্তরে সহজ তাওহীদ শিক্ষা ▐ বিয়ের প্রস্তাব : করণীয় ও বর্জনীয় ▐ কোরআন-হাদীসের আলোকে শাফাআত ▐ মিউজিক কি হারাম ? ▐ যে সকল কারণে একজন মুসলমান ইসলামচ্যুত হয়ে যায় তথা কাফির হয়ে যায় ▐ বিপদে ধৈর্যধারণ : দশটি উপদেশ ▐ পবিত্রতা সম্পর্কে অতি গুরুত্বপূর্ণ ৬২টি প্রশ্নোত্তর ▐ দো‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কতিপয় দো‘আর নমুনা ▐ যে সব ভুল-ভ্রান্তির কারণে দু'আ কবুল হয়না ▐ কল্যাণকর কাজে উদ্বুদ্ধকারী কতিপয় হাদীস ▐ বাংলাদেশে প্রচলিত শির্ক বিদ‘আত ও কুসংস্কার পর্যালোচনা ▐ তাহাজ্জুদ নামায পড়ার ফযীলত ▐ ইসলামে খাবার গ্রহণের আদব ▐





Peace TV Bangla Live

শনিবার, ২০ অক্টোবর, ২০১২

আল্লাহর হক


আল্লাহ তাআলার হক বা প্রাপ্য
Posted by QuranerAlo.com 

প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন না

লিখেছেনঃ সানাউল্লাহ নজির আহমদ । ওয়েব সম্পাদনাঃ মোঃ মাহমুদ ইবন গাফফার

আল্লাহ তাআলা স্বীয় বান্দাদের জলে-স্থলে, শরীরে ও দিগন্ত জুড়ে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য নেয়ামতরাজি দ্বারা আবৃত করে রেখেছেন। তিনি এরশাদ করেন—

‘তোমরা কি দেখ না আল্লাহ তাআলা নভোমন্ডল ও ভূ-মণ্ডলে যা কিছু আছে, সবই তোমাদের কাজে নিয়োজিত করে দিয়েছেন এবং তোমাদের প্রতি তার প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য নেয়ামতসমূহ পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন ?’ [১]



অন্যত্র বলেন—

‘যে সকল বস্তু তোমরা চেয়েছ, তার প্রত্যেকটি-ই তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন। যদি আল্লাহর নেয়ামত গণনা কর, তবে গুণে শেষ করতে পারবে না। আফসোস ! মানুষ সীমাহীন অন্যায় পরায়ন, অকৃতজ্ঞ।' [২]



‘যদি আল্লাহর নেয়ামত গণনা কর, তবে গুণে শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।’ [৩]



তবে বান্দার উপর সবচেয়ে বড় নেয়ামত : রাসূল সা.-কে প্রেরণ করা, কিতাব অবতীর্ণ করা ও ইসলামের হেদায়াত দান করা। এ জন্য বান্দা হিসেবে আমাদের উপর ওয়াজিব আল্লাহ তাআলার প্রাপ্য অধিকার বা হকসমূহ জানা। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আবশ্যকীয় ও বাধ্যতামূলক হকসমূহ আদায়ের প্রতি যত্নবান থাকা। নিম্নে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি হক তথা অধিকারের বিবরণ তুলে ধরা হলো :—



প্রথম অধিকার : আল্লাহ তাআলার উপর ঈমান আনা
আল্লাহ তাআলার উপর ঈমান চারটি জিনিস অন্তর্ভুক্ত করে :—



এক : আল্লাহ তাআলার অস্তিত্বের ঈমান বা বিশ্বাস:
দলিল-প্রমাণাদির ভিত্তিতে বিশ্বাস স্থাপন করা, অবোধ কিংবা অন্ধ ভাবে নয় : যেমন—

আল্লাহ তাআলার মাখলুকাত তথা সৃষ্টি জগত দেখে তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। যেহেতু স্রষ্টা ছাড়া কোন সৃষ্টি নিজেকে নিজে সৃষ্টি করতে কিংবা অস্তিত্বে আনতে পারে না—কারণ প্রত্যেক জিনিসই তার অস্তিত্বের পূর্বে বিলুপ্ত, অবিদ্যমান ও অস্তিত্বহীন থাকে—বিধায় সৃষ্টি করার প্রশ্নই আসে না। আবার কোন জিনিস হঠাৎ বা আকস্মিকভাবে অস্তিত্বে বা দৃশ্যপটে চলে আসবে তাও সম্ভব নয়। কারণ প্রতিটি ঘটমান বস্তু বা সম্পাদিত কাজের নেপথ্যে সংঘটক বা সম্পাদনকারী থাকা জরুরি।



অতএব, যখন আমরা জানতে পারলাম এ বিশ্বজগত নিজে-নিজেই দৃশ্যপটে চলে আসেনি, আবার অকস্মাৎ তৈরি হয়েও যায়নি, তাই আমাদের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে পরিষ্কার হয়ে গেল, এর একজন স্রষ্টা রয়েছেন। আর তিনি হলেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন।



দুই : রুবুবিয়্যাতের ঈমান :
আল্লাহ তাআলার রুবুবিয়্যাতের উপর ঈমান রাখা—অর্থাৎ সৃষ্টি তার, মালিকানা তার, পরিচালনার দায়িত্ব তার, তিনি ছাড়া কেউ মালিক নয়, কেউ পরিচালনাকারী নয়। এরশাদ হচ্ছে—

‘শুনে রেখ, তারই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ করা।’ [৪]



আরো বলেন—

‘তিনিই আল্লাহ ! তোমাদের পালনকর্র্তা, সাম্রাজ্য তারই। তার পরিবর্তে তোমরা যাদেরকে ডাক, তারা তুচ্ছ খেজুর আটিরও অধিকারী নয়।’ [৫]



দুনিয়ার ইতিহাসে এমন কাউকে পাওয়া যায়নি যে, অন্তরের সাক্ষ্য, প্রাকৃতিক বাস্তবতার প্রতি দৃষ্টিপাত করে আল্লাহ তাআলার রুবুবিয়্যাতকে অস্বীকার করেছে। তবে এমন অনেকেই আছে, যারা জেদ ধরে অহংকার বশত, নিজের কথায় আস্থা না থাকা সত্ত্বেও আল্লাহ তাআলার রুবুবিয়্যাত অস্বীকার করেছে। যেমন- ফেরআউন তার সম্প্রদায়কে বলেছিল—

‘আমিই তোমাদের সেরা পালনকর্তা।’ [৬]



অন্য জায়গায় বলেন—

‘হে পরিষদবর্গ, আমি জানি না যে আমি ব্যতীত তোমাদের কোন উপাস্য আছে কি-না। [৭]



ফেরআউন নিজের উপর আস্থা কিংবা বিশ্বাস রেখে একথা বলেনি, কারণ আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেন—

‘তারা অহংকার করে নিদর্শনাবলী প্রত্যাখ্যান করল, যদিও তাদের অন্তর এগুলোকে সত্য বলে বিশ্বাস করেছিল।’ [৮]



মূসা আ. ফেরআউনকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন—

‘তুমি জান, যে আসমান ও জমিনের পালনকর্তাই এসব নিদর্শনাবলী প্রত্যক্ষ প্রমাণ স্বরূপ নাজিল করেছেন। হে ফেরআউন, আমার ধারণা তুমি ধ্বংস হতে চলেছ।’ [৯]



এর দ্বারা প্রমাণিত হলো যে মুশরিকরা আল্লাহ তাআলার ‘উলুহিয়্যাতে’ শরিক করেও ‘রুবুবিয়্যাতে’-কে স্বীকার করতো। আল্লাহ তাআলা বলেন—

‘বলুন, পৃথিবী এবং পৃথিবীতে যারা আছে, তারা কারা ? যদি তোমরা জান, তবে বল। এখন তারা বলবে : সবই আল্লাহর। বলুন, তবুও কি তোমরা চিন্তা করো না ? বলুন : সপ্ত আকাশ ও মহা-আরশের মালিক কে ? এখন তারা বলবে : আল্লাহ। বলুন, তবুও কি তোমরা ভয় করবে না ? বলুন : তোমাদের জানা থাকলে বল, কার হাতে সব বস্তুর কর্তৃত্ব, যিনি রক্ষা করেন এবং যার কবল থেকে কেউ রক্ষা করতে পারে না। এখন তারা বলবে আল্লাহর। বলুন : তাহলে কোথা থেকে তোমাদেরকে জাদু করা হচ্ছে ?’ [১০]



অন্যত্র এরশাদ হচ্ছে—

‘আপনি যদি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন কে নভোমন্ডল ও ভূ-মণ্ডল সৃষ্টি করেছে ? তারা অবশ্যই বলবে, এগুলো সৃষ্টি করেছেন পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহ।’ [১১]



আরো এরশাদ হচ্ছে—

‘আপনি যদি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, কে তাদেরকে সৃষ্টি করেছে ? তবে অবশ্যই তারা বলবে আল্লাহ।’ [১২]



তিন : আল্লাহ তাআলার উলুহিয়্যাতের ঈমান :—
অর্থাৎ ‘আল্লাহ সুবহানাহু ও তাআলাই একমাত্র উপাস্য’ এ কথার উপর ঈমান রাখা। যথা তিনি সত্যিকারার্থে প্রভু। বিনয় ও মহব্বত সম্বলিত এবাদতের উপযুক্ত। তিনি ছাড়া কেউ এবাদতের উপযুক্ত নয়। এরশাদ হচ্ছে—

‘আর তোমাদের উপাস্য একমাত্র তিনিই। তিনি ছাড়া মহান করুণাময় দয়ালু কেউ নেই।’ [১৩]



আরো এরশাদ হচ্ছে—

‘পৃথক পৃথক অনেক উপাস্য ভাল, না পরাক্রমশালী এক আল্লাহ ? তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে নিছক কতগুলো নামের এবাদত কর, সেগুলো তোমরা এবং তোমাদের বাপ-দাদারা সাব্যস্ত করে নিয়েছ। আল্লাহ এদের ব্যাপারে কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি।’ [১৪]



আল্লাহ তাআলা উল্লেখিত জিনিসগুলোর প্রভুত্ব কিছু যুক্তির মাধ্যমে খণ্ডন করেছেন :—

[১] মুশরিকরা যে সমস্ত বস্তুকে প্রভু বানিয়েছিল, তাদের ভিতর প্রভুত্বের কোন গুণ বিদ্যমান নেই। এগুলো সৃষ্টি করতে পারে না, কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না এবং তাদেরকে অনিষ্ট হতে রক্ষা করতে পারে না। এরা তাদের জীবন-মৃত্যুর মালিক নয়। আসমান-জমিনের মাঝে কোন জিনিসের মালিক নয় এবং এতে তাদের অংশীদারিত্বও নেই। এরশাদ হচ্ছে—

‘তারা তার পরিবর্তে কত উপাস্য গ্রহণ করেছে, যারা কিছুই সৃষ্টি করে না এবং তারা নিজেরাই সৃষ্ট, নিজেদের ভালও করতে পারে না, মন্দও করতে পারে না। জীবন, মরণ এবং পুনরুজ্জীবনেরও মালিক নয় তারা।’ [১৫]



আরো এরশাদ হচ্ছে—

‘তারা কি এমন কাউকে শরিক সাব্যস্ত করে যে একটি বস্তুও সৃষ্টি করেনি বরং তাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে ? আর তারা না তাদের সাহায্য করতে পারে, না নিজের সাহায্য করতে পারে !’ [১৬]



তাদের বানানো প্রভুদের এমন অসহায়ত্ব ও দুরবস্থা প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহ তাআলাকে বাদ দিয়ে এগুলোকে প্রভু বানানো নিরেট বোকামি, চরম বাতুলতা।



[২] মুশরিকরা বিশ্বাস করতো—আল্লাহ তাআলাই প্রতিপালক, সৃষ্টিকর্তা, তার হাতেই সমস্ত জিনিসের মালিকানা, তিনি রক্ষা করেন, তার কবল হতে কেউ রক্ষা করতে পারে না। এরশাদ হচ্ছে—

‘আপনি যদি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন কে তাদেরকে সৃষ্টি করেছে ? তাহলে অবশ্যই তারা বলবে, আল্লাহ।’ [১৭]



আরো এরশাদ হচ্ছে—

‘তুমি জিজ্ঞেস কর, কে রুজি দান করে তোমাদেরকে আসমান থেকে ও জমিন থেকে, কিংবা কে তোমাদের কান ও চোখের মালিক ? তাছাড়া কে জীবিতকে মৃতের ভেতর থেকে বের করেন ? এবং কেইবা মৃতকে জীবিতের মধ্য থেকে বের করেন ? কে করেন কর্ম-সম্পাদনের ব্যবস্থাপনা ? তখন তারা বলে উঠবে, আল্লাহ ! তুমি বল, তারপরেও ভয় করছ না ?’ [১৮]



তারা যখন নিজেরাই এর সাক্ষ্য প্রদান করল, যুক্তির ভিত্তিতে এখন তাদের অবশ্য কর্তব্য একমাত্র প্রভু, একমাত্র প্রতিপালক আল্লাহ তাআলার এবাদত করা। ধারণা প্রসূত ঐ সমস্ত প্রভুদের নয়—যারা নিজেদের কোন উপকার করতে পারে না। নিজেদের থেকে কোন বিপদ হটাতে জানে না।



চার : আল্লাহ তাআলার নাম ও সিফাতের ঈমান :—
বান্দা হিসেবে আল্লাহ তাআলার প্রতি ঈমান আনবে। যে সমস্ত নাম ও সিফাত (বিশেষ্য ও বিশেষণ) আল্লাহ তাআলা স্বীয় কিতাব অথবা রাসূল সা. স্বীয় হাদিসে উল্লেখ করেছেন, সেগুলোকে আল্লাহ তাআলার নাম ও সিফাত হিসেবে আল্লাহ তাআলার অবস্থান মোতাবেক বিশ্বাস করবে, একমাত্র তার জন্য প্রযোজ্য বলে জ্ঞান করবে। কোন ধরনের অপব্যাখ্যা, নিষ্কর্ম করণ, আকৃতি প্রদান ও সামঞ্জস্য বিধান করবে না। এরশাদ হচ্ছে—

‘আর আল্লাহর রয়েছে উত্তম নাম সমূহ, কাজেই সে নাম ধরেই তাকে আহ্বান কর। আর তাদেরকে বর্জন কর, যারা তার নামের ব্যাপারে বাঁকা পথে চলে। তারা নিজেদের কৃতকর্মের ফল শীঘ্রই পাবে।’ [১৯]



অন্যত্র এরশাদ হচ্ছে—

‘কোন কিছুই তার অনুরূপ নয়। তিনি সব শুনেন, দেখেন।’ [২০]



দ্বিতীয় অধিকার :
পূর্ণ এখলাস ও আন্তরিকতাসহ একমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্য এবাদত উৎসর্গ করা : যার পদ্ধতি হলো—বান্দা তার আমলের মাধ্যমে একমাত্র তাআলার সন্তুষ্টি কামনা করবে। যেমন আল্লাহ তাআলা এর প্রতি নির্দেশ দিয়ে বলেছেন—

‘আমি আপনার উপর এ কিতাব যথার্থ-ই নাজিল করেছি। অতএব আপনি নিষ্ঠার সাথে আল্লাহ তাআলার এবাদত করুন।’ [২১]



আরো বলেন—

‘আপনি বলুন : আমার নামাজ, আমার কুরবানি এবং আমার জীবন-মরণ বিশ্ব প্রতিপালকের জন্য। তার কোন অংশীদার নেই। আমি তাই আদিষ্ট হয়েছি এবং আমি প্রথম আনুগত্য পোষণকারী।’ [২২]



সহিহ হাদিসে কুদসীতে আছে, আল্লাহ তাআলা বলেন—

‘আমি সমস্ত অংশীদারদের ভিতর বেশি অমুখাপেক্ষী, যে এমন আমল করল, যার ভিতর সে আমার সাথে অন্য কাউকে অংশীদার করেছে, সে আমল ঐ অংশীদারের জন্য, আমি তার থেকে মুক্ত।’



মুআয ইবনে জাবাল রা. বলেন, আমি একটি গাধার পিঠে রাসূলের সঙ্গী ছিলাম। যে উটকে ‘উফাইর’ বলা হয়। রাসূল সা. জিজ্ঞেস করলেন—

‘হে মুআয, তুমি কি জান বান্দার উপর আল্লাহ তাআলার কি কি হক রয়েছে ? এবং আল্লাহ তাআলার উপর বান্দার কি কি হক রয়েছে ? আমি উত্তর দিলাম—আল্লাহ এবং তার রাসূল সা. ভাল জানেন। তিনি বললেন, বান্দার উপর আল্লাহ তাআলার হক হচ্ছে : তারা তাঁর এবাদত করবে, তাঁর সাথে অন্য কাউকে শরিক করবে না। আল্লাহ তাআলার উপর বান্দার হক হচ্ছে, যে তার সাথে কাউকে শরিক করবে না, তাকে তিনি শাস্তি দেবেন না। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল সা. আমি কি সকলকে এর সুসংবাদ দেব না ? তিনি বললেন তাদের সুসংবাদ দিওনা, তাহলে তারা কর্মহীন হয়ে যাবে।’ [২৩]



রাসূল সা. আরো বলেন—

‘আল্লাহ তাআলা তোমাদের শরীর ও চেহারার দিকে তাকান না। তবে তিনি তোমাদের অন্তর ও আমলের দিকে তাকান। রাসূল সা. আরো বলেছেন—কেয়ামতের দিবসে—যে দিবসের ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই—যখন আল্লাহ তাআলা সকল মানুষকে জমা করবেন, একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা দেবে, যে ব্যক্তি তার আমলের ভিতর অন্য কাউকে শরিক করেছে, সে যেন তার সওয়াব আল্লাহ তাআলা ছাড়া যাকে শরিক করেছে তার কাছ থেকে চেয়ে নেয়। কারণ, আল্লাহ তাআলা সমস্ত শরিকদের থেকে অমুখাপেক্ষী। [২৪]



একজন বান্দা হিসেবে সকলের জন্য জরুরি—এবাদত বিষয়ে আন্তরিকতার প্রতি গুরুত্বারোপ করা এবং সেভাবে আল্লাহ তাআলার প্রাপ্য আদায় করা, এর বিপরীত অর্থাৎ শিরক হতে বিরত থাকা ।



[১] সূরা লোকমান : ২০।

[২] সূরা ইবরাহিম : ৩৪।

[৩] সূরা নাহাল : ১৮।

[৪] সূরা আল আরাফ : ৫৪

[৫] সূরা ফাতের : ১৩

[৬] সূরা আন নাযেআত : ৩৮

[৭] সূরা আল কাসাস : ৩৮

[৮] সূরা আন নামল : ১৪

[৯] সূরা বনী ইসরাইল : ১০২

[১০] মুমিনুন : ৮৪-৮৯

[১১] সূরা যুখরুফ : ৯

[১২] সূরা যুখরুফ : ৮৭

[১৩] সূরা আল বাক্বারা : ১৬৩

[১৪] সূরা ইউসুফ : ৩৯-৪০

[১৫] সূরা আল ফুরকান-৩

[১৬] সূরা আল আরাফ : ১৯১-১৯২

[১৭] সূরা আদ দুখান : ৮৭

[১৮] সূরা ইউনুস : ৩১

[১৯] সূরা আল আরাফ-১৮০

[২০] সূরা আশ শুরা : ১১

[২১] সূরা আয যুমার : ২।

[২২] সূরা আল আনআম-১৬১-১৬২।

[২৩] বোখারি ও মুসলিম

[২৪] হাদিসটি ইমাম তিরমিজি রহ. বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন হাসান গরিব